>ফিল্ডিং করার সময় ভান করে ৫ রানের জরিমানা গুনেছেন মেহেদী মিরাজ। রাজশাহী কিংসের অধিনায়ক স্বীকার করলেন, অন্যায় করেছেন
অপরাধের তাৎক্ষণিক শাস্তিটা বল টেম্পারিংয়ের সমান! ফেক ফিল্ডিং বা ফিল্ডিংয়ের ভান করা যে ভদ্রলোকের খেলা ক্রিকেটের চেতনার সঙ্গে মানায় না! মেহেদী মিরাজ আজ এই শাস্তি পেয়েছেন। যদিও মাঠে দেখে মনে হয়েছে, আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত মানতে পারছেন না। তবে শেষ ওভারে স্নায়ু ছড়ানো ম্যাচে জয় পাওয়া রাজশাহী অধিনায়ক ফুরফুরে মেজাজে সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়ে স্বীকার করলেন, কাজটা জেনে-বুঝেই করেছেন। এমন নয় ক্রিকেটের এই আইনটা তাঁর অজানা ছিল!
মিরাজ বলছেন, ‘হ্যাঁ, এটা (নিয়ম) জানতাম। ওটা আসলে আমার ভুল হয়ে গেছে। ওই সময় মাথায় নানা কিছু কাজ করে। আমাকে বল আটকাতে হবে, কীভাবে কী করব বুঝতে পারছিলাম না, বল একটু দূরে ছিল। এ কারণে ফলস ডাইভ দিয়েছি।’
ক্রিকেটের আইনটা এখনো নতুনই বলা যায়। ১৬ মাসের মতো হলো আইসিসি এই নিয়ম কার্যকর করেছে। আর মিরাজ তো বাংলাদেশের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে ফেক ফিল্ডিংয়ের পেনাল্টি পেলেন। তবে রাজশাহী কিংসের অধিনায়ক জানালেন, শাস্তিটা যে বড়, সেটিও জানা ছিল তাঁর, ‘হ্যাঁ, জানতাম পেনাল্টি ৫ রান। পরে এ ধরনের কিছু করব না। ওই সময়ে আমি নিজেও একটু উত্তেজিত ছিলাম। দলের সিনিয়ররা আমাকে বলেছে না শান্ত থাক। লরি ইভানস আমাকে বলছিল, মেহেদী কুল (শান্ত) থাক। কুল থাকলে আমাদের ভালো হবে। ওই সময় ওদের প্রায় ৭ করে রান দরকার ছিল।’
ইনিংসের দ্বাদশ ওভারে নিজের বলেই মিরাজ স্কয়ার লেগের দিকে ছুটে যান। বল থেকে দূরে থাকতেই স্লাইড করেন। ততক্ষণে সুইপার পজিশন থেকে দৌড়ে এসে ফিল্ডার বল কুড়িয়ে পাঠিয়ে দেন। ওই বলে রংপুর রাইডার্সের ব্যাটসম্যান রাইলি রুশো ১ রান নিয়েছেন। দুই রান নিতে পারতেন কি না, মিরাজকে স্লাইড করতে দেখেই থেমে গেছেন কি না; এ নিয়ে তর্ক হতে পারে। তবে আম্পায়ারের মনে হয়েছে, ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্ত করতেই মিরাজ ফেক ফিল্ডিং করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী যার শাস্তি ৫ রান। রংপুর রাইডার্সের স্কোরকার্ডে অতিরিক্ত খাতের পাশে লেখাও হয়ে গেছে সেই রান।
২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে আইসিসি এই আইনটি পাস করে। ক্রিকেটের আইনপ্রণেতা এমসিসি এর আগে আইনটি অনুমোদন করেছিল। ক্রিকেট আইনের ৪১.৫ এর ধারা অনুযায়ী ফিল্ডিংয়ের ভান করার শাস্তি রাখা হয় ৫ রানের জরিমানা। বল টেম্পারিংয়ের জরিমানাও ৫ রান। মাঠের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধানটি ফেক ফিল্ডিংয়ের জন্যও বরাদ্দ করা হয়েছে। এর থেকে বোঝা যায়, এ ধরনের অপরাধকে আইসিসি বা এমসিসি কত বড় অন্যায় হিসেবে দেখে।
অনেক সময় ব্যাটসম্যানরা শট খেলার পর রান নিতে যখন ছোটেন, মাঠের কোনো কোনো ফিল্ডার তাদের বিভ্রান্ত করতে বল কুড়ানো, বা বল কুড়িয়ে থ্রো করার অভিনয় করেন। অনেকে ধারেকাছে বল না থাকলেও ডাইভ দেন। এতে রান নিতে থাকা ব্যাটসম্যান সাময়িক বিভ্রান্তিতে পড়তে পারেন। ক্রিকেটীয় চেতনা-বিরোধী এই কাজটি থামানোর জন্যই এমসিসি ৪১.৫ ধারা পাস করে। যেটি মক ফিল্ডিং বা ফেক ফিল্ডিংয়ের শাস্তি নামে পরিচিত।