ঝড়ের ইঙ্গিত দিয়ে উল্টো ঘূর্ণিপাকে মিরাজরা

বোলাররাই কুমিল্লাকে ম্যাচ জিতিয়েছেন আজ। ছবি: প্রথম আলো
বোলাররাই কুমিল্লাকে ম্যাচ জিতিয়েছেন আজ। ছবি: প্রথম আলো
>
  • ১৮.৪ ওভারে ১২৪ রানে অলআউট রাজশাহী
  • সর্বোচ্চ ৩২ রান উদানার, ৩০ রান করেছেন মিরাজ
  • ১০ রানে ৩ উইকেট আফ্রিদির

ম্যাচটা হঠাৎই জমিয়ে তুললেন মোস্তাফিজুর রহমান ও কায়েস আহমেদ। ১২৪ রান তাড়া করতে নেমে তাই ১৯তম ওভারেও ব্যাট করতে হলো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসকে। শহীদ আফ্রিদি ও লিয়াম ডসন ম্যাচটা শেষ করে আসার আগেও শঙ্কা জাগানো কিছু মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন। অবশেষ এক ছক্কা মেরে ৮ বল আগে কুমিল্লাকে ৫ উইকেটের জয় এনে দিয়েছেন আফ্রিদি। বোলিং বীরত্বের পর এ ছক্কাটা যেন ম্যাচের সারাংশ হয়ে থাকল আফ্রিদির জন্য। 

প্রথম উইকেটেই ৬৫ রান তুলে নেওয়ার পর কুমিল্লাকে এত কষ্ট করতে হবে বোঝা যায়নি। অষ্টম ওভারে এভিন লুইস (২৮) আউট হওয়ার পর ভালোভাবেই এগোচ্ছিল কুমিল্লার ইনিংস। ৪০ রান করে এনামুল হক দুর্ভাগ্যজনকভাবে রানআউট হয়ে যাওয়ার সময়ও এত নাটক হবে ভাবা যায়নি। ৫৫ বলে ৩৮ রান দরকার তখন কুমিল্লার। কিন্তু তিনে নামা তামিম ইকবাল (২১), এখনো পর্যন্ত ব্যর্থ ইমরুল (৬) ও শোয়েব মালিকেরা (২) ম্যাচের আগ্রহ বাড়ালেন মাত্র ৮ রানের মধ্যে আউট হয়েছে। আফ্রিদি ও ডসনকেই তাই দায়িত্ব সারতে হলো।

এর আগে শুরুতেই চমকে দিয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ইনিংস উদ্বোধন করতে নেমেছেন বলে নয়। আগের ম্যাচে তিনে নেমে অমন চমৎকার ইনিংস খেলার পর অধিনায়ক হিসেবে আরেকটু এগিয়ে ব্যাট করার ইচ্ছে জাগতেই পারে। চমকটা জাগিয়েছেন ব্যাটে ঝড় তুলে।

ইনিংসের দ্বিতীয় বলে স্ট্রাইকে পেয়েছিলেন, আবু হায়দারের সে বলেই চার। বাঁহাতি পেসারের প্রথম ওভার শেষ হওয়ার আগেই আরও দুবার বল সীমানা ছাড়াল। দ্বিতীয় ওভারে দুটি বল পেলেন ভাগে। তাতেও একটি চার। তৃতীয় ওভারে একটু ছন্দ পতন। মোহাম্মদ সাইফউদ্দীনের প্রথম দুই বলে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেছেন মুমিনুল হক ও সৌম্য সরকার। প্রথমজন এলবিডব্লু, দ্বিতীয়জন দুর্দান্ত এক ইনসুইংয়ে ভুল শট খেলে বোল্ড।

মিরাজ তবু থামলেন না, পাঁচ ওভারের মধ্যেই ১০ বলে ৬ চারে ২৫ রান তুলে ফেললেন এই অলরাউন্ডার। মোহাম্মদ হাফিজকে নিয়ে পাওয়ার প্লেতে ৪৬ রান তুলে ফেলার পর মনে হচ্ছিল রাজশাহী ভালো একটা স্কোর গড়তে যাচ্ছে। কুমিল্লার নতুন অধিনায়ক ইমরুল কায়েসের ফিল্ডিং নেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ ঠেকছিল তখন। সপ্তম ওভারে লিয়াম ডসনের অপূর্ব সুন্দর এক বলে হাফিজের স্টাম্প ভেঙে যাওয়া সে চিন্তায় বাধ দিল। আর রাজশাহী দুমড়ে মুচড়ে গেল পরের ওভারেই।

শহীদ আফ্রিদির প্রথম বলে কোনো স্পিন ছিল না। কিন্তু লেগ স্পিনের অপেক্ষায় থাকা মিরাজ সে অনুযায়ী শট খেলে এলবিডব্লু। ১৭ বলে ৬ চারে ৩০ করে ফিরেছেন মিরাজ। পরের বলটায় লরি ইভান্সও একই ভুল করলেন। ২ উইকেটে ৫৩ রান থেকে রাজশাহী মুহূর্তেই ৫ উইকেটে ৫৩! সেটা ৭ উইকেটে ৬৩ হয়ে গেল ১০ ওভারের মধ্যেই। এ দুই উইকেটে বোলারদের কোনো কৃতিত্ব নেই। ফজলে মাহমুদ সঙ্গী জাকির হোসেনের দিকে না তাকিয়েই দৌড় শুরু করলেন, থামলেন আউট হয়ে। এক বল বিরতি দিয়ে আউট কায়েস আহমেদও। নিজের প্রথম বলেই আফ্রিদির বলে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে গোল্ডেন ডাক নিয়ে ফিরেছেন এই লেগ স্পিনার।

রাজশাহী যে এরপরও এক শ পেরিয়েছে সে জন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য জাকির হাসান ও ইসুরু উদানার। টি-টোয়েন্টির সঙ্গে সম্পূর্ণ বেমানান এক জুটিতে ৩০ রান এনে দিয়েছেন এ দুজন, তখন যে ওটাই দরকার ছিল। ২৬ বলে ২৭ রান করে জাকির ফিরলেও উদানা রয়ে গেছেন। ২৯ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৩২ রান করে দলকে ১২৪ রান এনে দিয়েছেন উদানা।