ক্রিকেটে আম্পায়ারদের পাঁচ বাজে সিদ্ধান্ত
গতকাল বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার সিরিজ–নির্ধারণী টি–টোয়েন্টি ম্যাচে আম্পায়ার তানভীর আহমেদের বাজে আম্পায়ারিং হতবাক করে দিয়েছে সবাইকে। ভুল মানুষেরই হয়। কিন্তু তাই বলে এমন ভুল। ওশানে টমাসের ওভারে দুটি ন্যক্কারজনক সিদ্ধান্ত তানভীর দিয়েছেন, যেটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও জানিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। তবে ক্রিকেট ইতিহাসে তানভীর একমাত্র নন, অনেক আম্পায়ারই ভুল সিদ্ধান্ত দিয়ে বিতর্কিত হয়েছেন, সমালোচিত হয়েছেন। অতীত থেকে এমন
পাঁচটি ঘটনা এখানে তুলে ধরা হলো...
আম্পায়ার রয় এমারসন, অস্ট্রেলিয়া বনাম শ্রীলঙ্কা, ১৯৯৯
১৯৯৫ সালে প্রথম লঙ্কান স্পিনার মুত্তিয়া মুরালিধরনের বোলিং অ্যাকশন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। অ্যাকশন শুধরে ফিরে আসার পর মুরালিধরন আবার বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে আসেন ১৯৯৯ সালে। সেবার অস্ট্রেলিয়া–শ্রীলঙ্কা সিরিজে অ্যাডিলেডের একটি ওয়ানডে ম্যাচে মুরালির বলে ‘নো বল’ ডাকেন অস্ট্রেলীয় আম্পায়ার রয় এমারসন। এমনি করে কয়েকবার ‘নো’ ডাকার পর প্রতিবাদে মাঠ ছাড়েন লঙ্কান অধিনায়ক অর্জুনা রানাতুঙ্গা।
আম্পায়ার মার্ক বেনসন ও স্টিভ বাকনার, অস্ট্রেলিয়া বনাম ভারত, ২০০৮
সেবার এক টেস্টেই ১১টা বিতর্কিত সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন দুই আম্পায়ার মিলে! ইংলিশ আম্পায়ার মার্ক বেনসন ও জ্যামাইকান স্টিভ বাকনারের আম্পায়ারিং ঝড় তুলেছিল ক্রিকেট দুনিয়ায়। সিডনি টেস্টে এ দুই আম্পায়ার ভারতের বিপক্ষে ৮টি আর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৩টি ভুল সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন। ভুল সিদ্ধান্তের শিকার হয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলী ও রাহুল দ্রাবিড়ের মতো তারকারা। ভুল সিদ্ধান্ত গিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার অ্যান্ড্রু সায়মন্ডসের বিপক্ষেও।
আম্পায়ার ড্যারিল হার্পার, অস্ট্রেলিয়া বনাম ভারত, ১৯৯৯
এই ঘটনার নায়ক অস্ট্রেলিয়ার আম্পায়ার ড্যারিল হার্পার। অ্যাডিলেড ওভালের সেই টেস্টে ২৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ভারত যখন দিশেহারা, ঠিক তখনই তিনি ভারতের ভরসা শচীন টেন্ডুলকারের বিপক্ষ একটা বাজে সিদ্ধান্ত দেন। গ্লেন ম্যাকগ্রার একটি বলে বাউন্সার সামলাতে গিয়ে টেন্ডুলকার ডাগ করেছিলেন। ঠিক তখনই বলটা লাগে তাঁর কাঁধে। অস্ট্রেলীয়দের এলবির আবেদনে সাড়া দেন হার্পার। সিদ্ধান্তটি বিতর্ক সৃষ্টি করেছিল যথেষ্টই।
আম্পায়ার লয়েড বার্কার, ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম ইংল্যান্ড, ১৯৮৯
মাঠের আম্পায়ার অতিরিক্ত আবেদনে বিব্রত হয়ে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করছেন—এমনটা খুব একটা দেখা যায় না। কিন্তু ১৯৮৯ সালে ইংলিশ আম্পায়ার লয়েড বার্কার এমনটাই করেছিলেন। ইংল্যান্ড–ওয়েস্ট ইন্ডিজ টেস্টে ক্যারিবীয় ফাস্ট বোলার কার্টলি অ্যামব্রোসের একটি আবেদনে প্রথমে সাড়া দেননি বার্কার। কিন্তু অ্যামব্রোস বারবার আবেদন করতে থাকলে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আউট দিয়ে দেন আম্পায়ার। ব্যাটসম্যান ছিলেন বব বেইলি। অ্যামব্রোস অবশ্য প্রথমে নেতিবাচক সিদ্ধান্তে আম্পায়ারের দিকে রীতিমতো তেড়ে গিয়েছিলেন।
আম্পায়ার ইয়োহান ক্লয়েট ও পিটার নিরো, ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম জিম্বাবুয়ে, ২০১৩
২০১৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ-জিম্বাবুয়ে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ক্যারিবীয়দের সামনে জয়ের জন্য ২৭৪ রানের লক্ষ্য বেঁধে দেয় জিম্বাবুয়ে। দ্বিতীয় ইনিংসের ৩১ ওভারে দুর্দান্তভাবে রামনরেশ সারওয়ানকে রানআউট করার লক্ষ্যে সরাসরি থ্রোতে স্ট্যাম্প ভাঙেন চামু চিবাবা। থার্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের জন্য জিম্বাবুয়ের খেলোয়াড়েরা আবেদন করলেও কোনো এক বিচিত্র কারণে মাঠের দুই আম্পায়ার ইয়োহান ক্লয়েট আর পিটার নিরো তাতে সাড়া দেননি। এদিকে বারবার টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, আসলেই রানআউট ছিলেন সারওয়ান! জিম্বাবুয়ের কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিয়ে সেই ম্যাচে সারওয়ান অপরাজিত সেঞ্চুরি করে দলকে ম্যাচ জেতান!