তিন গ্রহেই পা পড়ল সাকিবের
>সাকিব আল হাসান আজ ২০ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়েছেন। তিন ধরনের ক্রিকেটেই ৫ উইকেট হয়ে গেল তাঁর
বন্ধু তামিম ইকবাল এই তিন গ্রহে পা রেখেছেন আগেই। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে তিন সংস্করণেই সেঞ্চুরির একমাত্র কৃতিত্ব আছে তামিমের। আজ তৃতীয় গ্রহটায় পা রাখলেন সাকিব আল হাসানও। তবে ব্যাটসম্যান নয়; বোলারের ভূমিকায়। তিন ফরম্যাটেই ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া প্রথম বাংলাদেশি বোলার সাকিব। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও এই অর্জন খুব বেশি জনের নেই।
শুধু বল নয়, ব্যাট হাতেও আজ সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাকিব। দুর্দান্ত শুরুটা যখন মাঝখানের উইকেট-ধসে খারাপের দিকে ঝোঁকার শঙ্কায়, সেই সময় সাকিব ২৬ বলে ৪২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন। মাহমুদউল্লাহর (২১ বলে ৪৩) সঙ্গে ৯১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিটা ম্যাচের মূল প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। ২১১ রান তুলেও যে বাংলাদেশ ম্যাচ একেবারেই দাপটের সঙ্গে জেতেনি। ৪ বল বাকি থাকতে অলআউট হওয়ার আগে ১৭৫ রান তুলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
প্রায় সব বোলারই কমবেশি মার খাচ্ছিল। শিশিরও বড় প্রভাবক হয়ে উঠেছিল। এমন সময় দলের প্রয়োজনে সাকিব বল হাতেও রুখে দাঁড়ালেন। পাল্টা আক্রমণে ধসিয়ে দিলেন ক্যারিবীয়দের। ২০ রানে তুলে নিলেন ৫ উইকেট। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথমবার ৫ উইকেট পেলেন সাকিব। সাকিবের আগে টি-টোয়েন্টিতে ৫ উইকেট নিয়েছেন ইলিয়াস সানি ও মোস্তাফিজুর রহমান।
ওয়ানডেতেও সাকিব ৫ উইকেট পেয়েছেন একবারই। তবে টেস্টে সেটি ১৮ বার! আর এই তিন মিলেই এমন একটা অর্জনের খাতায় নাম লেখালেন, এর আগে যেখানে পা পড়েছে মাত্র সাতজনের। তিন ধরনের ক্রিকেটেই ৫ উইকেট পূর্ণ করা বোলাররা হলেন কুলদীপ যাদব, ইমরান তাহির, উমর গুল, ভুবনেশ্বর কুমার, অজন্তা মেন্ডিস, লাসিথ মালিঙ্গা ও টিম সাউদি।
এই তালিকায় হয়তো অনেক বড় বড় রথী-মহারথীর নাম নেই। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি শুরুই হয়েছে ২০০৫ সালে। সাকিব ‘ভাগ্যবান’; তিন ফরম্যাটে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। ভাগ্যের কথাটা তিনিই বলেন। সাকিবকে নেটেও তেমন একটা বোলিং করতে দেখা যায় না। নিজের বোলিংটাকে সব সময়ই তিনি বোনাস ধরে এসেছেন।
আজও সংবাদ সম্মেলনে প্রথম এক কথায় নিজের অনুভূতি জানাতে চাইলেন, ‘খুবই ভালো লেগেছে, প্রথমবার কোনো কিছু হলে ভালো লাগেই। তিন ফরম্যাটের এক ফরম্যাটে ছিল না, এখন হয়ে গেল।’ পরে অবশ্য দীর্ঘ অনুভূতিই ব্যক্ত করলেন, ‘সব সময় যেটা বলি, অবদান রাখতে পারলে ভালো লাগে। আজকে যেহেতু বড় পরিসরে করতে পেরেছি, অবশ্যই অনুভূতি অনেক ভালো। এ রকম কন্ডিশনে আমিও আশা করিনি ৫ উইকেট পেয়ে যাব। আসলে উইকেট পাওয়া একটু ভাগ্যের ব্যাপার।’ শুধু ভাগ্য দিয়ে তো একজন বোলার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৫৩৭ উইকেট পায় না। সাকিবের ব্যাখ্যা, ‘আমার নিজের কাজটা করতে হবে, আর ভাগ্য সঙ্গে থাকাটা জরুরি। তো দুইটাই আজকে ছিল।’
টি-টোয়েন্টিতে ৬ রানে ৬ উইকেট নেওয়ার কীর্তি আছে তাঁর। সেটি অবশ্য ক্যারিবীয় প্রিমিয়ার লিগে। আজকের এই বোলিংকে তাহলে কোথায় রাখবেন? সাকিবের উত্তর, ‘বোলিংয়ে অবশ্যই অনেক ওপরের দিকে থাকবে। আমার কাছে মনে হয় বেশ ভালোই বল করেছি। ব্যাটিংয়ে পুরো সিরিজজুড়ে ভালো করছিলাম। টেস্ট থেকে শুরু করেই বেশ ভালো হচ্ছে ব্যাটিং। এখনো একটা ম্যাচ বাকি। চেষ্টা থাকবে এভাবেই যেন দলের জন্য অবদান রাখতে পারি।’