শেষ বিকেলটা ছিল জিম্বাবুয়ের

টসে বিশেষ মুদ্রা নিক্ষেপ করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ছবি: শামসুল হক
টসে বিশেষ মুদ্রা নিক্ষেপ করছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ছবি: শামসুল হক
>সিলেটে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে টসে হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

চতুর্থ উইকেট জুটিটা দাঁড়িয়ে গিয়েছিল। পিটার মুরকে নিয়ে ৭২ রানের জুটি গড়েছিলেন শন উইলিয়ামস। উপায় না দেখে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ বল হাতে নিলেন। নিজের দ্বিতীয় ওভারেই সাফল্য। ৮৮ রানে উইলিয়ামসকে স্লিপে মিরাজের ক্যাচ বানিয়ে স্বস্তি এনে দিলেন দলকে। তবে প্রথম দিনে বাংলাদেশের এটাই ছিল শেষ সাফল্য। প্রথম দিনে ৯১ ওভার বল করেও জিম্বাবুয়ের ৫টির বেশি উইকেট ফেলতে পারেনি বাংলাদেশ। ব্যাটিং লাইনআপের অর্ধেকটা হারিয়ে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ২৩৬। ১২২ বল খেলে মুর অপরাজিত আছেন ৩৭ রানে। 

মধ্যাহ্ন বিরতির আগ পর্যন্ত জিম্বাবুয়ের ইনিংস দাঁড়িয়েছিল হ্যামিল্টন মাসাকাদজার ব্যাটে। দলের ৮৫ রানে অধিনায়কের অবদানই ছিল ৫২। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ব্যাটিং করছিলেন। বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহও চিন্তিত হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু বিরতির পর অধিনায়ককে দুশ্চিন্তার হাত থেকে রেহাই দিয়েছেন আবু জায়েদ। মাসাকাদজাকে তিনি এলবির ফাঁদে ফেলেন দ্বিতীয় সেশনের প্রথম ওভারেই। মাসাকাদজা ফিরেছেন ওই ৫২ রানেই। 

জিম্বাবুয়ের অধিনায়ককে ফেরানোর পরেও দুশ্চিন্তার যথেষ্ট কারণ ছিল। শন উইলিয়ামস আর সিকান্দার রাজা ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন। চতুর্থ উইকেট জুটিতে এ দুজন তুলে ফেলেছিলেন ৪৪ রান। ঠিক তখনই আঘাত হানেন অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম। তাঁর বলে ব্যাট আর প্যাডের ফাঁক দিয়ে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন সিকান্দার। আউট হওয়ার আগে তাঁর সংগ্রহ ১৯। 

টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা মোটামুটি ভালোই হয়েছিল জিম্বাবুয়ের। ওপেনিংয়ে মাসাকাদজার সঙ্গে ব্রায়ান চারি ৩৫ রান তুলে ফেলেছিলেন। কিন্তু বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের বলে একটা বাজে শট খেলেই আউট হন চারি। এরপর তাইজুল ফেরান ব্রেন্ডন টেলরকে। নাজমুল হোসেন শর্ট লেগে দাঁড়িয়ে টেলরের যে নিচু ক্যাচটি নেন, সেটি এক কথায় দুর্দান্ত।

বাংলাদেশকে উইকেট এনে দিয়েছেন বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ছবি: শামসুল হক
বাংলাদেশকে উইকেট এনে দিয়েছেন বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। ছবি: শামসুল হক

বাংলাদেশ আজকে একজন পেসার আর তিন বিশেষজ্ঞ স্পিনার নিয়ে খেলছে। এক পেসার হিসেবে আছেন আবু জায়েদ। পেসারের অভাবটা সামাল দিচ্ছেন অভিষিক্ত আরিফুল হক। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি তিনি মিডিয়াম পেসটাও ভালোই পারেন। তবে তাইজুলের সাফল্যে আশাবাদী হতেই পারেন স্পিনাররা। সিলেট স্টেডিয়ামের উইকেটে যে টার্ন আছে, সেটি বোঝা যাচ্ছে স্পিনাররা বোলিংয়ে এলেই। সফল হয়েছেন তাইজুল–নাজমুল। 

প্রথম সেশনে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ব্যবহার করেছে পাঁচ বোলারকে। প্রথম সেশনে একমাত্র পেসার আবু জায়েদ ৬ ওভারের পর আর ব্যবহৃত হননি। এই ৬ ওভারে অবশ্য খুব খারাপ করেননি। দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই সাফল্য পেয়েছেন তিনি। 

দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই সাফল্য পেলেন আবু জায়েদ। ছবি: শামসুল হক
দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই সাফল্য পেলেন আবু জায়েদ। ছবি: শামসুল হক

এই ম্যাচ দিয়ে টেস্ট আঙিনায় অভিষেক ঘটছে আরিফুল হক ও নাজমুল ইসলামের। 

এই ম্যাচের মধ্য দিয়ে দেশের অষ্টম টেস্ট ভেন্যু হিসেবে অভিষেক ঘটল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের। অভিষেক টেস্টকে স্মরণীয় করে রাখতে টস হয়েছে বিশেষ কয়েনে। টসের সময় বিশেষ স্মারকও উপহার দেওয়া হয় দুই দলের অধিনায়ককে। সাকিব-তামিম ছাড়া গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ব্লুমফন্টেইন টেস্টেও মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ দল।

বাংলাদেশ দল: লিটন দাস, ইমরুল কায়েস, নাজমুল হোসেন, মমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, আরিফুল হক, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাজমুল ইসলাম ও আবু জায়েদ।