রেকর্ড জয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দুই দিনের ছুটি দিল ভারত

দারুণ বোলিংয়ে ক্যারিবীয়দের নাজেহাল করেছেন যাদব-অশ্বিনরা। ছবি: এএফপি
দারুণ বোলিংয়ে ক্যারিবীয়দের নাজেহাল করেছেন যাদব-অশ্বিনরা। ছবি: এএফপি
>

রাজকোট টেস্টের তৃতীয় দিনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এক ইনিংস ও ২৭২ রানের রেকর্ড জয় তুলে নিয়েছে ভারত

দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষেই হিসাব কষা শুরু হয়ে গিয়েছিল। প্রথম ইনিংসে কত রানের লিড পাচ্ছে ভারত? ৫৫৫ রানে পিছিয়ে হাতে ৪ উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এতে পরিসংখ্যানের পাতা খুলে বসেছিলেন অনেকেই। প্রথম ইনিংসে ভারত সর্বোচ্চ কত রানের লিড নিয়েছে?

সেটি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ সফরে এসেছিল ভারত। মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে চার সেঞ্চুরিতে ভর করে ৩ উইকেটে ৬১০ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করেছিল রাহুল দ্রাবিড়ের দল। জবাবে বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে যায় মাত্র ১১৮ রানে। ৪৯২ রানের লিড পেয়েছিল ভারত, যা টেস্টে প্রথম ইনিংসে তাদের সর্বোচ্চ লিডের রেকর্ড। রাজকোট টেস্টে ভারত এই রেকর্ডটা নতুন করে লেখানোর সুযোগ পেয়েও পারল না—এমন আক্ষেপ করতেই পারেন বাংলাদেশের সমর্থকেরা।

প্রথম ইনিংসে ৯ উইকেটে ৬৪৯ রান তুলেছিল ভারত। জবাবে দ্বিতীয় দিনে মাত্র ২৯ ওভারে ৯৪ রান তুলতেই ৬ উইকেট হারিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আজ তৃতীয় দিনে মাত্র ১৯ ওভার টিকেছে তাদের প্রথম ইনিংস। বাকি ৪ উইকেট হারিয়ে মোট ১৮১ রানে গুটিয়ে গেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৪৬৮ রানের লিড নিয়ে সফরকারী দলকে ফলোঅনে নামায় ভারত। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ইনিংসের চেয়ে মাত্র ১৫ রান বেশি করতে পেরেছে ওয়েষ্ট ইন্ডিজ। অর্থাৎ তৃতীয় দিনে ১৯৬ রানেই গুটিয়ে গেছে ওয়েষ্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ইনিংস। এতে দুই দিন হাতে রেখেই এক ইনিংস ও ২৭২ রানের জয় তুলে নেয় বিরাট কোহলির দল। টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে এটাই ভারতের সর্বোচ্চ রানের জয়। ঘরের মাঠে এটি তাদের শততম টেস্ট জয়ও। ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় ইনিংসে ৫৭ রানে ৫ উইকেট নিয়েছেন ভারতের ‘চায়নাম্যান’ স্পিনার কুলদ্বীপ যাদব।

প্রথম ইনিংসে তৃতীয় সর্বোচ্চ রানের লিড নিয়েছিল ভারত। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের লিডও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই (৪৭৮ রান, ২০১১ কলকাতা টেস্ট)। বাংলাদেশের বিপক্ষে সেই টেস্টের প্রথম ইনিংসে ভারতীয় টপ অর্ডারের চারজন সেঞ্চুরি পেয়েছিলেন। আর এই ম্যাচে প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি পেয়েছেন ভারতের তিন ব্যাটসম্যান। তবে কাল ও আজ শামি-অশ্বিনরা ক্যারিবীয়দের যেভাবে চেপে ধরেছিলেন, তাতে সর্বোচ্চ রানের লিড নেওয়ার রেকর্ডটা নতুন করে লেখানোর সুযোগ ছিল ভারতের।

আগের দিন উইকেটে ছিলেন রোস্টন চেজ ও কেমো পল। আজ তাঁরা বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। চেজ (৫৩) ফিফটি তুলে নিলেও পল ফিরেছেন ৩ রানের আক্ষেপ নিয়ে। ৪৭ রানে আউট হন তিনি। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের লেজ মুড়িয়ে দিতে ভারতীয় বোলারদের কোনো সমস্যাই হয়নি। ৩৭ রানে ৪ উইকেট নেন রবিচন্দ্র অশ্বিন। টেস্টে ভারতের হয়ে এক ইনিংসে সর্বোচ্চসংখ্যকবার ৪ উইকেট নেওয়ার খেরোখাতায় হরভজন সিংকে (৪১ বার) টপকে গেলেন অশ্বিন (৪২ বার)। তাঁর সামনে শুধু অনিল কুম্বলে (৬৬ বার)।

টেস্টে এ নিয়ে সপ্তমবারের মতো প্রথম ইনিংসে ন্যূনতম ৪০০ রানের লিড নিয়েছিল ভারত। আগের ছয়বারের ইতিহাসে ইঙ্গিত ছিল, অলৌকিক কিছু না ঘটলে রাজকোট টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে জিতবে বিরাট কোহলির দল। আগের ছয় ম্যাচে প্রথম ইনিংসে ন্যূনতম ৪০০ রানের লিড নিয়ে প্রতিবারই ইনিংস ব্যবধানে জিতেছে ভারত। শেষ পর্যন্ত ঘটেছেও ঠিক তা–ই। আর তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানদের অবদান নেহায়েত কম নয়। কাইরন পাওয়েল (৮৩) ছাড়া কেউ সেভাবে দাঁড়াতে পারেননি।