এক বইমেলায় হাজার গল্প
বিশ্ববিদ্যালয় পাড়ায় এলেই মনটা কেমন যেন উচাটন হয়ে যায়। স্মৃতিরা এসে ভিড় করে। মন নস্টালজিক হয়ে ওঠে। খুব পিছু ফিরে দেখতে ইচ্ছে করে। মনে পড়ে ইডেন কলেজ থেকে সদ্য উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে ভীরু পায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে পদার্পণ করার কথা; বন্ধুদের সঙ্গে বাংলা একাডেমির বইমেলায় ঘোরাঘুরির কথা। কাঁধে একটি টোটিব্যাগ থাকলেও তার পকেটে টাকা-পয়সা থাকত হাতেগোনা। বইমেলায় নতুন বইয়ের গন্ধ শুঁকতাম, বই নাড়াচাড়া করতাম, পাতা উল্টাতাম। কিন্তু কেনার সাহস হতো না। অবশেষে দু–একটা বই কিনে, বগলদাবা করে হলে ফিরে আসতাম। নতুন বইয়ের গন্ধ শুঁকে শুঁকে গোগ্রাসে পড়তাম। এসব সেই আশির দশকের গল্প।
কবি হেলাল হাফিজের প্রথম কাব্যগ্রন্থ বেরোল ১৯৮৬ সালে। শিরোনাম ‘যে জলে আগুন জ্বলে’। তাতে স্থান পেয়েছিল তাঁর আলোড়িত কবিতা ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’। সহপাঠী এক প্রিয় বন্ধু আমায় উপহার দিল কাব্যগ্রন্থটি। সৌজন্য করে ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ কবিতার বিখ্যাত লাইন দুটি লিখে দিল প্রথম পাতায়। ‘এখন যৌবন যার মিছিলে যাওয়ার তার শ্রেষ্ঠ সময়, এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাওয়ার তার শ্রেষ্ঠ সময়’! কিন্তু উল্টো আমি হেলাল হাফিজেরই প্রেমে পড়ে গেলাম। বন্ধুটি আহত হল। তারপর একসময় অন্যরকম এক যুদ্ধে জড়িয়ে গেলাম। পড়াশোনা, সংসার, সন্তান। সে অন্য গল্প!
একদা যখন শুধু পাঠক হিসেবে বইমেলায় যাওয়া শুরু করেছিলাম তখন স্বপ্নেও ভাবিনি, নিজের লেখা মলাটবন্দী বই হাতে নিয়ে স্টলের ভেতরে দাঁড়াব। সেই সুযোগও এল একদিন, ২০১৮ সালে। বহু বছরের ব্যবধানে আবারও পা রাখার সৌভাগ্য হল সেই প্রিয় প্রাঙ্গণ, প্রাণের মেলা, বইমেলায়। ২০১৮ ও ২০১৯ সালের একুশে বইমেলায় একজন সমঝদার পাঠকের পাশাপাশি ক্ষুদ্র লেখক হিসেবে থাকার অভিজ্ঞতাও হল। এই দুবছরই আমার নিজের লেখা উপন্যাস, সমকালীন গল্প সংকলন এবং অন্যান্য কবি ও লেখক বন্ধুদের সঙ্গে যুগ্মভাবে প্রকাশিত কবিতা, গল্প স্থান পেয়েছিল বিভিন্ন সংকলনে। সেই কারণে বিভিন্ন প্রকাশকের স্টলের দরজা ছিল অবারিত; আড্ডা ছিল প্রাণবন্ত। এই দুবারের বইমেলায় বই প্রকাশের মধ্য দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে কিছু অম্ল-মধুর অভিজ্ঞতাও হয়েছে। এসব অর্জন আগামী বইমেলায় অনেক কাজে আসবে আশা করি।
বইমেলা নিয়ে আলোচনা করতে হলে এর গোঁড়ার ইতিহাসটা জানাও খুব জরুরি। যত দূর জানা যায়, বাংলাদেশে বই মেলার ইতিহাস কলকাতার থেকেও প্রাচীন। বাংলাভাষা ও সাহিত্যের প্রসারের জন্য ১৯৫৫ সালে বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। প্রয়াত কথাসাহিত্যিক ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের সাবেক পরিচালক সরদার জয়েনউদদীন তখন একটি বইমেলা করার চিন্তা করেন। বাংলা একাডেমিতে থাকাকালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরির নিচতলায় তিনি একটি ‘শিশু গ্রন্থমেলা’ আয়োজন করেন। ১৯৬৫ সালে অনুষ্ঠিত সম্ভবত এটাই ছিল বাংলাদেশের প্রথম বইমেলা।
এরপর ১৯৭০ সালে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের সহযোগিতায় নারায়ণগঞ্জে একটি গ্রন্থমেলার আয়োজন করা হয়। এই মেলায় একটি আলোচনা সভারও ব্যবস্থা ছিল। সেই আলোচনায় অংশ নেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের তৎকালীন অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুল হাই, শহীদ অধ্যাপক মুনীর চৌধুরী, সরদার ফজলুল করিম। মেলায় বইয়ের পসরা ছিল, উৎসুক দর্শকও এসেছিলেন প্রচুর। বইয়ের বেচাকেনাও মন্দ ছিল না। সেখানে দর্শকদের জন্য একটি তামাশার ব্যবস্থা ছিল। মেলায় একটি গরু বেঁধে রেখে তার গায়ে লিখে রাখা হয়েছিল, ‘আমি বই পড়ি না।’ জয়েনউদদীনের তৈরি এই ডার্ক-হিউমারে লজ্জিত হয়ে অনেকেই বই কিনতে আগ্রহী হয়েছিল সেদিন।
তবে, আজকের বইমেলার যে ব্যাপক রূপটা আমরা এখন দেখি, তার শুরুটা হয়েছিল সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত উদ্যোগে। বইমেলা শুরুর এই ইতিহাসটা কিন্তু বেশ চমকপ্রদ। সেটা জানতে হলে আমাদের ফিরে যেতে হবে সেই ১৯৭২ সালের যুদ্ধোত্তর সময়ে। জানা যায়, ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চিত্তরঞ্জন সাহা বাংলা একাডেমি চত্বরের ‘বর্ধমান হাউস’–এর সামনে একটি চাটাই বিছিয়ে অভূতপূর্ব এই বইমেলার শুভ সূচনা করেছিলেন। এই প্রাথমিক পর্যায় শুরু হয়েছিল কলকাতা থেকে প্রকাশিত বাংলাদেশের কিছু অভিবাসী লেখকের লেখা মাত্র ৩২ খানা বই নিয়ে।
১৯৭৪ সালে বাংলা একাডেমির উদ্যোগে একটি বিশাল জাতীয় সাহিত্য সম্মেলন হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান এই মেলার উদ্বোধন করেন। সে উপলক্ষে নিজামী, চিত্তবাবু, বর্ণমিছিলের তাজুল ইসলামসহ সাত-আটজন প্রকাশক একাডেমির ভেতরে পূর্ব পাশের দেয়াল ঘেঁষে বই সাজিয়ে বসে যান। প্রকাশকদের এই স্বতঃস্ফূর্ত, স্বতঃপ্রণোদিত সমাগম দেখে ১৯৭৫ সালে বাংলা একাডেমি বর্ধমান হাউস প্রাঙ্গণে চুনের সাদা দাগ দিয়ে প্রকাশকদের জন্য নির্দিষ্ট জায়গা বরাদ্দ করে দেয়। সে বছরই প্রথম নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্রের বাইরে বাংলা একাডেমিও একটি স্টল দেয়। এরপর থেকে বাংলা একাডেমিতে একটি বইমেলা আয়োজনের জন্য বইপ্রেমীদের চাপ বাড়তে থাকে।
তবে, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত এই আয়োজনের কোনো নাম ছিল না। ১৯৭৮ সালে একাডেমির মহাপরিচালক আশরাফ সিদ্দিকী বাংলা একাডেমিকে এই বইমেলার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত করেন। তখন ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বইমেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলা একাডেমি বইমেলার নামকরণ করা হয় ‘একুশে গ্রন্থমেলা’। ১৯৮৩ সালে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মনজুরে মওলা বাংলা একাডেমিতে প্রথম ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’–এর আয়োজন করেন। তারপর ১৯৮৪ সালে একেবারে পাকাপাকিভাবেই ১৯৫২ সালের ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বইমেলার নাম ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ এবং মেলার মেয়াদ ফেব্রয়ারি মাসব্যাপী নির্ধারণ করা হয়।
২০১৪ সাল থেকে প্রকাশক, লেখক ও পাঠকদের চাহিদা বাড়ার কারণে বাংলা একাডেমি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বইমেলা সম্প্রসারণ করা হয়। ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ নামকরণ হলেও বইপ্রেমীদের মুখে মুখে মেলার নাম ‘একুশে বইমেলা’ নামেই পরিচিত হয়ে গেছে।
এ বছর বইমেলায় ৫২৩টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছিল। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০৪টি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ১৫০টি এবং ৩৯৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৬২০টি ইউনিটসহ মোট ৪৯৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৭০টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বাংলা একাডেমিসহ ২৪টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে মোট ২৪টি প্যাভিলিয়ন। লিটল ম্যাগাজিন চত্বরে ১৮০টি লিটলম্যাগকে ১৫৫টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া স্টল পেয়েছে আরও ১৩০টি প্রতিষ্ঠান।
অমর একুশে বইমেলায় এবার ৪ হাজার ৮৩৪টি নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। বাংলা একাডেমির তথ্য মতে, এটি বইমেলার ইতিহাসে একটি রেকর্ড। গত বছর নতুন বই প্রকাশিত হয়েছিল ৪ হাজার ৫৯১টি। এবারে বইমেলার বিষয়ভিত্তিক বই হচ্ছে গল্প ৭৫৭টি, উপন্যাস ৬৯৮টি, প্রবন্ধ ২৭২টি, কবিতা ১ হাজার ৬০৮টি, গবেষণা ৮০টি, ছড়া ১৪৮টি, শিশুতোষ ১৫০টি, জীবনী ১৬৭টি, রচনাবলী ১৫টি, মুক্তিযুদ্ধ ১১০টি, নাটক ৪৩টি, বিজ্ঞান ৭৭টি, ভ্রমণ ৮৫টি, ইতিহাস ৭৭টি, রাজনীতি ৩৩টি, রম্য/ধাঁধা ৩৭টি, কম্পিউটার ৫টি, ধর্মীয় ২৫টি, অনুবাদ ৩৮টি, অভিধান ৬টি, সায়েন্স ফিকশন ৪৫টি এবং অন্যান্য ৩৩০টি। অতীতের মতো এবারও সর্বোচ্চ কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। মেলার শেষ দিনেও নতুন বইয়ের প্রবাহ অব্যাহত ছিল। এদিনও মোট ৬৪টি বই এসেছে।
এবারের ১ মাস দুই দিনের মেলায় ৮০ কোটি টাকার বই বিক্রি হয়েছে। গত বছরের মেলায় বই বিক্রি হয়েছিল ৭০ কোটি ৫০ লাখ টাকার। মেলা উপলক্ষে গঠিত নীতিমালা বাস্তবায়ন কমিটির জরিপ দল মেলার এসব তথ্য সংগ্রহ করেছে।
বইমেলা উপলক্ষে প্রবাসী লেখক, কবি ও পাঠকের সমাবেশও বেশ লক্ষণীয়। মেলা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা হয়ে গেল নিউইয়র্কপ্রবাসী অনেক বিশিষ্ট লেখক, কবি ও শিল্পীর সঙ্গে। অঙ্কন শিল্পী রাগীব এহসান, লেখক হুমায়ূন কবির, আহমাদ মাযহার, ইশতিয়াক রূপু আহমেদ, রওশন হাসান, শেলী জামান খান, এইচ বি রিতা, জুলি রহমান তাঁদের বইয়ের প্রকাশনা উপলক্ষে এসেছেন। প্রকাশক, পরিবেশক ও লেখক বিশ্বজিৎ সাহা এসেছেন তার ‘মুক্তধারা নিউইয়র্ক’–এর স্টল নিয়ে। এসেছেন কানাডা প্রবাসী লেখক জসীম মল্লিক, কবি হোসনে আরা জেমী, সালমা বাণী প্রমুখ।
শাহবাগকে এককথায় বলা যায় রাজধানীর সাংস্কৃতিক প্রাণকেন্দ্র। তবে ফি বছরই বইমেলা যেন বাড়তি এক আয়োজনের, আনন্দের হাতছানি দেয়। গোটা মেলা হয়ে ওঠে শিল্প-সাহিত্যের বিকাশ কেন্দ্র। মেলায় যাইরে…; এমনি মনে দোলা দেওয়া এক অনুভূতিতে চঞ্চল হয়ে ওঠে মন। সৃজনশীল মানুষেরা বইমেলাকে কেন্দ্র করে একটা ঘোরের মধ্যে থাকে। তাই তো স্বজনের সঙ্গে নতুবা বন্ধুর সঙ্গে হাতে হাত রেখে রোজ মেলায় আসা বইমেলার রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ছুটির দিনে তো কথাই নেই। বিশেষ দিনগুলোতে আড্ডা যেন আরও জমে ওঠে। বসন্তবরণ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস আর একুশে ফেব্রুয়ারিতে দিনব্যাপী নানা আয়োজনে মুখরিত হয় মেলা প্রাঙ্গণ। অনেককেই বলতে শুনেছি, ‘বইমেলা যেন একান্ত আপনার হয়ে গেছে। মেলার সময় ঘরে বসে থাকতে মন চায় না। এই এক মাসে যত বন্ধুদের দেখা মেলে, অন্য সময়ে তাদের টিকিটিও দেখা যায় না। এই প্রিয় মেলা, প্রিয় আড্ডার জন্য তাই বছর ধরে অপেক্ষা করি। মেলা শেষে ফের অপেক্ষার পালা শুরু হয়।’
এবারের মেলার ২৭তম দিনে আচমকা টানা তুমুল বৃষ্টিপাতে ধূলিময় রাজধানী ও বায়ুদূষণে অতিষ্ঠ নগরবাসী চাতক পাখির মতো উৎফুল্ল হয়ে উঠলেও বৃষ্টিভেজা এমন আনন্দলগ্নে অশ্রুসিক্ত হয়েছে বইমেলা। নগরের অন্য প্রান্তে বৃষ্টি আশীর্বাদ আনলেও বইমেলায় যেন এসেছিল অভিশাপ হয়ে। শেষের আয়োজনে বাঁধ সেঁধেছিল বৃষ্টি। তুমুল বৃষ্টিতে কর্দমাক্ত হয়েছে মেলার আঙিনা। ফলে বৃষ্টিতে আটকে গেছে বইপ্রেমীদের শেষ মুহূর্তে বই কেনার ইচ্ছে। ২৭ ফেব্রুয়ারি দুপুরের পর থেকেই বৃষ্টির আনাগোনা শুরু হয়েছিল। মেলার পর্দা ওঠে বিকেল ৩টায়। আর সন্ধ্যা হতেই অঝোর বৃষ্টি নামে; প্রবল বৃষ্টিতে মেলার চিত্র যায় পাল্টে। শেষের দুদিন যেখানে ক্রেতা-দর্শকের উপচে পড়া ভিড়ে মেলা জমে ওঠার কথা, সেখানে ছিল হাতে গোনা অল্প কিছু মানুষের আনাগোনা। তাই নির্ধারিত সময়ের আগেই সন্ধ্যা ৬টায় বইমেলা বন্ধ ঘোষণা করে বাংলা একাডেমি।
রাজনৈতিক বা সামাজিক কোনো অস্থিরতা না থাকায় এবার শুরু থেকেই বইমেলা জমে উঠেছিল। বিশেষ করে বসন্তবরণ আর ভালোবাসা দিবস থেকেই বদলে যায় মেলার চিত্র। আয়োজকদের ধারণা ছিল, শেষ বেলায়ও একই চিত্র থাকবে। কিন্তু বৃষ্টি আর ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনের কারণে যানবাহনের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার কারণে মেলায় ছন্দপতন ঘটে।
পরে লেখক ও প্রকাশকদের দাবির মুখে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় অমর একুশে বইমেলার সময় দুই দিন বাড়ানো হয়; ফলে ২ মার্চ পর্যন্ত মেলা চলেছে। ১ ফেব্রুয়ারি মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মেলার মূল মঞ্চে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়ে মেলার ইতি ঘোষণা করেন একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবেই এবারের বইমেলা শেষ হয়েছে।
একটি মাত্র বইমেলা। কিন্তু তার হাজারটা গল্প। যে মেলায় হাজার হাজার প্রাণের সম্মিলন হয়, সে গল্পের ঠাস বুননে রোজ নতুন নতুন গল্প সংযোজিত হবে সেটাই তো স্বাভাবিক। মেলা ঘিরে যেন আনন্দবাজার বসে যায়। শাহবাগ থেকে দোয়েল চত্বর, টিএসসি থেকে শহীদ মিনার, সব ঠিকানা জুড়েই আড্ডা; সাহিত্য আড্ডা, প্রেম আড্ডা, বন্ধুদের আড্ডা, আত্মীয়-পরিজনের আড্ডা। হাজারো গল্পের ঝাঁপি খুলে, চায়ের কাপে ঝড় তুলে, মনের মানুষের সঙ্গে চলে তুমুল আড্ডা। এখানেই যেন আড্ডাপ্রিয় বাঙালিরা সত্যিই অনন্য!