ভেঙে ফেলা হবে গ্র্যান্ড হায়াত হোটেল ভবন
নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের বিখ্যাত গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল টার্মিনালের পাশের হোটেল গ্র্যান্ড হায়াত ভেঙে ফেলা হবে। ভবনটি ভেঙে সেখানে নতুন করে নির্মাণ করা হবে বহুতলবিশিষ্ট ভবন। এ বিষয়ে এরই মধ্যে একটি ভবন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নতুন করে ভবনটি নির্মাণ করবে টিএফ কর্নস্টোন।
টিএফ কর্নস্টোন জানিয়েছে, ধনকুবের মাইকেল ডেলের অর্থ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে তারা এ ভবন কিনতে সম্মত হয়েছে। ভবনটি ভেঙে এর কিছু অংশ হোটেলের জন্য রেখে বাকিটা দোকান ও অফিসের জন্য বরাদ্দ করা হবে।
১৯৭০ সালে এটি হোটেল কমোডোর নামে পরিচিত ছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প এটি ম্যানহাটন রিয়েল এস্টেটের কাছ থেকে কিনে নেন। ট্রাম্প ভবনটি কেনার সময় নিউইয়র্কে অর্থনৈতিক অবস্থা বেশ বাজে ছিল। অনেক প্রতিষ্ঠানই দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছিল। ফলে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের এই ভবন কেনায় আগ্রহ ছিল না। কিন্তু ব্যবসায়ী ট্রাম্প এখানেই দেখেছিলেন সম্ভাবনা। তাঁর নজর ছিল কানেকটিকাট ও ওয়েস্টচেস্টার থেকে আসা পর্যটকদের দিকে। গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল টার্মিনাল ও সাবওয়ে স্টেশন থেকে রাস্তায় নেমে আসা হাজার হাজার মানুষও তাঁর চোখ এড়ায়নি। ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘পুরো নগরী দেউলিয়া হয়ে গেছে, আর আমি দেখেছিলাম চমৎকার একটি সম্ভাবনা।
সেই সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর বাবার নামে গ্যারান্টেড ঋণ ব্যবহার করেন। নগরী থেকে কর অব্যাহতি নেন। কয়েক বছরের মধ্যে তিনি পুরোনো ভবনকে একটি মসৃণ গ্লাস টাওয়ারে পুনর্নির্মিত করেন। ট্রাম্প এটি কেনার পর তাঁর ভাগ্য জুয়াড়িদের মতোই খুলে যায়। কয়েক বছর পর তিনি ফিফথ অ্যাভিনিউতে ট্রাম্প টাওয়ার কেনেন এবং ১৯৯৬ সালে হোটেল কমোডোরকে গ্র্যান্ড হায়াত করপোরেশনের কাছে বিক্রি করে দেন।
সাম্প্রতিক চুক্তিতে নতুন ভবনটি হবে ২০ লাখ বর্গফুটের। এতে থাকবে ৫০০টি কক্ষ। স্থান থাকবে অফিস ও দোকানের জন্য। এটি হবে তখন নিউ গ্র্যান্ড হায়াত হোটেল। বর্তমান হোটেলে ১ হাজার ২৯৮টি রুম রয়েছে। এখনো গ্র্যান্ড হায়াতের জমি নগর উন্নয়ন করপোরেশনের মালিকানাধীন। ডেল টেকনোলজিসের প্রতিষ্ঠাতা গ্র্যান্ড হায়াতের বর্তমান মূল্য ৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার হবে বলে ধারণা করছেন।
উল্লেখ্য, এই গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলের ভবনটি কেনার মধ্য দিয়েই বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আবাসন ব্যবসায়ী হিসেবে খ্যাতি চারদিকে প্রথম ছড়িয়ে পড়ে। অভিজাত অতিথিদের কাছে হোটেলটি বেশ জনপ্রিয়। প্রতি বছর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে আসা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানরাও এই হোটেলেই সাধারণত ওঠেন। বহু দেশের রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের আতিথ্য দিয়েছে এই হোটেল।