সুমীর চোখে জল
সুমী ঠিক ড্রয়িং রুমের দরজাটায় হেলান দিয়ে দূর থেকে জীবনকে দেখছে। জীবন জুনিয়র–সিনিয়র ভাইদের সঙ্গে প্রাণ ভরে হাসছে। কালকে রাতেও জীবনের মুখে ছিল রাজ্যের টেনশন। সারা রাত ঘুমাতে পারেনি। সকালের দিকে একটু যা ঘুমিয়েছে। সকালে উঠেই ভয়ে ভয়ে প্রেজেন্টেশন দিতে গিয়েছে। আজ জীবনের পিএইচডির ডিফেন্স ছিল। ওদের এত দিনের কষ্টের সার্থক সমাপ্তি। সকালেও একবার চোখে পানি এসেছে। যখন ওর অ্যাডভাইজর এসে ওর সঙ্গেও হ্যান্ডশেক করে বলল, “ওর সফলতার তুমিও অর্ধেক দাবিদার। তাই আজ তোমাকেও অভিনন্দন জানানো আমাদের কর্তব্য। এর পর ওকে পাশে নিয়েই সব অ্যাডভাইজর মিলে ছবি তুলল। তখনো ও একবার হালকা করে কেঁদেছে। তাড়াতাড়ি মুছেও ফেলেছে সঙ্গে জীবন না দেখে। আজকের দিনটা তো জীবনের। আজ যদি ও সুমীকে ভেজা চোখে দেখে তাহলে তো ওর মন খারাপ হবে। দুপুরে অ্যাডভাইজরের সঙ্গে লাঞ্চ করে তাড়াতাড়ি বাসায় এসে বাকি রান্নাগুলো করতে বসেছে। বিকেলে ও ভার্সিটির সবাইকে আসতে বলেছে। জীবন জানে না। ওকে একটু সারপ্রাইজ দেবে। সবাই যখন বিকেলে এক সঙ্গে আসল জীবন কি খুশি। দূর থেকেই জীবনের সেই হাসি দেখে ওর চোখে একটু পানি আসছে। আসলে চোখে পানি আসাটা সুমীর পুরোনো অভ্যাস। যখনই জীবন কিছু পেয়ে খুশি হয় তখনই সুমীর চোখ খুশিতে ভিজে যায়। এই ভেজা চোখেই সুমী ওদের গত ১২ বছরের সংগ্রামটা দেখতে পাচ্ছিল।
দুজনেই খুলনায় বড়। প্রাইভেট টিচারের কাছে একসঙ্গে পড়া এরপর একই কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পড়তে পড়তে কখন যে দুজনের মাঝে একটা ভালোলাগার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে ওরা বুঝে ওঠেনি। সত্যি বলতে জীবন কোনো দিন ওকে ফুল দিয়ে ভালোবাসার প্রস্তাবও দেয়নি। কলেজ শেষে জীবন চান্স পেল ঢাকা ভার্সিটির অ্যাপ্লাইড ফিজিকসে আর সুমী ঢাকা মেডিকেলে। দুজনেই ক্লাস শেষে এক সঙ্গে বিকেলে ঘুরতে বের হতো। ছুটিতে এক সঙ্গে খুলনায় যেত। জীবনের পড়াশোনা একটু আগে শেষ হয় আরও চাকরি শুরু করে। তখন সুমী ইন্টার্নি করছে। এর মাঝেই ওদের বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ের পর ঢাকাতে ওদের প্রথম সংসার জীবন শুরু করে। সুমীও একটা বেসরকারি হাসপাতালে চাকরি জীবন শুরু করে। এর মাঝেই একদিন জীবন বলে আচ্ছা সিনিয়র ভাইয়েরা সবাই এখন ইউএসএ যাচ্ছে পিএইচডি করতে। আমরা যদি যাই সেটা কি ভালো হবে? সুমী একটু চিন্তা করল, দেশে ওর ডাক্তারি ক্যারিয়ারটা যেভাবে আগাতে পারত, বিদেশে কি এভাবে পারবে? কিন্তু আবার জীবনের দিকে তাকাল। ওর পিএইচডি ওর ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে বলল “আরে খারাপ হবে কেন? তুমি চেষ্টা কর, হলে দুজনে এক সঙ্গে যাব।” জীবন ঠিকই সারা দিন চাকরি করে এসে রাতে বাসায় টোফেল, জিআরই পড়ে জর্জিয়ার এক ইউনিভার্সিটিতে অ্যাডমিশন আর ফান্ড পায়। সুমী এখনো মনে করে যেদিন ফান্ডের ই–মেইল পেল জীবনের কী খুশি। পুরা বাচ্চার মতো লাফাচ্ছিল। ওইদিন রাতেও সুমী সব বন্ধু–বান্ধবকে ডেকে খাইয়েছিল। দেশ থেকে আসার কথা বলায় প্রথমে সুমীর বাবা–মা একটু আপত্তি করেছিল। মেয়েটার এখানে এত সুন্দর ভবিষ্যৎ আর বিদেশে ডাক্তারদের অনিশ্চয়তার জীবন। তখন সুমীই উল্টো ওর বাবা–মাকে বুঝিয়েছিল আরে দেখ ওখানে আমি আরও ভালো করব। ইউএসএমএলই দিয়ে রেসিডেন্সি জোগাড় করে ফেলব। আর জীবনের দিকটা দেখ। এত ভালো একটা সুযোগ পেল পিএইচডি করার। সব শুনে ওর বাবা–মা মেয়ের দিকে তাকিয়ে রাজি হয়ে যায়। দেশ থেকে আসার সময় অবশ্য এয়ারপোর্টে সুমী ওর মাকে জড়িয়ে অনেক কেঁদেছিল। জীবন বলেছিল মা চিন্তা করেন না। আমি সব খেয়াল রাখব।
সুমী এখনো ভেজা চোখে দেখতে পায় প্রথম ওদের আটলান্টা এয়ারপোর্টে জানুয়ারির শীতের রাতে মিজান ভাইয়ের আসার জন্য এয়ারপোর্টের বাইরে অপেক্ষা করা। তখন সুমী শীতে কাঁপছে। জীবন ওর জ্যাকেটটা খুলে সুমীকে দিয়েছিল পড়তে আর জীবন গিয়েছিল কারও কাছে অনুরোধ করতে মিজান ভাইকে যেন একটা ফোন দেয়। এর মাঝেই মিজান ভাই আসেন আর তাদের বাসায় নিয়ে যান। প্রথম দুই দিন জীবনরা মিজান ভাইয়ের বাসাতেই ছিল। ওই দুই দিন বিদেশে প্রথম অপরিচিতের বাসা। ভালো করে ঘুম হয়নি। জীবন যেদিন অ্যাপার্টমেন্টের চাবি পেল ওদিন সুমী হাফ ছেড়ে বাঁচল। প্রথম দিন ওদের বাসায় ম্যাট্রেস ছিল না। তারপরও দেশে থেকে আনা চাদরে ওর কী শান্তির ঘুম। প্রথম দিন পাশের স্টুডেন্ট অ্যাপার্টমেন্টের ছোট এক ভাই-আপু র বাসায় রাতে খেয়েছিল। রাতে খাওয়ার পর ওদের সঙ্গেই ওদের প্রথম গ্রোসারি শপিং করতে গিয়েছিল। এত বড় গ্রোসারি দেখে সুমী-জীবন একটু অবাক। যখন প্রথম রান্না ঘরের জিনিসগুলো কিনল আর ৮০ দিয়ে গুণ দিল, সুমী চিন্তা করে এত দাম। জানে জীবন দেশ থেকে বেশি টাকা আনতে পারে নাই। তাই থালা বাসনের পুরা সেট না কিনে দুইটা মাঝারি সাইজের পাতিল কিনল, জীবন আপত্তি করলেও বলল-আমি ঠিকই পারব। পরে ভালোটা কিনব। মিজান ভাই পরে এসে একদিন ওদের ম্যাট্রেস কিনে দিল। প্রথম দিকে ওদের বাসায় কোনো ফার্নিচার ছিল না। রান্না করে ড্রয়িং রুমের কার্পেটে একটা চাদর পেতে খেতে বসত। আস্তে আস্তে জীবনের গ্র্যাজুয়েট লাইফের নিত্য নৈমিত্তিক রুটিন শুরু হয়ে গেল।
ওদের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে জীবনের ক্লাসরুম ৩০ মিনিটের দূরত্বে। ভার্সিটির বাস আসত ৮ টায়, ও ঠিক ৭.৪৫ এর মাঝে গিয়ে বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়াত আর আসত বিকেল ৬ টায়। জীবন রাত জেগে ল্যাব অ্যাসাইনমেন্ট শেষ করে রোজ গভীর রাতে ঘুমাতে আসত। ওর বাংলাদেশের ভার্সিটি থেকে খুব বেশি তখনো কেউ আসেনি। ওর নোটপাতি কিছু ছিল না। প্রথম দিকে জীবন অনেক ভয় পেয়েছিল। মাঝে মাঝে সুমীকে ওর ভয়ের কথা বলত। সুমী উল্টো ওকে সাহস দিত। জীবনের মাসিক স্টাইপেন্ড বেশি ছিল না। এখানকার অন্য জুনিয়ররা যারা ব্যাচেলর ছিল তারা অ্যাপার্টমেন্ট শেয়ার করত। আর ৫-৬ টা যেই ম্যারেড কাপল ছিল তারা দুজনেই স্টাডি করায় দুজন মিলে স্টাইপেন্ড পেত। ইঞ্জিনিয়ারিং বা সায়েন্সের বিষয়ে পড়ায় আপু/ভাবিরা যারা স্পাউস হিসেবে আসত, আসার ১ কি ২ সেমিস্টার পরেই তারা ভার্সিটিতে অ্যাডমিশন নিয়ে নিয়েছিল। সুমী যে এগুলো জানত না, তা না। ও জীবনের ভবিষ্যৎটা দেখেছিল বাংলাদেশ থেকে। জীবনকে তাই একাই ওর স্টাইপেন্ডের টাকায় সংসার চালাতে হতো। অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া আর গ্রোসারি করার পর আর বেশি টাকা থাকত না। জীবন গাড়িও কিনে নাই প্রথম ২ বছর। ওর এখনো মনে পড়ে শনি আর রবিবার ভার্সিটির সাঁটল বাসে ওরা গ্রোসারি করতে যেত আর বাসস্ট্যান্ড থেকে দুজন চার হাতে সব জিনিস নিয়ে ১০ মিনিট হেটে আসত। আর মাছ মাংস কেনার জন্য আসে পাশের ভাইয়া আপুদের বলে রাখত। তারা যখন যেত তাদের সঙ্গে যেত। জীবন বরাবরই একটু লাজুক মানুষ। কাউকে কিছুর জন্য বলতে ওর সংকোচ লাগত। তাই সুমীকেই আপু/ভাবিদের বলে রাখতে হতো।
জীবনের ভার্সিটির বাংলাদেশি ভাই আপুরা প্রায় শুক্র/ শনিবার রাতে আড্ডা দিতে বসতো। ওদের বিদেশের গ্র্যাজুয়েট লাইফে ওটাই ছিল একটু প্রাণ ভরে দম নেওয়ার সময়। সবাই তাদের সারা সপ্তাহের কষ্টগুলো যেন ওই আড্ডাতেই ভুলে যেত। এর মাঝে আপু/ভাবিরা যখন তাদের ল্যাব, ক্লাসের কথা বলত সুমী শুনত আর একটু হলেও মন খারাপ হতো। জীবন এটা একদিন বুঝে ফেলে। ওই দিন রাতে বাসায় ফেরার পথে ওকে বলে-ভালো লাগছে না। চল হাঁটতে যাই। ওরা ওদের অ্যাপার্টমেন্ট কমপ্লেক্সের আশপাশে অনেক ক্ষণ ধরে হাত ধরে হাঁটল। ফেরার সময় জীবন বলল সুমী তুমি আস্তে আস্তে ইউএসএমলি পড়া শুরু কর। সুমী বাংলাদেশ থেকেই ঠিক করে রেখেছিল প্রথম দিকের ধাক্কাগুলো গেলে ও ইউএসএমলি পরে রেসিডেন্সির চেষ্টা করবে। জানে সবাই সফল হতে পারে না, কিন্তু ও এমনি এমনি হাল ছেড়ে দেওয়ার মেয়ে না। এরপর থেকে জীবন সকালে চলে গেলেই সুমী ইসএসএমএলই’র বইগুলো নিয়ে পড়তে বসতো। বইগুলা অনেক দামি। ১০ বছরের বড় ভাইয়ের কাছ থেকে জোগাড় করেছে ও অনেক কষ্ট করে। জীবন ওকে রোজ রাতে এসে একটু অনুপ্রেরণা দিত। এর মাঝেই একদিন সুমী রেজিস্ট্রেশন এর জন্য গিয়ে দেখে ৬০০০ ডলার লাগবে। ওর একটু মন খারাপ হয়ে যায়। সুমী জানে জীবনের কাছে এত টাকা নাই। জীবন বুঝে কয়েক দিন ধরে সুমী একটু আনমনা। অনেক অনুরোধ করায় সুমী খুলে বলে। জীবন হেসে বলে ও এই ব্যাপার। সুমী ঠিকই বুঝে জীবন হেসে বললেও আসলে ওর কাছে টাকা নাই। সামারের ঠিক আগে আগে একদিন জীবন বাসায় এসে বলে আজ একটু ভালো মন্দ রান্না করে দিবা। সুমী রান্না ঘরে ব্যস্ত। রান্না থেকে ফিরে দেখে বালিশের ওপর একটা ফুলের তোড়া। আর তার নিচে একটা কাগজ। সুমী বলে এটা কী? জীবন বলে খুলেই দেখ। সুমী দেখে একটা অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার। জীবন সামারে ২০ ঘণ্টার নিজের ল্যাব বাদে আরেকটা কাজ জোগাড় করেছে। ও সামারে অতিরিক্ত ৫০০০ টাকা পাবে। জীবন বলে “নাও, তোমার রেজিস্ট্রেশন ফি।” সুমী অনেকক্ষণ হতো বিহ্বল হয়ে চেয়ে দেখে। জীবন বলে-দেখছ কি? তোমার ডাক্তার হওয়ার প্রথম ধাপটায় কিন্তু আমি সাহায্য করলাম। যখন ডাক্তার হবে আমাকে মাঝে রেস্টুরেন্ট ট্রিট দিয়ো। সুমী ওকে জড়িয় ধরে অনেক ক্ষণ কাঁদে।
এক বছর পর জীবনের যখন পিএইচডির কোয়ালিফাইং পরীক্ষা ছিল তার দুই সপ্তাহ পরেই সুমীর ইউএসএমএলইর প্রথম পার্টের রেজাল্ট দেয়। পরীক্ষার পর ওর খুব চিন্তা। যদি রেজাল্ট ভালো না হয়–ও কি বলবে। ওর রেজাল্ট দেখে সুমীর থেকে জীবন বেশি খুশি। ওই দিন রাতেই বলে চল সমুদ্র দেখে আসি। ৫ ঘণ্টা দূরে মারটাইল বিচ। ওরা কোনো দিন একসঙ্গে সমুদ্র দেখেনি। সুমী বলে যাবে কীভাবে? জীবন বলে দাড়া একটা গাড়ি রেন্ট নেই। ওদের তখনো গাড়ি নেই। এর কাছে ওর কাছে করে জীবন গাড়ি চালান শিখছে। লাইসেন্স পরীক্ষাও দিছে মিজান ভাইয়ের গাড়িতে। সুমী তারপরও বলল যাওয়ার দরকার কী? খামাখা টাকাগুলো খরচ হবে। জীবন বলে-আরে তুমি পাস করছ-এটা সেলিব্রেট করব না? কী বল? এরপর কী উৎসাহে ও হোটেল বুক দিল, গাড়ি ভাড়া করল। ওরা গেল সমুদ্র দেখতে। ইউএসএ আসার পর ওদের প্রথম অন্য স্টেটে যাওয়া। ৫ ঘণ্টা ড্রাইভ করে যখন হোটেলে পৌঁছাল ওদের আর তর সয় না সমুদ্র দেখার। রাত হয়ে যাওয়ায় ওইদিন আর যায়নি। পরদিন সকালে সূর্য ওঠার আগেই দুজন দৌড় দিল সমুদ্র দেখতে। সমুদ্রের বিশালতা দেখে ওরা অবাক, ঢেউয়ের শব্দ শুনে দুজন শিহরিত। প্রথম যখন ওরা দুজন এক সঙ্গে পা ভেজাল সমুদ্রের পানিতে-সে এক অজানা অনুভূতি। ওর মোবাইল ফোনের ক্যামেরাটাতেই কত ছবি তোলা। সুমী এখনো বলতে পারে-ওর জীবনের সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্তের একটা হলো এক সঙ্গে সমুদ্র দেখা।
এরপর আস্তে আস্তে জীবন প্রপোজাল পাস করল। ওর কাজে ওর প্রোফেসর খুশি। ওর পিএইচডির ফাইনালের আগে জীবন পোস্ট ডকের অফার পেয়ে গেল। জীবনও এখনই চাকরিতে যেতে চায় না। সুমীর নিজের চেষ্টায় আর জীবনের অনুপ্রেরণায় সুমী একে একে বাকি পরীক্ষাগুলো শেষ করে। জীবনের পিএইচডির ডিফেন্সের থেকেও কঠিন ছিল সুমীর শেষ পরীক্ষাটা। সুমী নিজেও একটু ভয় পেয়ে গিয়েছিল। পরে ঠিকই পাস করে। সুমীর ভেজা চোখে এখনো ভাসে যেদিন ওর শেষ পরীক্ষার রেজাল্ট দিল জীবন ইয়া বড় “কংগ্রাচুলেশন ডক্টর” লেখা কেক নিয়ে আসে। ওর কি খুশি। সুমী বলে, “এখনো তো হইনি। রেসিডেন্সি পেতে হবে। ওটা আরও কঠিন।” জীবন বলে, “আরে পেয়ে যাবা। আজ সেলিব্রেট করি।” ওর ভেজা চোখে সব স্মৃতিগুলাই ভাসছে। এ সময় হটাত ও সংবিৎ ফিরে পায়-জীবন ডাকছে। ও বর্তমানে ফিরে আসে। এই খাবার দিবা না? রাত হয়ে যাচ্ছে। সুমী বলে, ও হ্যাঁ দিচ্ছি। ও যত্ন করে খাবারগুলো সাজায়। এ সময় এক জুনিয়র বলে, “ভাইয়া আপু দাঁড়ান, একটা ছবি তুলি।” সুমী ওড়না দিয়ে ওর চোখটা মুছে নেয়। ক্যামেরায় ক্লিক হয়, ওই সময়ের হাসি মুখটাই সবাই দেখে, পেছনের বিদেশের বুকে পাঁচ বছরের কষ্টটা ক্যামেরায় আসে না। ওর ভেজা চোখের কারণগুলো শুধু ও আর জীবন জানে।