নিউইয়র্ক নগরীর সাবওয়ের এল-ট্রেন মেরামতের জন্য অঙ্গরাজ্যের গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো যে পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন, সে বিষয়ে আপত্তির কথা আগেই জানিয়েছিল মেট্রোপলিটন ট্রান্সপোর্টেশন অথোরিটি (এমটিএ)। এবার এ মতানৈক্য মেটাতে তৃতীয় আরেক পরামর্শক নিয়োগের কথা ভাবছে বলে জানিয়েছে এমটিএ।
এমটিএর পরিচালনা পরিষদে পাঠানো এ সম্পর্কিত এক প্রস্তাবের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক ডেইলি নিউজ ২১ জানুয়ারি জানায়, প্রায় শত বছর পুরোনো ক্যানারসি টানেল সংস্কারের জন্য অ্যান্ড্রু কুমোর দেওয়া পরিকল্পনা নিয়ে স্বাধীন পরামর্শকের মত চায় এমটিএ। এই সংস্কার পরিকল্পনার বিষয়ে সম্পূর্ণ নতুন ও পূর্ণাঙ্গ একটি পর্যালোচনা প্রতিবেদন চাইছে কর্তৃপক্ষ। স্বাধীন ওই পর্যালোচকের কাজ হবে এল-ট্রেন বন্ধ না করে ১৫ মাস ধরে টানেল সংস্কারের যে পরিকল্পনার কথা অ্যান্ড্রু কুমো ঘোষণা করেছেন, তার নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে বিস্তারিত নিরীক্ষা প্রতিবেদন দেওয়া।
চলতি মাসের শুরুর দিকে কর্নেল ও কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলীদের সহায়তায় তৈরি করা একটি সংস্কার পরিকল্পনা ঘোষণা করেন গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো। এল-ট্রেন বন্ধ না করেই ট্রেন লাইনটি সংস্কারের কথা বলা হয় ওই পরিকল্পনায়। কিন্তু এমটিএ এ পরিকল্পনাকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ আখ্যা দিয়ে জানায়, একই ধরনের একটি পরিকল্পনা কয়েক বছর আগে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে এ ধরনের সংস্কার কার্যক্রম সংশ্লিষ্ট কর্মী ও সাধারণ যাত্রীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে বিবেচনায় বাতিল করা হয়। অ্যান্ড্রু কুমো নতুন করে এ পরিকল্পনার কথা জানালে, অভিজ্ঞ প্রকৌশলীদের কাছ থেকেও আপত্তি আসতে থাকে। কিন্তু গভর্নর এখন পর্যন্ত এই পরিকল্পনা থেকে সরে আসেননি। এ অবস্থায় স্বাধীন পরামর্শক নিয়োগের কথা বলছে এমটিএ। এ ক্ষেত্রে নিউইয়র্ক সাবওয়ের প্রেসিডেন্ট অ্যান্ডি বাইফোর্ডেরও সায় রয়েছে।
এ পরিকল্পনায় ঘূর্ণিঝড় স্যান্ডিতে ক্ষতিগ্রস্ত শতবর্ষী টানেলের দেয়ালের অভ্যন্তরে ভারী ক্যাবল বসানোর বদলে বাইরে স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। এতে দেয়াল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। একই সঙ্গে এতে করে যে বর্জ্য তৈরি হবে তা সংশ্লিষ্ট কর্মীদের ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে ফেলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে শুধু রাতের বেলা ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এ সংস্কার চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর ফলে সৃষ্ট বর্জ্য সাধারণ যাত্রীদের জন্যও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন তাঁরা। তাঁদের মতে, যে নিরবচ্ছিন্ন সেবার দোহাই দিয়ে কুমো এ পরিকল্পনার কথা বলছেন, তাও অব্যাহত রাখা সম্ভব হবে না। কারণ এল-ট্রেন মূলত রাতের যাত্রীদের মধ্যেই জনপ্রিয়। এ ছাড়া এ পরিকল্পনা অনুযায়ী সংস্কার করতে ব্যয় কত হবে, সে বিষয়েও স্পষ্ট কিছু বলা হয়নি।