জেনে নিন স্ট্রোকের সতর্কবার্তা
অল্প কয়েক মিনিট বা কয়েক ঘণ্টার জন্য হাত বা পা অবশ, কথা জড়িয়ে যাওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা বা অন্ধকার দেখা ইত্যাদি আর তারপর নিজে নিজেই সব ঠিক হয়ে যাওয়া—এ রকম অবস্থাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় ট্রানসিয়েন্ট ইসকেমিক অ্যাটাক। অনেকে বলেন মিনি স্ট্রোক। যদিও এতে স্ট্রোক বা পক্ষাঘাতের মতো দীর্ঘমেয়াদি অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় না। আক্রান্ত ব্যক্তি সুস্থ হয়ে উঠলেও এই মিনি স্ট্রোক একটি সতর্কবার্তা। কেননা, প্রতি তিনজন মিনি স্ট্রোকের রোগীর মধ্যে অন্তত একজন অদূর ভবিষ্যতে পূর্ণাঙ্গ স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারেন। তাই আগেই জীবনাচরণ পাল্টে ও চিকিৎসা নিয়ে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো জরুরি।
কীভাবে বুঝবেন
• হঠাৎ এক হাত, এক পা, শরীরের এক পাশ বা মুখ অবশ হয়ে পড়ে, দুর্বল অনুভব করা
• হঠাৎ কথা জড়িয়ে যাওয়া
• চোখে অন্ধকার দেখা বা কোনো কিছু দুটো দেখা
• হঠাৎ তীব্র মাথাব্যথা
• চেতনা হারানো বা চলাফেরার ভারসাম্যহীনতা
ওপরের যেকোনো উপসর্গ কিছু সময়ের জন্য থাকার পর নিজে নিজেই সেরে ওঠা মিনি স্ট্রোকের লক্ষণ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এক ঘণ্টার মধ্যেই রোগী আবার ভালো বোধ করেন।
কেন হয়
যেসব কারণে মানুষের স্ট্রোক হয়, সেসবই এর জন্য দায়ী। মস্তিষ্কে স্বল্প সময়ের জন্য হলেও রক্তপ্রবাহ কমে যাওয়া বা রক্ত জমাট বেঁধে অল্প কিছুক্ষণ পর আবার রক্তপ্রবাহ সচল হওয়ার কারণে মিনি স্ট্রোক হয়। বয়স বৃদ্ধি, পারিবারিক ইতিহাস, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল, ধূমপান, হৃদ্রোগ ইত্যাদি হলো এর কারণ।
সতর্ক হোন
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কয়েক মিনিট বা এক ঘণ্টার মধ্যে সেরে যায় বলে মিনি স্ট্রোক বা টিআইএ নিয়ে অনেকে মাথা ঘামান না, সেরে যাওয়ার পর চিকিৎসকের পরামর্শও নেন না। কিন্তু এর কিছুদিন পরই পূর্ণাঙ্গ স্ট্রোক বা বিপদ ঘটে যেতে পারে। তাই এমন সমস্যায় সচেতন হতে হবে।
• ধূমপান করবেন না
• লবণ খাওয়া কমান। চর্বি ও তেলযুক্ত খাবার পরিহার করুন। যথেষ্ট সবুজ শাকসবজি ও ফলমূল খান।
• উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করুন।
• ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখুন
• ওজন কমান, নিয়মিত হাঁটুন
• চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নিন।
আগামীকাল পড়ুন: জরায়ুর টিউমার
প্রশ্ন-উত্তর
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে রয়েছে নানা স্বাস্থ্য সমস্যা। অনেক সময় ঘরে বসে কিংবা জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে এসব সমস্যার সমাধান সম্ভব। আপনার সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন পাঠান। উত্তর দেবেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা। বয়স লিখতে ভুলবেন না।
ই–মেইলে স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন পাঠান: [email protected]