খাবারদাবারের সঙ্গে দাঁতের সুস্বাস্থ্যের বিষয়টি ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। কিছু খাবার দাঁতের জন্য ভালো, আবার কিছু খাবার খারাপ। আঁশযুক্ত খাবার দাঁত ও মাড়ির পরিচ্ছন্নতাকারী বা ডিটারজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এগুলো লালা নিঃসরণে সহায়তা করে, যা ক্যাভিটির বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক প্রতিরোধ গড়ে তোলে। গম, ভুট্টা, শিমের বীজ—এ জাতীয় শস্যদানায় আঁশের পাশাপাশি আছে ম্যাগনেশিয়াম, যা এনামেলকে সুরক্ষা দেয়। বিভিন্ন ধরনের ফল, যেমন কমলা, জাম্বুরা, আনারসে যে ভিটামিন সি, ডি ও ক্যালসিয়াম আছে, সেটাও দাঁতের জন্য উপকারী। আপেল খেলে লালা নিঃসরণ বাড়ে, তা ছাড়া দাঁতের দাগ দূর হয়। তবে টক ও অম্লযুক্ত ফল খাওয়ার পর ভালোভাবে কুলি করে নিতে হবে।
পনির, দুধ, দই ও দুগ্ধজাত খাবার দাঁতের হাড়ের জন্য উপকারী। এতে ফসফরাস ও ক্যালসিয়াম আছে, যা দাঁতের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ। চিনিবিহীন চুইংগাম চিবানোর কারণে প্রচুর লালা উৎপন্ন হয় এবং এতে দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাদ্যকণা দূর হতে ও ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে। দাঁতের সুস্বাস্থ্যে ফ্লুরাইডের ভূমিকাও অনস্বীকার্য। দাঁত সুস্থ রাখার জন্য প্রচুর পানি পান করতে হবে। এই পানি মাড়িকে আর্দ্র রাখে, আটকে থাকা খাদ্যকণা দূর করে ও এনামেলের ক্ষয় রোধ করে।
কোনগুলো ক্ষতিকর
■ আঠালো ও চিনিযুক্ত মিষ্টি, ক্যান্ডি, পেস্ট্রি, কেক, ব্রেড এবং মচমচে ও ভঙ্গুর খাবার যেমন বিস্কুট, চিপস ইত্যাদি দাঁতের ফাঁকে আটকে যায়।
■ খেজুর, কিশমিশ খাওয়ার পর দাঁতে লেগে থাকলে এতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হতে পারে। আবার অ্যাসিডযুক্ত টক ফলের অ্যাসিডও এনামেলের ক্ষতি করে। এ ধরনের খাবার গ্রহণের পর ভালোভাবে কুলি করে নিতে হবে।
■ কার্বোনেটেড কোমল পানীয়তে প্রচুর চিনি, ফসফরিক অ্যাসিড ও সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে। এগুলো এনামেলের জন্য ক্ষতিকর।
কী করবেন
* মিষ্টি খাবার অন্য খাবারের সঙ্গে খাবেন। প্রথমে অন্য খাবার খেলে লালা নিঃসৃত হবে, যা ক্ষতি কিছুটা প্রশমিত করবে।
■ দিনে দুবার ব্রাশ ও একবার ফ্লস ব্যবহার করুন।
■ মিষ্টি ও আঠালো খাবার গ্রহণের পর ব্রাশ করুন। ফল বা ফলের রস পান করার পর কুলি করুন।
জেনিফার বিনতে হক, পুষ্টি বিশেষজ্ঞ, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল