২ হাজার কর্মী নেবে অগমেডিক্স
এ বছর ও আগামী বছরে স্ক্রাইব পেশায় নতুন ২ হাজার কর্মী নেবে অগমেডিক্স। কাজের ক্ষেত্র বাড়াতে নতুন পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গুগল গ্লাস স্টার্টআপ ও স্বাস্থ্যসেবা কোম্পানি অগমেডিক্স। স্ক্রাইবদের যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকদের সঙ্গে ঢাকায় বসে কাজ করার সুযোগ দেয় প্রতিষ্ঠানটি। অগমেডিক্সের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইয়ান শাকিল এ তথ্য জানান।
ইয়ান শাকিল বলেন, ২০১২ সালে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশের অগমেডিক্স। তিনি ও আরেক সহ-প্রতিষ্ঠাতা পেলু ট্র্যান মিলে অগমেডিক্সকে নিয়ে যাচ্ছেন নতুন লক্ষ্যের দিকে। এ উদ্যোগটি যুক্তরাষ্ট্রের বড় পাঁচটি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রায় ১৭ মিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ পেয়েছে। অগমেডিক্স যুক্তরাষ্ট্রের ৩০টিরও বেশি অঙ্গরাজ্যে প্রাইমারি কেয়ার ডক্টর, স্পেশালিস্ট ও সার্জনদের সেবা দিয়ে আসছে, যাঁরা প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার রোগী দেখেন।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে বড় একটি ভবনে চলছে অগমেডিক্সের কার্যক্রম। এ ভবনটিকে ইতিমধ্যে বেসরকারি সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। দেশে অগমেডিক্সের কার্যক্রম আরও বাড়াতে ঢাকার বাইরে কয়েকটি শহরে অবকাঠামো সম্প্রসারণ ও জনবল নিয়োগের কথা ভাবছে অগমেডিক্স কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশে নতুন স্টার্টআপ তৈরির পরিকল্পনা প্রসঙ্গে ইয়ান শাকিল বলেন, বিশেষ লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে অগমেডিক্স। বর্তমানে বাংলাদেশসহ অন্যান্য স্থানে নতুন নতুন ধারণা নিয়ে অনেক স্টার্টআপ তৈরি হচ্ছে। অগমেডিক্সের বর্তমান লক্ষ্য হচ্ছে বিশাল চাকরির ক্ষেত্র তৈরি করা। বিশেষ করে বাংলাদেশে। অগমেডিক্সের সেবা বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েও এগোচ্ছে। এতে উন্নত ফিচার, চিকৎসককে যুক্ত করার মতো কাজ হবে।
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান ইয়ান শাকিল প্রথম আলোকে জানান, অগমেডিক্সে গবেষণা, সফটওয়্যার উন্নয়ন, বিশ্লেষণসহ নানা কাজ করছেন বাংলাদেশের তরুণেরা। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের জন্য এ ধরনের নানা কাজ হচ্ছে ঢাকায় বসে। ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে ৭ হাজার স্ক্রাইব নিয়োগের পাশাপাশি তাঁদের প্রশিক্ষণ ও কাজের সঙ্গে যুক্ত করার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। গত মে মাস থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু দক্ষ স্ক্রাইব তৈরি হয়েছে। তাঁদের মধ্যে আরও স্ক্রাইব তৈরি করে সেবা দেওয়ার লক্ষ্য তাঁদের।
ইয়ান শাকিল জানান, স্ক্রাইবরা মূলত দূর থেকে চিকিৎসকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার কাজটি করবেন। চিকিৎসক যখন গুগল গ্লাস চোখে রোগী দেখেন, তাঁর সামনে রোগীর তথ্য সরবরাহ ও প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করার দায়িত্ব থাকবে স্ক্রাইবের। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসাসেবার তথ্য বাংলাদেশের এই স্ক্রাইবরা করবেন।
ইয়ান শাকিল জানান, যাঁরা অগমেডিক্সে কাজ করেন তাঁদের সম্মানজনক বেতন, বিভিন্ন বোনাস, ছুটি, চিকিৎসা ভাতাসহ বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা দেয় প্রতিষ্ঠানটি। স্ক্রাইবরা সপ্তাহে চার-পাঁচ দিন কাজ করেন, আর এখানে অফিসের কাজ বাসায় নিয়ে যাওয়ার কোনো ব্যাপার নেই। তাঁদের ভালো পারিশ্রমিক, হেলথ ইনস্যুরেন্স, উৎসব ভাতা, খাবার ও যাতায়াত-সুবিধা দেওয়া হয়। একজন স্ক্রাইব ভবিষ্যতে সিনিয়র স্ক্রাইব, স্ক্রাইব ট্রেইনার, টিমলিডার, কোয়ালিটি স্পেশালিস্ট, ম্যানেজার থেকে শুরু করে আরও অনেক উচ্চ পদে যেতে পারেন।
বাংলাদেশ স্ক্রাইব তৈরিতে সহযোগিতা করছে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ জানান, আইসিটি ডিভিশন ১০০ স্ক্রাইব তৈরি করেছে। এর মধ্যে অগমেডিক্স ২০ জনকে নিয়োগ দিয়েছে। ২০১৮ সালে অগমেডিক্স আরও অনেক স্ক্রাইব নিয়োগ দেবে।
আবেদনেযে যোগ্যতা লাগবে
স্নাতক পাস বা তার চেয়ে বেশি যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিরা স্ক্রাইব পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ ছাড়া অগমেডিক্সে যোগ্যতার ভিত্তিতে অন্যান্য পদও রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ সূত্রে জানা গেছে, ইংরেজি, গণিতসহ যেকোনো বিষয়ের পারদর্শীরা আবেদন করতে পারবেন। তবে ইংরেজি ভালো জানতে হবে। নিয়োগপ্রক্রিয়ায় বেশ কয়েকটি ধাপ রয়েছে। এগুলো পার হয়ে তবে চূড়ান্ত নিয়োগ পাওয়া যাবে। স্ক্রাইবরা সাধারণত বাংলাদেশে বসে যুক্তরাষ্ট্রের সেবা দেবেন বলে যেকোনো শিফটে কাজ করার মানসিকতা থাকতে হবে। এ কাজ শেখার পর তাঁর উন্নতির নানা সুযোগ আছে। সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসকের সহকারী হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা হয় বলে এ খাতে তিনি দক্ষ হয়ে উঠে দেশের চিকিৎসা খাতে দক্ষ কর্মী হয়ে উঠতে পারবেন। প্রচলিত নিয়মে সব ধরনের সুবিধাসহ বেতন-ভাতা পাবেন স্ক্রাইবরা। https://www.augmedix.com/ ওয়েবসাইট থেকে বিস্তারিত জানা যাবে।