সিএএ ও এনআরসি বাতিলের দাবিতে ভারতজুড়ে ধর্মঘট
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) বাতিলের দাবিতে ভারতের ১০টি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনের ডাকে আজ বুধবার ভারতজুড়ে ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এই ধর্মঘটে সমর্থন দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের ১৭টি বাম দলসহ কংগ্রেস, শিবসেনা, ৬০টি বামপন্থী ছাত্রসংগঠন, ১৭৫টি শ্রমিক সংগঠন। সিএএ ও বাতিলসহ ১৪ দফা দাবিতে এই ধর্মঘট চলছে।
আজ বুধবার সকাল ৬টা থেকে পশ্চিমবঙ্গেও শুরু হয়েছে এই ধর্মঘট। ধর্মঘটের কারণে রাস্তায় বেসরকারি বাস ও যানবাহন চলাচল কম দেখা গেছে। তবে সরকারি বাসের সংখ্যা বেশি দেখা গেছে। সকালে বিভিন্ন জায়গায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত করা হয়।
আজ সকালে এই ধর্মঘটের পক্ষে কলকাতার যাদবপুরের ৮-বি বাসস্ট্যান্ড থেকে মিছিল বের হয়। হাওড়া ও শিয়ালদহ শাখায় ট্রেনের নিচে বোমা এবং ট্রেন লাইনের তারে কলাপাতা ছুড়ে দেওয়ার কারণে ব্যাহত হয় ট্রেন চলাচল। বর্ধমানের জিটি রোড অবরোধ করে বামপন্থী আন্দোলনকারীরা। হুগলির উত্তরপাড়ার কোন্নগড়ে ট্রেন লাইনের তারে কলাপাতা ফেলে ট্রেনযাত্রা ব্যাহত করা হয়। উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসাতের চাঁপাডালি মোড়ে অবরোধ শুরু হয়। ফলে ব্যাহত হয় যান চলাচল। পূর্ব মেদিনীপুরে সড়ক অবরোধ করা হয়। দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার ডায়মন্ড হারবারে ট্রেন অবরোধ করা হয়। পাশকুড়ায় সড়ক অবরোধ করা হয়। জলপাইগুড়িতে বেসরকারি বাস না চললেও সরকারি বাস চলাচলে বাধা দিয়েছে ধর্মঘটের সমর্থকেরা। উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসাতে সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটেছে।
তবে কংগ্রেস এবং বাম দল তৃণমূলকে এই ধর্মঘটে শামিল হওয়ার আবেদন জানালেও তাতে সায় দেননি তৃণমূলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ধর্মঘটের ইস্যুকে সমর্থন করলেও তৃণমূল ধর্মঘট সমর্থন করে না। এই ধর্মঘটের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার কলকাতার পথে নেমেছে তৃণমূল। মন্ত্রী শোভন দেব চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মিছিল হয়েছে। মিছিলকারীরা সিএএ এবং এনআরসি বাতিলের দাবি তুললেও বিরোধিতা করেছে আজকের ধর্মঘটের।
এর আগে গত সোমবার পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সচিবালয় নবান্ন থেকে এক নির্দেশে জানানো হয়, এই ধর্মঘটে যেন রাজ্যের কোনো সরকারি কর্মী যোগ না দেন। যোগ দিলে তাঁদের এক দিনের বেতন ও ভাতা কাটা যাবে। একইভাবে ধর্মঘটের পরদিনও কেউ অনুপস্থিত থাকতে পারবেন না।
ধর্মঘট নিয়ে সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলেন, এবার প্রমাণ হয়ে গেল তৃণমূল কাদের স্বার্থ সফল করছে। মুখে এনআরসি, সিএএর বিরুদ্ধে বললেও তারা যে বিজেপির সঙ্গে আছে, তা প্রমাণ হয়ে গেল। তাদের তো এই সিএএ ও এনআরসি ইস্যুতে এই ধর্মঘটে শামিল হওয়া উচিত ছিল।