পিআরসি নিয়ে অরুণাচল উত্তাল
আসামে এনআরসির (জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন) পর পাশের রাজ্য অরুণাচল প্রদেশে শুরু হওয়া পিআরসি (পারমানেন্ট রেসিডেন্সিয়াল সার্টিফিকেট) নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত একজন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন অনেকে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে জারি করা হয়েছে কারফিউ। সেনাবাহিনী টহল দিচ্ছে রাজধানী ইটানগরের রাস্তায়। বন্ধ হয়ে গেছে ইন্টারনেট সেবা।
জন্মসূত্রে ভূমিপুত্র না হলেও দীর্ঘদিন ধরে অরুণাচলের স্থায়ী বাসিন্দা উপজাতিদের স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা দিতে চেয়েছিল পেমা খান্ডুর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার। রাজ্য বিধানসভায় নতুন বিল এনে অ-অরুণাচলিজদের জন্য এই বিশেষ সুবিধা দিতে গিয়েই বাধে বিপত্তি।
অরুণাচলের বিভিন্ন সংগঠন হরতালের ডাক দেয়। গতকাল শনিবার সকালে সহিংস হয়ে ওঠে আন্দোলন। শুরু হয় অগ্নিসংযোগ। শতাধিক গাড়ি সেই ক্ষোভের আগুনে পুড়ে যায়। সরকারি হিসাবেই আগুনে পুড়েছে ১৫০ কোটি টাকার সম্পত্তি।
অরুণাচল প্রদেশে বিশেষ অধিকার ভোগ করেন সেখানকার স্থানীয় উপজাতিরা। তাঁদের পাশাপাশি রয়েছেন অন্য উপজাতিরাও। গোর্খা, সাঁওতাল প্রভৃতি উপজাতিদেরও সুবিধা দিতে নতুন আইন করতে চেয়েছে অরুণাচল সরকার।
কিন্তু আন্দোলনকারীদের দাবি, বহিরাগতদের পিআরসি দেওয়া চলবে না। অরুণাচল প্রদেশ ছাত্র সংস্থা থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংগঠনের ডাকা আন্দোলনে অশান্ত হয়ে ওঠে ইটানগর।
বন্ধ হয়ে যায় ইটানগর আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব। বলিউডের সতীশ কৌশিক, রনি লাহিড়ীরা হোটেলেই বন্দী হয়ে থাকেন। ব্যাপক ভাঙচুর করা হয় চলচ্চিত্র উৎসবের স্থানে।
পরিস্থিতি জটিল আকার নেওয়ায় গতকাল দুপুরেই অ-অরুণাচলিজদের পিআরসি দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডু। তিনি নিজেই সামাজিক মাধ্যমে বলেন, রাজ্যবাসীর আবেগকে মর্যাদা দিয়ে পিআরসির বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত রাজ্য বিধানসভার চলতি অধিবেশনে নেওয়া হবে না।
এই অবস্থায় রাজ্যবাসীকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানান মুখ্যমন্ত্রী। দিল্লি থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংও একই আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু পরিস্থিতি এখনো থমথমে।