অক্সফোর্ড স্টুডেন্ট ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের আনিশা
যুক্তরাজ্যের বিশ্বখ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন অক্সফোর্ড স্টুডেন্ট ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের মেয়ে আনিশা ফারুক। বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত পর্বের ভোটাভুটিতে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৫২৯ ভোট পেয়ে স্বনামধন্য ওই সংগঠনটির শীর্ষ পদে বিজয়ী হন তিনি। আনিশা ২০১৯-২০ মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
অক্সফোর্ড স্টুডেন্ট ইউনিয়নের ইতিহাসে আনিশা প্রথম কোনো বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রেসিডেন্ট। আনিশার বাবা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর ফারুক আহমদ। তাঁদের বাড়ি বাংলাদেশের ভোলা জেলার চর ফ্যাশন উপজেলায়। আনিশা অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিষয়ে স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় নানা কারণে বিশ্বে স্বনামধন্য। বিশ্বে যুগান্তকারী অবদানের শীর্ষ স্বীকৃতি নোবেল বিজয়ীদের ২৮ জন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। এটিকে বিশ্বের দ্বিতীয় প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে মনে করা হয়।
আনিশা ফারুক অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় শাখা লেবার ক্লাবের (লেবার পার্টির আদর্শে বিশ্বাসী শিক্ষার্থীদের সংগঠন) কো-চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। স্টুডেন্টস ইউনিয়নের স্ক্রুটিনি কমিটি মেম্বার ছিলেন। ডিবেট সোসাইটি অক্সফোর্ড ইউনিয়নের স্ট্যান্ডিং কমিটিতে কাজ করেছেন। পাশাপাশি স্থানীয় কাউন্সিলগুলোর সঙ্গে নানা নীতি প্রণয়নে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের সরাসরি বিতর্কে আনিশা ফারুক বলেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে তিনিই অন্যান্য প্রার্থীর তুলনায় বেশি যোগ্যতাসম্পন্ন। বেশ আত্মবিশ্বাস নিয়ে তিনি বলেন, তাঁর চাইতে ভালো কোনো প্রার্থী থাকলে তিনি নিজে আর প্রার্থীই হতেন না।
প্রেসিডেন্ট এবং চারজন ভাইস প্রেসিডেন্ট নিয়ে স্টুডেন্ট ইউনিয়নের সাব্বাটিকেল টিম বা শীর্ষ কমিটি। এরপর আছে ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব স্টুডেন্টস (এনইউএস) ডেলিগেটস এবং স্টুডেন্ট ট্রাস্টি। সব কমিটিতেই আনিশার নেতৃত্বাধীন গ্রুপ অক্সফোর্ড ইমপ্যাক্টের প্রার্থীরা ভালো ফল করেন। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা একটি চ্যারিটি সংগঠনকেও ভোটের মাধ্যমে বাছাই করেন, যার জন্য তাঁরা কাজ করবেন।
অক্সফোর্ড স্টুডেন্ট ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি প্রণয়নে শিক্ষার্থীদের পক্ষে ভূমিকা রাখে। জাতীয় উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম নীতিবিষয়ক বিতর্কেও এই সংগঠন সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
প্রসঙ্গত, অক্সফোর্ড স্টুডেন্ট ইউনিয়ন এবং অক্সফোর্ড ইউনিয়ন দুটি ভিন্ন সংগঠন। অক্সফোর্ড ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়টির একটি ডিবেটিং সোসাইটি, যারা বৈশ্বিক নানা বিষয়ে বিতর্কের আয়োজন করে। আর অক্সফোর্ড স্টুডেন্ট ইউনিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে।