মঙ্গলবার উত্তর-পূর্ব ভারতের ৮ রাজ্যে ধর্মঘট
বাংলাদেশি হিন্দু অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব দিতে আইন সংশোধনীর চেষ্টার প্রতিবাদে আগামী পরশু মঙ্গলবার উত্তর–পূর্ব ভারতে ১১ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিল উত্তর–পূর্বাঞ্চলীয় ছাত্র সংস্থা (নেমো)। এর পাশাপাশি আসামের বুদ্ধিজীবীরা ডাক দিয়েছেন ‘আসাম বাঁচাও’ আন্দোলনেরও। সেই আন্দোলনকে পুরোপুরি সমর্থন জানিয়েছে আসামের প্রদেশ কংগ্রেস।
আসামের শিলচরে গত শুক্রবার ভোট প্রচারে এসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ২০১৬ সংসদে পাস করানো হবে। আর এতেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে আসামের রাজনীতি।
যৌথ সংসদীয় কমিটির বিবেচনাধীন বিলটিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে অনুপ্রবেশকারী হিন্দু, খ্রিষ্টান, জৈন, শিখ ও বৌদ্ধদের ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। মুসলিমদের অবশ্য বাদ রাখা হয়েছে।
বহুদিন ধরেই বিলটির প্রতিবাদে আসামসহ গোটা উত্তর–পূর্বাঞ্চলেই সমালোচনার ঝড় বইছিল। অসমিয়াদের আশঙ্কা, বিলটি পাস হলে তাঁদের কৃষ্টি-সংস্কৃতি বিদেশিদের হাতে লুণ্ঠিত হবে। সকাশ হবে অসমিয়া জাতির।
মোদির ঘোষণার পর সেই ক্ষোভ আরও বেড়ে যায়। উত্তর–পূর্বাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ছাত্র সংস্থা আসুর সঙ্গে উত্তর–পূর্বাঞ্চলের বাকি ছাত্র সংস্থা ও অন্যান্য ছাত্রসংগঠন মিলে ৮ জানুয়ারি ভোর পাঁচটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত ১১ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে।
নেসোর ব্যানারে এই ধর্মঘট পালনের পাশাপাশি আগামীকাল সোমবার ‘কালা দিবস’ও পালন করা হবে। জানিয়েছেন আসুর উপদেষ্টা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য। আজ রোববার সকালে সাংবাদিকদের সমুজ্জ্বল জানান, উত্তর–পূর্ব ভারতের খিলঞ্জিয়ারা (ভূমিপুত্র) কোনো অবস্থাতেই এই নাগরিকত্ব সংশোধনী চেষ্টা মানবে না। তাই ১০ বছর পর নেসো ফের ধর্মঘটের পথে হাঁটতে বাধ্য হলো বলেও দাবি করেন তিনি।
নেসোর পাশাপাশি অসমিয়া সুশীল সমাজও ‘আসাম বাঁচাও’ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। লাগাতর আন্দোলন ও জনমত তৈরিই হবে এই আন্দোলনের লক্ষ্য।
এই কর্মসূচিকে সমর্থন জানিয়েছে আসাম প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি রিপুন বরা। তিনি আজ সকালে প্রথম আলোকে মুঠো ফোনে বলেন, ‘আসাম বাঁচাও আন্দোলনের প্রতি আমাদের সমর্থন থাকছেই। সেই সঙ্গে সোমবার প্রদেশ কংগ্রেস ধিক্কার দিবস পালন করবে।’
অন্যদিকে, বিজেপির তরফে নাগরিকত্ব ইস্যুতে পাল্টা অভিযোগ করা হয় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। প্রদেশ বিজেপির মুখপাত্র জয়ন্ত মল্ল বড়ুয়া বলেন, ‘বিজেপি আসাম সমস্যার স্থায়ী সমাধান চায়। কিন্তু কংগ্রেস রাজনৈতিক ফায়দা লাভের জন্য জল ঘোলা করছে।’