ভারতে হাজারো জনপ্রতিনিধি ফৌজদারি মামলার আসামি
১২৫ কোটি মানুষের দেশ ভারতে সাংসদ ও বিধায়ক ৪ হাজার ৮৫৬ জন। এর মধ্যে লোকসভা ও রাজ্যসভায় সাংসদ রয়েছেন ৭৭০ জন। আর ভারতের ৩৬টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিধানসভায় বিধায়ক রয়েছেন ৪ হাজার ৮৬ জন। এই জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে অন্তত ১ হাজার ৪২ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারি অপরাধের মামলা। এর মধ্যে শীর্ষে রয়েছেন বিজেপির জনপ্রতিনিধিরা।
যেসব বিধায়ক ও সাংসদদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও ফৌজদারি মামলা রয়েছে, সম্প্রতি তাঁদের একটি তালিকা চেয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। এ লক্ষ্যে দেশের সব হাইকোর্ট ও বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্য সচিবদের কাছে এই তালিকা পেশ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে কেন্দ্রের দাখিল করা হলফনামা (অ্যাফিডেভিট) অনুযায়ী ওই সব মামলা বিশেষ আদালতে পাঠানো হয়েছে কি না, সে বিষয়েও জানতে চান সুপ্রিম কোর্ট।
তবে এর আগে কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিল, যেসব বিধায়ক ও সাংসদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রয়েছে, সেই মামলাগুলো শুনানির জন্য বিশেষ আদালত গঠন করা হবে। গত মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়, রাজধানী নয়াদিল্লিসহ ১১টি রাজ্যে বিধায়ক ও সাংসদদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ১ হাজার ২৩৩টি মামলা ১২টি বিশেষ ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ১৩৬টি মামলার শুনানি হয়ে গেছে। বাকি রয়েছে ওই ১১টি রাজ্যে ১ হাজার ৯৭টি মামলার শুনানি। এর মধ্যে বিহারে ২৪৯টি ও কেরালায় ২৩৩টি মামলা রয়েছে। মামলার দিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে বিহার।
ভারতের অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্রেটিক রিফর্মস বা এডিআর এবং ভারতের ন্যাশনাল ইলেকশন ওয়াচের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে ৬৪ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে অপহরণের মামলা। শীর্ষে রয়েছেন উত্তর প্রদেশ ও বিহারের জনপ্রতিনিধিরা। এই দুই রাজ্যে ৯ জন করে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ঝুলছে অপহরণের মামলা। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে মহারাষ্ট্র। এখানে ৮ জন প্রতিনিধির বিরুদ্ধে ঝুলছে এই মামলা।
ভারতের নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিদের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দেওয়া হলফনামা পর্যালোচনা করে এই সমীক্ষা প্রতিবেদন তৈরি করে। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, এই ৬৪ জন সাংসদ-বিধায়কদের মধ্যে বিজেপির ১৬ জন, কংগ্রেসের ৬ জন, লালু প্রসাদের আরজেডির ৬ জন ও জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) ৫ জন। তাঁদের মধ্যে লোকসভার ৫ জন ও রাজ্যসভার ৩ জন সাংসদের বিরুদ্ধে রয়েছে অপহরণ মামলা।
এর আগে প্রকাশিত আরেকটি সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, নারী নির্যাতন ও ধর্ষণে অভিযুক্ত জনপ্রতিনিধিদের সংখ্যা ছিল ৪৮ জন।