আনন্দ-উত্তেজনায় দিন কেটে যাচ্ছে
>নন্দিত অভিনয়শিল্পী, পরিচালক ও চিত্রশিল্পী আফজাল হোসেনের জন্মদিন ছিল গতকাল। করোনাকালে কেমন কেটেছে জন্মদিন, তা জানতে গতকাল রোববার দুপুরে প্রথম আলো কথা বলে বরেণ্য এই ব্যক্তিত্বের সঙ্গে।
শুভ জন্মদিন
ধন্যবাদ।
ফেসবুকে দেখলাম সবাই শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। করোনাকালের এই জন্মদিন কেমন কাটছে?
সকালে একবার ফেসবুকে ঢুঁ মেরে দেখা হয়েছে। অনেকেই প্রিয় ভেবে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আবার দিন শেষে দেখব। জন্মদিন নিয়ে নিজে বিশেষ করে ভাবা হয় না। কাছের মানুষ যাঁরা, তাঁদের ভালোবাসা, শুভেচ্ছায় দিনটি বিশেষ হয়ে ওঠে। সারা দিন পর মনে হয় দিনটি অন্য রকম কাটল।
আপনার নাহয় জন্মদিন উদ্যাপনে আগ্রহ নেই। কিন্তু জন্মদিন উদ্যাপনের এই সংস্কৃতিটা কীভাবে দেখেন?
জীবনে আনন্দের দরকার আছে। এমনি এমনি তো আনন্দ হয় না, উদ্যাপনও সম্ভব নয়। বিভিন্ন দিবস—যেমন বাবা দিবস, মা দিবস, বন্ধু দিবস বা এই যে জন্মদিন—সবই একেকটা উপলক্ষ; যা নিয়মিত জীবনকে একটুখানি আলাদা করে অনুভব করার সুযোগ এনে দেয়। সম্পর্কগুলো বিশেষ মনোযোগ পায়। একঘেয়েমি কাটে, জীবন পায় আলাদা স্বাদ।
করোনার কারণে সবাই সংকট সময় পার করছি। আপনার সময়টা কাটছে কীভাবে?
একদমই ঘর থেকে বের হচ্ছি না। সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন, আটকা পড়ে থাকার একটা বেদনা তো আছেই। সুস্থ থাকা এবং রাখার জন্য সে বেদনা তো মানতে হবে। সময় কেটে যায়। বের হওয়া নেই, তাই ঠান্ডা মাথায় অনেক কিছু করা যায়। পড়ি, লিখি, ছবি আঁকি। বেছে বেছে সিনেমা দেখি। প্রচুর তথ্যচিত্র দেখা হয়েছে। বন্ধুদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে অনলাইন আড্ডা হয়। নতুন একটি মঞ্চনাটকের মহড়া হয় অনলাইনে। পরিবারে মা আছেন, আছে স্ত্রী, পুত্র। একসঙ্গে ছিলাম, এখনকার একসঙ্গে থাকাটা আগেকার মতো নয়। সম্পূর্ণ নতুন এক অনুভব। সময়, দিন কেটে যায় নিত্যনতুন অনুভবে।
করোনা একদিন কেটে যাবে। এর মধ্যে অনেকে নতুন পরিকল্পনা করছেন। আপনার নিজের কোনো নতুন পরিকল্পনা আছে?
ছবি আঁকছি। প্রদর্শনী করব আশা আছে। অনেক বছর মঞ্চ থেকে দূরে ছিলাম। তা নিয়ে মনে কষ্ট ছিল। আকাঙ্ক্ষা ছিল মঞ্চে ফিরব আবার। আনন্দের কথা, ফেরা হচ্ছে। বন্দিদশা কাটলে নাটকটি মঞ্চে আসবে। নাটকের নাম ‘পেন্ডুলাম’। মাসুম রেজার লেখা। নাটকের নির্দেশক নাসির উদ্দীন ইউসুফ। ঢাকা থিয়েটার ও দেশ নাটক—দুটি দলের মিলিত প্রযোজনা। পুরো বিষয়টি নিয়ে আনন্দ–উত্তেজনায় দিন কেটে যাচ্ছে।
এই নাটকে কতজন অভিনয়শিল্পী থাকবেন
মাত্র তিনজন অভিনয়শিল্পী। ঢাকা থিয়েটার থেকে আমি, আর দেশ নাটক থেকে নাজনীন হাসান চুমকি ও কামাল।
অনলাইন রিহার্সাল কেমন হচ্ছে?
এখন পর্যন্ত তো উপভোগই করছি। প্রথম দিকে অনলাইন রিহার্সাল হলে ভালো হয় বলে মনে হচ্ছে। তবে পড়া পর্ব শেষ হলে তখন সামনাসামনি হওয়া জরুরি। এক মাস ধরে আমরা পড়ছি, সবাই সবার মুখোমুখি। অন্যদিকে মনোযোগ যাওয়ার উপায়, সুযোগ কোনোটাই নেই। এতটা অবিচ্ছিন্ন মনোযোগ মহড়াকক্ষে রাখা সম্ভব হয় না বলে মনে হয়।
সাধারণত কয়েক বছর ধরে অন্য সময়ে না হলেও ঈদে আপনার নির্মাণে দর্শকের নাটক দেখার সুযোগ থাকে। করোনার কারণে তা না হওয়াতে কোনো মনঃকষ্ট হচ্ছে কি?
মানুষ যে কাজ করতে ভালোবাসে, সে কাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকাটা যাতনার। আমরা যে কাজটি করি, তা পেশা এবং একই সঙ্গে আত্মার আনন্দেরও বিষয়। আশা আছে, ভবিষ্যতে নতুন অনুভব, উপলব্ধি নিয়ে কাজ করতে পারব।