ফিরলেন হাসান মাসুদ
চার বছর ধরে অভিনয় থেকে দূরে অভিনেতা হাসান মাসুদ। করোনাকালে তিনি ফিরলেন নিজের প্রিয় আঙিনায়। তবে কোনো নাটকের জন্য নয়। এত দিন পর ক্যামেরার সামনে দাঁড়ালেন সচেতনতামূলক একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের জন্য। আসছে পবিত্র ঈদুল আজহা। বসবে গরু-ছাগলের হাট। মানুষ যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে কোরবানির পশু কেনেন, সে জন্য বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সতর্ক করবেন হাসান মাসুদ।
বিজ্ঞাপনটি নির্মাণ করছেন সাজ্জাদ সুমন। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিজ্ঞাপনটি নির্মিত হচ্ছে। হাসান মাসুদ জানান, গত শনিবার দিনভর বিজ্ঞাপনের শুটিং করেছেন পুবাইলে। তাঁর সহশিল্পী ছিলেন শতাব্দী ওয়াদুদ। ‘সরকারি একটি কাজ বলেই বিজ্ঞাপনটি করছি। তা ছাড়া কাজটি জনসচেতনতামূলক। এটি করে একধরনের তৃপ্তি পেয়েছি।’
অভিনয়ে কেন এ বিরতি? তিনি বলেন, ‘মনের মতো চরিত্র পাচ্ছিলাম না। বয়স এখন ৫৮ চলছে। কেউ এখন কেন্দ্রীয় চরিত্র দেবেন? আর আমি গুরুত্বহীন চরিত্র করতে চাই না। এসব কারণে দীর্ঘদিন কাজ করা হয়নি।’ কোনো অভিমান থেকে কি দূরে সরে থাকা? স্বীকার করলেন না হাসান মাসুদ। বললেন, ‘কারও প্রতি আমার ক্ষোভ নেই। যখন দেখলাম মনের মতো চরিত্র পাচ্ছি না, মনে হলো অভিনয়টা বন্ধ রাখি।’
অভিনয় ছাড়লেও দর্শকেরা তাঁকে প্রশ্ন করে করে ক্লান্ত করেছেন। কেন তাঁকে নাটকে পাওয়া যায় না। ভক্তদের এমন প্রশ্নের জবাবে ভণিতা ছাড়াই হাসান মাসুদ বলেছেন, ‘অভিনয় ছেড়ে দিয়েছি।’ অভিনয় ছিল পেশা। এটা ছেড়ে দিয়ে কী করছেন তিনি? ‘আমার স্ত্রীর একটা স্কুল আছে। আমি স্কুলটির সভাপতি। বলতে পারেন এটাকে ঘিরেই সময় কাটছে’, বলেন তিনি। বিজ্ঞাপনে ফিরলেন, আগামী দিনে নাটকেও কি দেখা যাবে? হাসান মাসুদ জানান, কাজের প্রস্তাব পেলে ‘না’ করবেন না।
ইতিমধ্যে গল্প ও চরিত্র পছন্দ হওয়ায় কলকাতার একটি সিনেমায় অভিনয় করতে রাজি হয়েছেন হাসান মাসুদ। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোটগল্প ‘ক্যানভাসার’ অবলম্বনে সেটি নির্মিত হবে। সিনেমার নাম রাখা হয়েছে ‘ফেরিওয়ালা’। পরিচালনা করবেন দেবরাজ দে। কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করবেন হাসান মাসুদ। ‘একজন ক্যানভাসার ট্রেনে পণ্য বিক্রি করে। তাকে নিয়ে ছবির গল্প। ফেব্রুয়ারিতে চুক্তিবদ্ধ হই সিনেমায়। মার্চে শিডিউল দিয়েছিলাম। করোনার কারণে শুটিং করা সম্ভব হয়নি।’
করোনার দিনগুলো হাসান মাসুদের কেটেছে ঢাকায়। তাঁর ভাষায়, ‘হাড়ভাঙা বিশ্রাম করে করে কেটেছে।’ অসংখ্য দর্শকপ্রিয় টিভি নাটকে অভিনয় করেছেন এই অভিনেতা। ২০০৪ সাল থেকে ২০১৬ পর্যন্ত একটানা কাজ করেছেন তিনি। নিজের প্রিয় কাজের কথা বলতে গিয়ে বলেন, প্রথম সিনেমা ‘ব্যাচেলর’ তাঁর প্রিয় কাজ। প্রথম সিরিয়াল ‘৬৯’ও প্রিয়। এখনো সুযোগ পেলে বসে বসে দেখেন। একক নাটকের মধ্যে ‘ট্যাক্সি ড্রাইভার’ ও ‘বাস ড্রাইভার’ বেশি প্রিয়।