গত বছর ঈদের সময় সারা দেশে মৌসুমি হলসহ প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা ছিল তিন শর ঘরে। এবার কমেছে।
বর্তমান প্রদর্শক সমিতির হিসাবে ১৭৪টি হল সচল আছে। ঈদ সামনে রেখে বন্ধ থাকা হলগুলোর মধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জের গুলশান, পঞ্চগড়ের ছায়াছন্দ, নীলফামারীর নাগেশ্বরী ও জিকো এবং ঢাকার সোনারগাঁয়ের হিরা, চট্টগ্রামের পটিয়ার সবুজ সিনেমা, সিরাজগঞ্জের বিউটি, মুক্তিসহ দেশের ৭০ টির মতো বন্ধ হল চালু হতে পারে। তাহলে ঈদে মোট হলসংখ্যা হবে আড়াই শর কাছাকাছি। তাতে গতবারের চেয়ে পঞ্চাশের বেশি প্রেক্ষাগৃহের সংখ্যা কমে যাবে। বিষয়টিকে চলচ্চিত্রের জন্য অশনিসংকেত বলে মনে করছেন প্রদর্শক সমিতির উপদেষ্টা মিয়া আলাউদ্দিন। তিনি বলেন, ‘সিনেমা না থাকার কারণে একের পর এক হল বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। গতবারও তো তাও তিন শর মতো হল ছিল। এবার তাও থাকছে না। এভাবে চললে একসময় সিনেপ্লেক্স ছাড়া সব হলই বন্ধ হবে।’
প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘এখন সিনেমার মানুষজনের আর কিছুই করার নেই। একমাত্র সরকার উদ্যোগ নিলেই আমরা হলমালিক, প্রযোজকেরা বাঁচতে পারি। তা ছাড়া বিকল্প পথই খোলা নেই।’
সাবেক প্রযোজক নেতা নাসিরউদ্দীন দিলু বলেন, ‘যে হলগুলো বেঁচে আছে, সেগুলো ভালো ছবি দিয়ে সারা বছরই বাঁচিয়ে রাখতে হবে, নইলে সেই হলগুলোর জন্যও ভয়াবহ ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে।’
পরিচালক সমিতির মহাসচিব বদিউল আলম খোকন বলেন, ‘ঈদের সময় বাড়তি ৭০টি হল খুলছে। কিন্তু আমি চাই, সেগুলো শুধু নয়, আরও বেশি হল, অন্তত ৪০০ হল যেন সারা বছর খোলা থাকে। কারণ, একজন প্রযোজক যে টাকা বিনিয়োগ করছেন, তা উঠিয়ে আনার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হলে ছবি চলা দরকার।’
বেশ আগেই আগামী ঈদকে ঘিরে বিনোদনের বিভিন্ন শাখায় তোড়জোড় শুরু হয়ে গেছে। ঈদের সময় বিনোদনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম সিনেমা মুক্তি নিয়ে দর্শকের বাড়তি আগ্রহ থাকে। চূড়ান্ত হয়ে গেছে ঈদের ছবির সংখ্যা। চলচ্চিত্রপাড়ার হিসাবমতে, আগামী ঈদুল ফিতরে পাঁচটি ছবি মুক্তি পাবে। ছবিগুলো হলো ‘পাসওয়ার্ড’, ‘নোলক’, ‘প্রেমচোর’, ‘গোয়েন্দাগিরি’ ও ‘আবার বসন্ত’।
উত্তম আকাশ পরিচালিত ‘প্রেমচোর’ ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান শাপলা মিডিয়া থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, প্রেমচোর ছবিটি ৫০ থেকে ৮০টি হলে মুক্তি দেওয়া যাবে। তুরস্কে গানের শুটিংয়ে যাওয়ার আগে শাকিব খান জানিয়েছিলেন তাঁর নিজের প্রযোজিত ও মালেক আফসারী পরিচালিত ছবি ‘পাসওয়ার্ড’ প্রায় দেড় শ হলে মুক্তি পেতে পারে। তবে শাকিব খান অভিনীত ছবি ‘নোলক’ প্রথম সপ্তাহে ৫০টি হলে মুক্তির পরিকল্পনা করেছে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান বি হ্যাপী। অনন্য মামুন পরিচালিত ‘আবার বসন্ত’ ও নাসিম সাহনিক পরিচালিত ‘গোয়েন্দাগিরি’ ছবি দুটির মুক্তি বলাকা, বসুন্ধরা সিনেপ্লেক্স, সিনেপ্লেক্স সীমান্ত সম্ভার, যমুনা ব্লকবাস্টার-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। আবার বসন্ত ছবির পরিচালক জানান, প্রথম সপ্তাহে পাঁচ-ছয়টি ভালো হলে মুক্তি দিতে চান।