চলে গেলেন অভিনয়শিল্পী সালেহ আহমেদ
ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন অভিনয়শিল্পী সালেহ আহমেদ। আজ বুধবার বেলা আড়াইটার দিকে অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। প্রথম আলোকে সালেহ আহমেদের মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তাঁর স্ত্রী মুসলিমা আহমেদ।
কয়েক বছর ধরেই সালেহ আহমেদ বার্ধক্যজনিত নানান রোগে ভুগছিলেন। ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়মিত চিকিৎসাসেবা নিচ্ছিলেন তিনি। ৮৩ বছর বয়সী এই অভিনেতার শারীরিক অবস্থা দিনের পর দিন অবনতি ঘটছিল।
আজ বুধবার বিকেলে স্ত্রী মুসলিমা আহমেদ বলেন, ‘সাত বছর আগে তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছিল। অসুস্থতা তখন থেকে তাঁর পিছু ছাড়েনি। কিছুদিন ভালো থাকেন, আবার খারাপ হয়ে যায়। এর পাশাপাশি ফুসফুসে প্রদাহ, কিডনির সমস্যাসহ আরও নানা রোগে আক্রান্ত হন তিনি। কিছুদিন ধরে তো অসুস্থ হয়ে পুরোপুরি শয্যাশায়ী। কথা বলার শক্তি হারিয়ে ফেলেন। এমনকি কোনো মানুষকে চিনতেও পারতেন না। তিন দিন আগে অসুস্থতা বাড়লে দ্রুত তাঁকে অ্যাপেলো হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিন দিন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন থাকার পর আজ মারা যান তিনি।’
সালেহ আহমেদের স্ত্রী জানান, অ্যাপোলো হাসপাতাল থেকে মরদেহ ঢাকার উত্তরাখান এলাকার বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে। বাদ মাগরিব জানাজা শেষে দাফন করা হবে। ২০১১ সালে স্ট্রোকের পর থেকে তাঁর চিকিৎসার খরচ বহন করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন এই অভিনেতার পরিবারের সদস্যরা। এ বছরের জানুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই অভিনেতার পাশে দাঁড়ান, চিকিৎসার জন্য ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দেন।
সালেহ আহমেদের জন্ম বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের চাকরির পাশাপাশি ময়মনসিংহে অমরাবতী নাটমঞ্চের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ১৯৯১ সালে চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পর হুমায়ূন আহমেদের নাটকে ও চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয় শুরু করেন। ধারাবাহিক ‘অয়োময়’ নাটক এবং ‘আগুনের পরশমণি’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে অভিনয় জগতে তাঁর পদচারণ শুরু। এরপর অসংখ্য নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। পেয়েছেন স্বাধীনতা পদক।
মৃত্যুকালে সালেহ আহমেদ স্ত্রী, দুই মেয়ে, এক ছেলে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।