সাত মাস পর ফিরছেন ময়না
ভারতের বাংলা চ্যানেলের অন্যতম জনপ্রিয় দম্পতি সম্রাট মুখোপাধ্যায় আর ময়না মুখোপাধ্যায়ের বিয়েটা হয়েছিল ২০০৩ সালে। ১৫ বছর পর তাঁরা বাবা-মা হয়েছেন। দুই যমজ ছেলের বাবা-মা। গত বছর ৪ নভেম্বর সকালে সংবাদমাধ্যমকে এই খুশির খবরটি জানিয়েছিলেন সম্রাট। যেহেতু বিয়ের অনেক বছর পর মা হচ্ছেন, তাই অভিনয় থেকে ছুটি নিয়েছিলেন ময়না। এরপর পেরিয়ে গেছে সাত মাস। আবার ভারতের বাংলা সিরিয়ালে দেখা যাবে ময়নাকে। জানা গেছে, জি বাংলার নতুন সিরিয়াল ‘ত্রিনয়নী’তে অভিনয় করবেন। এই সিরিয়ালে তিনি মা। নায়কের ভূমিকায় আছেন গৌরব রায়চৌধুরী আর নায়িকা শ্রুতি দাস। আপাতত সিরিয়ালটির প্রমো শুট হয়েছে, পুরোপুরি শুটিং শুরু হবে আগামী মার্চ মাসে। ময়নার মতে, ‘এই পুরোটা সময় তিনি ছিলেন মাতৃত্বকালীন ছুটিতে।’
সম্রাট আর ময়না তাঁদের যমজ সন্তানের নাম রেখেছেন সাগর ও সমুদ্র। সন্তানদের ছবি এখনো সংবাদমাধ্যম কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেননি তাঁরা। ময়না বললেন, ‘আমরা সচেতনভাবেই কাজটা করেছি। আমরা চাই, আরও কয়েক মাস পর নির্দিষ্ট একটি অনুষ্ঠান উপলক্ষে ওদের ছবি সামনে আসুক। এখনো ওরা অনেক ছোট।’
দুই ছেলের বয়স তিন মাস। এখনই কাজে ফেরার সাহস করছেন। ছেলেদের দেখাশোনা কে করবেন? ময়না বললেন, ‘মাকে পাশে পেয়েছি। তাই এত তাড়াতাড়ি কাজে ফেরার সাহস করছি। নাতিদের দেখাশোনার মূল দায়িত্ব তিনিই নিয়েছেন।’
ময়না ও সম্রাট দুজনই ছোট পর্দার পরিচিত মুখ। বিভিন্ন সিরিয়ালে নেতিবাচক চরিত্রে সম্রাটের অভিনয় দর্শক বেশ পছন্দ করেছেন। ময়না জানান, তিনি ছোট পর্দার সঙ্গে যুক্ত হন ১৪ বছর বয়সে। প্রথম অভিনয় করেছেন দূরদর্শনের সিরিয়ালে, নাম ‘রামকৃষ্ণ’। তবে দর্শক তাঁকে পছন্দ করেছেন ‘মহাপ্রভু’ সিরিয়ালের অভিনয় দেখে। এর মধ্যে অভিনয় করেছেন অসংখ্য সিরিয়ালে। স্টার জলসার ‘মেম বউ’ সিরিয়ালে তিনি ছিলেন ‘লাবণী’। এই চরিত্রটিও খুব আলোচিত হয়। সর্বশেষ তিনি অভিনয় করেছেন স্টার জলসার ‘অর্ধাঙ্গিনী’ সিরিয়ালে।
এক সাক্ষাৎকারে ময়না বলেছেন, ‘আমার জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই মনে হতো, আমি এই প্রফেশনে কিছু করতে চাই। আমার ভাগ্য ভালো, এই প্রফেশনেই আমি নিজের স্বপ্নগুলো পূরণ করতে পেরেছি। আগে আমরা ৭ থেকে ১০ ঘণ্টা শুটিং করেছি। কিন্তু এখন বলতে গেলে প্রায় ২৪ ঘণ্টাই কাজ করতে হচ্ছে।’ আর বড় পর্দার চেয়ে ছোট পর্দার কাজ ময়নার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বললেন, ‘বছর আটেক আগে ফিল্মের একটা বিশাল ক্রেজ তৈরি হয়েছিল। তার পর ছোট পর্দার প্রতি দর্শকদের অন্য রকম আকর্ষণ তৈরি হয়েছে। হয়তো টাকা খরচ করে হলে গিয়ে দেখতে হচ্ছে না দর্শককে, বাড়িতে বসেই দেখতে পাচ্ছেন তাঁরা। আবার হলে গিয়েও বহু মানুষ নিরাশ হয়ে ফিরে আসছেন। ডেইলি সোপের ক্ষেত্রে প্রযোজকেরা গল্পগুলো এভাবেই তৈরি করেন, যাতে দর্শক তাঁদের প্রতিদিনের জীবনের সঙ্গে তা মেলাতে পারেন। তার জন্য সিরিয়ালের আর্টিস্টদের প্রতি ক্রেজটা অনেক বেশি থাকে। আমরা যখন কলকাতার বাইরে শো করতে যাই, তখন সেটা বেশ বুঝি।’
ময়না আরও জানালেন, ছোট পর্দায় কাজ করার পেছনে তাঁকে সাহস জুগিয়েছেন বাবা-মা। বাবা এখন নেই। তিনি গান গাইতেন। মা গান গাইতেন আকাশবাণীতে। বাবা গান লিখে সুর করতেন, আর সেই গান গাইতেন মা। বাড়িতে গান-বাজনার পরিবেশ ছিল। সেখান থেকেই নাকি তাঁর মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়।