শ্রদ্ধা না ভয়?
বিশেষ দিনগুলোর জন্য অপেক্ষা করে থাকে বলিউড। প্রায় সব নির্মাতাই চান ছুটির দিনে ছবি মুক্তি দিতে। ‘চিট ইন্ডিয়া’ ছবির নির্মাতাও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, এবার প্রজাতন্ত্র দিবস উপলক্ষে ২৫ জানুয়ারি এমরান হাশমি অভিনীত ছবিটি রিলিজ দেবেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে একটি নয়, দুটি বাধা। প্রথমটি হলো কঙ্গনা রনৌত অভিনীত ‘মণিকর্ণিকা: দ্য কুইন অব ঝাঁসি’ ছবিটি। অন্য বাধা শিবসেনা। শিবসেনাপ্রধান প্রয়াত বালা সাহেব থ্যাকরের জীবনের ওপর নির্মিত হয়েছে ‘থ্যাকরে’ ছবিটি। প্রযোজনা করছেন শিবসেনা নেতা ও সঞ্জয় রাউত। একই দিনে তিনটি ছবির সংঘর্ষ হতে চলেছিল। সেই সংঘর্ষ এড়ালেন ‘চিট ইন্ডিয়া’ ছবির নির্মাতারা। ছবির মুক্তির তারিখ এগিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। এখন প্রশ্ন, শিবসেনার ভয়ে, না বালাসাহেব থ্যাকরের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এই পরিবর্তন।
গত শুক্রবার মুম্বাইয়ের এক পাঁচ তারকা হোটেলে ‘চিট ইন্ডিয়া’ ছবির প্রযোজক ভূষণ কুমার আর অভিনেতা এমরান হাশমি আনুষ্ঠানিকভাবে ছবি মুক্তির নতুন তারিখ ঘোষণা করেন। একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শিবসেনা নেতা সঞ্জয় রাউত এবং যুবনেতা আদিত্য থ্যাকরে। ‘চিট ইন্ডিয়া’ ছবির মুক্তির দিন অবশ্য পেছানো হয়নি, এগিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। ছবির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টি-সিরিজের মালিক ভূষণ কুমার বলেন, ‘সাধারণত ছবি রিলিজের তারিখ সবাই পিছিয়ে দেয়। কিন্তু আমরা এগিয়ে নিয়ে এসেছি। কারণ ছবির কনটেন্টের ওপর আমাদের আস্থা আছে। ছবি মুক্তির তারিখ পেছালে আমরা প্রচারণার জন্য আরও সুযোগ এবং সময় পেতাম। কিন্তু আমাদের তার প্রয়োজন নেই।’
এই তারিখ পরিবর্তনের পেছনে শিবসেনার হাত আছে? রাজনৈতিক এই দলের হুমকির কারণে ভূষণ কুমার ছবির দিন এগিয়ে আনতে বাধ্য হয়েছেন? ভূষণ কুমার বলেন, ‘একদমই তা নয়। এ ব্যাপারে শিবসেনা আমাদের ওপর কোনো চাপ দেয়নি। বালাসাহেব থ্যাকরের মতো ব্যক্তিত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে আমরা ওই দিনে ছবি রিলিজ করব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। “চিট ইন্ডিয়া” ছবিটি এখন ২৫ জানুয়ারির পরিবর্তে ১৮ জানুয়ারি মুক্তি পাবে।’
এখানে উঠে আসে দুই প্রতারক নীরব মোদি আর বিজয় মাল্যর প্রসঙ্গ। এ প্রসঙ্গে এমরান হাশমি বলেন, ‘এই ছবির চিটার ছাড়া আর কারও কথা আমি এখন বলতে চাই না।’
এখন ‘মণিকর্ণিকা: দ্য কুইন অব ঝাঁসি’ ছবির সঙ্গে বালাসাহেব থ্যাকরের ওপর নির্মিত বায়োপিকের প্রতিযোগিতা হবে। এ ব্যাপারে শিবিসেনা ‘মণিকর্ণিকা: দ্য কুইন অব ঝাঁসি’ ছবির নির্মাতার সঙ্গে কথা বলেছে? সঞ্জয় রাউত বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। তাঁদের সঙ্গে আমাদের কোনো কথা হয়নি।’
যুবনেতা আদিত্য থ্যাকরে বলেন, ‘এই দুটি ছবি আমার হৃদয়ের অত্যন্ত কাছের। কারণ “থ্যাকরে” এবং “চিট ইন্ডিয়া” ছবি দুটির সঙ্গে আমি যুক্ত ছিলাম। “থ্যাকরে” ছবিটি সঞ্জয় রাউত প্রযোজনা করেছেন। আর তিনি আমার ঠাকুরদাকে (বালাসাহেব) খুব কাছ থেকে দেখেছেন। আর “চিট ইন্ডিয়া” ছবির প্রসেসের সঙ্গে আমি জড়িয়ে ছিলাম।’
সৌমিক সেন পরিচালিত ‘চিট ইন্ডিয়া’ ছবির গল্প ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থার দুর্নীতি নিয়ে। ছবির অন্যতম দুই প্রযোজক অতুল কাসবেকর এবং এমরান হাশমি।