আমার সঙ্গে আছে মোনালিসা: হৃদয় খান
নতুন বছরের শুরুতেই মুক্তি পেয়েছে ‘যদি একদিন’ সিনেমার ‘লক্ষ্মীসোনা’ গানটি। বাবা-মেয়ের আবেগ-অনুভূতি কথামালার এই গানটি দর্শক হৃদয়ে দারুণভাবে দোলা দিয়ে গেছে। আজ শনিবার বিকেল পর্যন্ত ইউটিউবে গানটি দেখা হয়েছে প্রায় সাত লাখের কাছাকাছি।
সংগীতসংশ্লিষ্ট অনেকে বলছেন, এখন পর্যন্ত হৃদয়ের সংগীতজীবনের সেরা গান এটি। এই গান তাঁকে দর্শকদের হৃদয়ে বাঁচিয়ে রাখবে বহু বছর। যাঁর গান নিয়ে এত মাতামাতি সেই শিল্পীকে বাংলাদেশে খুঁজে পাওয়া গেল না। ফোন বন্ধ। ফেসবুক মেসেঞ্জার আর ভাইবারেও নেই। শেষ পর্যন্ত তাঁকে পাওয়া গেল হোয়াটস্যঅ্যাপে। জানালেন, এখন আছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে। ফিরবেন এ মাসের মাঝামাঝি। কথা প্রসঙ্গে মুক্তি পাওয়া নতুন গান ও একেবারে তরতাজা কাজের খবর দিলেন এই গায়ক ও সংগীত পরিচালক।
‘লক্ষ্মীসোনা’ গানটির খুব প্রশংসা পাচ্ছেন...
নিউইয়র্কে বসে আমিও তেমনটাই শুনছি। অনেকে ফেসবুকে গানটি শেয়ার করছেন। গানের সঙ্গে নিজেদের মনের অনুভূতি জুড়ে দিচ্ছেন। ভালো লাগছে এই ভেবে, গানটি দর্শকহৃদয় স্পর্শ করতে পেরেছে। ‘যদি একদিন’ সিনেমার পোস্টার উন্মোচন অনুষ্ঠানের সময় গানটি মঞ্চে গাওয়া হয়। এরপর মঞ্চের গাওয়া সেই গানও ভাইরাল হয়ে যায়।
গান তৈরির সময় কি ভেবেছিলেন, এভাবে লুফে নেবে?
অনেক সাধনা করে একটা গান বানাই। গানটি তৈরির সময় শুধু এটুকু মাথায় থাকে, দর্শকের যেন ভালো লাগে। ধারণা ছিল, গানটি শ্রোতারা পছন্দ করবেন। পরিচালক মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজও বারবার বলছিলেন, এই গান সবার হৃদয় স্পর্শ করবেই। গানটি শুনে শ্রোতারা যখন প্রশংসা করেন, তখন খুব ভালো লাগে। সবচেয়ে বড় সার্থকতা এটাই।
গানটা তৈরির গল্পটা যদি বলতেন
চলচ্চিত্রের গান তৈরির সময় পরিচালক তাঁর একটা ভাবনা শেয়ার করেন। শোনার পর গানটা নিয়ে ভাবতে থাকি। আমি সাধারণত গানের সুর আগে তৈরি করি। এরপর গানের কথা লেখা হয়। একদিন সিনেমার পরিচালক রাজ ভাই (মুহাম্মাদ মোস্তফা কামাল রাজ) গল্পটা শোনালেন। এরপর সেই অবস্থার কথা নিয়ে ভাবতে লাগলাম। কেন জানি, গল্পটা শোনার পর সুরটা একবারই মাথায় চলে আসে। সুর ঠিক করার পর গানের কথা নিয়ে অলিক ভাইয়ের (এস এ হক অলিক) সঙ্গে বসি। তাঁর সঙ্গে এমনিতেই আমার দারুণ একটা বোঝাপড়া আছে। সুর শোনানোর পর এক চেষ্টাতেই তিনি গানটা লিখে ফেললেন।
কবে ফিরবেন?
মাস দুয়েক হচ্ছে এসেছি। এ মাসের মাঝামাঝি ঢাকায় ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে।
বেড়াতে যাওয়া নাকি কোনো কাজে?
আমি আসলে দুটো কারণে এসেছি। একটি বেড়ানো আর অন্যটি ...
অন্যটি কী?
আমি এখানে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বানাচ্ছি। আমার নিজের ইউটিউবে এটি প্রকাশ হবে। স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বানানোর পরিকল্পনা অনেক আগে থেকেই ছিল। শেষ পর্যন্ত কাজটা শেষ করতে পেরেছি। পুরো শুটিং নিউইয়র্কে করেছি।
দৈর্ঘ্যে কতক্ষণ এবং কী নিয়ে গল্প?
এই চলচ্চিত্রের দৈর্ঘ্য ২৫ মিনিট। একটি অন্য রকমের গল্প। চলচ্চিত্রে দেখা যাবে, এক তরুণ একটা জায়গায় আটকে থাকে। সেখান থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে নানা ঘটনা ঘটতে থাকে। এর বাইরে আর কিছু বলতে পারব না ...।
হঠাৎ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বানানোর পরিকল্পনা কেন?
ছোটবেলা থেকেই ভিডিওগ্রাফির প্রতি আমার দুর্বলতা ছিল। গান করার আগে থেকে কিন্তু ভিডিওগ্রাফি করি। তবে সেটা কখনোই পেশাদারভাবে করিনি। ক্যামেরা নিয়ে নাড়াচাড়ার অভ্যাস সব সময়ই ছিল। ভিডিও সম্পাদনা, কালার গ্রেডিংয়ের কাজও করেছি টুকটাক। যেহেতু আমার চাচা রিংকন খান ক্যামেরার মানুষ, এই অভ্যাসটা আমার মধ্যেও চলে আসে। গানটা পেশাদারভাবে করার কারণে ওটা এত দিন করা হয়নি। এখন যেহেতু একটা সুযোগ আছে এবং কাজটা জানি, তাই করছি।
কয়েকটা গানের ভিডিও বানিয়েছিলেন। সেসব কি হাত পাকানো ছিল?
সে রকম কিছুই বলতে পারেন। গানের ভিডিও বানানোর পর সাহস আরও বেড়ে যায়।
সামনে কি তবে সিনেমাও বানাবেন?
(হাসি) জানি না। আগে দেখি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র দেখে মানুষ কী বলছে। তারপর সিদ্ধান্ত নেব।
স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে পরিচিতি কেউ, নাকি একেবারে নতুন কেউ অভিনয় করেছেন?
আমি অভিনয় করেছি। এই স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রে আমার বিপরীতে আছে মোনালিসা। পাশাপাশি এখানকার অনেক অভিনয়শিল্পীও আছেন।
পরিচালনার পাশাপাশি অভিনয় কেমন ছিল?
কাজটা অনেক কঠিন। নিজে অভিনয় এবং পরিচালনার কাজ করাটা সত্যিই কঠিন। আমি সংলাপ দিচ্ছি, আবার ফ্রেমিং করতে হচ্ছে।