'রাণী রাসমণি' এ কী করলেন!
‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’ সিরিয়ালের ‘রাণী রাসমণি’ দিতিপ্রিয়া রায় এখন দর্শকদের কাছে খুব জনপ্রিয়। মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে সম্প্রতি পাঠভবনে ক্লাস ইলেভেনে ভর্তি হয়েছেন। শুটিং আর পড়াশোনার ফাঁকে তাঁকে ছুটতে হয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। জনপ্রিয়তার কারণেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অনেক অনুষ্ঠানের আয়োজক আমন্ত্রণ জানান তাঁকে। দিতিপ্রিয়া রায়ও তা বেশ উপভোগ করেন। কোনো আমন্ত্রণকেই ‘না’ বলেন না। হাতে কোনো কাজ না থাকলে অবশ্যই যান। আর এসব অনুষ্ঠানে গিয়ে অনেক সময় নানা বিড়ম্বনার মুখোমুখি হতে হয় তাঁকে।
উত্তর ২৪ পরগনার অমরাবতী ময়দানে আয়োজন করা হয়েছে ‘পাণিহাটি উৎসব ও বইমেলা’। ২০ ডিসেম্বর শুরু হয়েছে এই উৎসব, চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই অনুষ্ঠানের মঞ্চে প্রতিদিনই নানা অনুষ্ঠান হচ্ছে। তাতে অংশ নিচ্ছেন চলচ্চিত্র, টেলিভিশন আর সংগীতের জনপ্রিয় তারকারা। ২৩ ডিসেম্বর রাতে দর্শকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় দিতিপ্রিয়া রায়কে। মঞ্চে উঠে তিনি দর্শকদের সঙ্গে কথা বলেন। ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’ সিরিয়ালকে জনপ্রিয় করার জন্য দর্শকদের ধন্যবাদ জানান।
তাঁকে কাছে পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত হয় দর্শক। দিতিপ্রিয়া রায়কে গান গাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয় দর্শকসারি থেকে। এই অনুরোধ রক্ষা করতে গিয়ে বাধে বিপত্তি। রাধারমণ দত্তের ‘কলঙ্কিনী রাধা’ আর প্রচলিত লোকগান ‘পিন্দারে পলাশের বন’ গেয়ে শোনান তিনি। দুটি গানই গেয়েছেন প্রায় বেসুরো। গান গাইতে গিয়ে সুর, তাল, লয় থেকে সরে যান তিনি। মুহূর্তেই সেই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। সরগরম হয় নেটপাড়া। সমালোচনার মুখে পড়েন দিতিপ্রিয়া। শুরু হয় ট্রোল। জনপ্রিয় এই তারকার বিরুদ্ধে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একজন লিখেছেন, ‘একজন অভিনেত্রী ভালো অভিনয় করলেও তাঁকে সবকিছুতেই পারদর্শী হতে হবে, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। তিনি যখন ভালো গাইতে পারেন না, তখন তাঁর গান গাওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল?’ আরেকজন লিখেছেন, ‘এর থেকে মরাকান্নায় অনেক বেশি তাল আর সুর থাকে। মনে হয়, ফাটা বাঁশ কেউ হাতুড়ি দিয়ে পেটাচ্ছে।’
দিতিপ্রিয়ার পাশেও দাঁড়িয়েছেন কেউ কেউ। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী সংগীতশিল্পী ইমন চক্রবর্তী এসব ট্রোলকে বর্বরোচিত আক্রমণ বলে অভিহিত করেছেন। আরেকজন শুভাকাঙ্ক্ষী বলেছেন, এমন মানসিক অত্যাচারের কোনো মানে হয় না।
তবে নিন্দুকদের ধন্যবাদ জানিয়ে দিতিপ্রিয়া রায় বলেছেন, ‘এভাবে ট্রোলিং চলতে থাকলে আমি একদিন সারা ভারতে বিখ্যাত হয়ে যাব! এটা তো প্রথম নয়; এর আগেও সিরিয়ালের সংলাপ নিয়ে একাধিকবার আমাকে ট্রোল করা হয়েছে। অনেক দিন সেটা বন্ধ ছিল। আমাকে যাঁরা পছন্দ করেন না, তাঁরা একটা সুযোগ খুঁজছিলেন। এবার তা হাতে পেয়ে আবার ট্রোলিং শুরু হয়েছে।’
এর আগে জি বাংলার জনপ্রিয় সিরিয়াল ‘করুণাময়ী রাণী রাসমণি’তে দিতিপ্রিয়া রায়ের সংলাপ, ‘বাবা, তুমি এয়েচো’ আর ‘বাবা, তুমি খেয়েচো’ নিয়ে মিম ও ট্রোলে ছেয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। তা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে তখন সংবাদমাধ্যমকে দিতিপ্রিয়া রায় বলেছিলেন, তিনি আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথা ভাবছেন।