বাংলা একাডেমির নতুন মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী
৯ বছর পর নতুন মহাপরিচালক পেল বাংলা একাডেমি। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, আজ বৃহস্পতিবার থেকে আগামী তিন বছরের জন্য একাডেমির নতুন মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী।
চিঠি পেয়ে আজই কর্মস্থলে উপস্থিত হন হাবীবুল্লাহ সিরাজী। এ সময় বাংলা একাডেমির সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা তাঁকে স্বাগত জানান। এর আগে তিন মেয়াদে ৯ বছর বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন শামসুজ্জামান খান।
কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী আজ দুপুরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সহকর্মীদের সবাইকে নিয়ে বসে নতুন কর্মপরিকল্পনা ঠিক করব। তারপর শুরু হবে একাডেমিকে এগিয়ে নেওয়ার কাজ।’ একজন কবি হিসেবে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের উন্নয়নে কাজের সুযোগ পেয়ে কেমন লাগছে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘খুব ভালো লাগছে। তবে যে কাজগুলো করা প্রয়োজন সেগুলো যদি মনের মতো করে করতে পারি, তাহলে আরও ভালো লাগবে।’
কবি হাবীবুল্লাহ সিরাজী ১৯৪৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। ফরিদপুর জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক, ফরিদপুর রাজেন্দ্র কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে উচ্চশিক্ষা লাভ করেন। তাঁর কাব্যগ্রন্থ ‘দাও বৃক্ষ দাও দিন’, ‘মোমশিল্পের ক্ষয়ক্ষতি’, ‘হাওয়া কলে জোড়াগাড়ি’, ‘নোনা জলে বুনো সংসার’, ‘স্বপ্নহীনতার পক্ষে’, ‘আমার একজনই বন্ধু’, ‘পোশাক বদলের পালা’, ‘প্রেমের কবিতা’, ‘কৃষ্ণ কৃপাণ ও অন্যান্য কবিতা’, ‘সিংহদরজা’, ‘বেদনার চল্লিশ আঙুল’, ‘ম্লান, ম্রিয়মাণ নয়’, ‘বিপ্লব বসত করে ঘরে’, ‘ছিন্নভিন্ন অপরাহ্ণ’, ‘জয় বাংলা বলো রে ভাই’, ‘সারিবদ্ধ জ্যোৎস্না’, ‘সুগন্ধ ময়ূর লো’, ‘নির্বাচিত কবিতা’, ‘মুখোমুখি: তুচ্ছ’, ‘স্বনির্বাচিত প্রেমের কবিতা’, ‘হ্রী’, ‘কতো আছে জলছত্র’, ‘কতোদূর চেরাপুঞ্জি’, ‘কাদামাখা পা’, ‘ভুলের কোনো শুদ্ধ বানান নেই’, ‘একা ও করুণা’, ‘যমজ প্রণালী’, ‘আমার জ্যামিতি’, ‘পশ্চিমের গুপ্তচর’ ও ‘কবিতাসমগ্র’।
তাঁর উপন্যাস ‘কৃষ্ণপক্ষে অগ্নিকাণ্ড’, ‘পরাজয়’, অনুবাদ ‘মৌলানার মন: রুমীর কবিতা’, আত্মজৈবনিক গ্রন্থ ‘আমার কুমার’, গদ্যগ্রন্থ ‘দ্বিতীয় পাঠ’, ‘মিশ্রমিল’, ‘গদ্যের গন্ধগোকুল’, শিশুসাহিত্য ‘ইল্লিবিল্লি’, ‘নাইপাই’, ‘রাজা হটপট’, ‘ফুঁ’, ‘ফুড়ুত্’, ‘মেঘভ্রমণ’, ‘ছয় লাইনের ভূত’ ও ‘ছড়াপদ্য’।
হাবীবুল্লাহ সিরাজী ২০১৬ সালে একুশে পদক, ২০১০ সালে রূপসী বাংলা পুরস্কার এবং কবিতালাপ সাহিত্য পুরস্কার, ২০০৭ সালে বিষ্ণু দে পুরস্কার, ১৯৯১ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৯ সালে আলাওল সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে যশোর সাহিত্য পরিষদ পুরস্কারসহ দেশি-বিদেশি নানা পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।