আমাকে অভিনয় করতে দিন: পপি
তিনবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়া চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভীন পপি। শিগগিরই শুরু করছেন নতুন ছবির শুটিং। ‘কাটপিছ’ নামের এই ছবির পরিচালক বুলবুল বিশ্বাস। কিছুদিন আগে চিত্রনায়িকা পপির জন্মদিনে ফেসবুকে ছবিটির পোস্টার প্রকাশ করা হয়। পোস্টার প্রকাশের পর থেকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হন তিনি। পপিকে নিয়ে নেতিবাচক কথা রটানোর চেষ্টা হয়েছে। সমালোচনাকে পাশ কাটিয়ে পপি মনোযোগী তাঁর ছবি নিয়ে। নতুন ছবিসহ অন্য প্রসঙ্গে আজ শনিবার প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
‘কাটপিছ’ কী?
বাংলাদেশের সিনেমায় ২০০০ সালের পরের সময়ে কাটপিছ ও অশ্লীলতা মহামারি আকার ধারণ করেছিল। কয়েক বছরে আমাদের চলচ্চিত্র প্রায় ডুবতে বসেছিল। চলচ্চিত্রের সে সময়ের নানা ঘটনা নিয়ে এই ‘কাটপিছ’ সিনেমা। বাংলাদেশের সিনেমার ওই সময়ে নায়িকা এবং অন্য অভিনয়শিল্পীদের অকারণে আপত্তিকরভাবে উপস্থাপন করা হতো। সেটা কেন? কীভাবে এসব হতো? কারা যুক্ত ছিল?—এসবের পাশাপাশি একজন নায়িকার ব্যক্তিজীবন, চলচ্চিত্রজীবন, প্রেম-ভালোবাসা, আশপাশের মানুষদের ভূমিকা এই ছবিতে থাকবে।
‘কাটপিছ’ ছবির পোস্টারে আপনাকে দেখে চলচ্চিত্রের অনেকে কথা বলেছেন।
পোস্টার ও নামের কারণে কেউ কেউ কিছু বলেছেন, তা আমার কানেও এসেছে। তবে এসব নিয়ে আমি চিন্তিত নই। সমালোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছি। এদিকে অনেকে প্রশংসাও করেছেন। আমি একজন অভিনয়শিল্পী, গতানুগতিকতার বাইরে চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয় করতে চাই। বহু বছর পর এত সুন্দর ভাবনা ও চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পেলাম। সবাইকে বলতে চাই, আমাকে অভিনয় করতে দিন, আমি মন দিয়ে কাজটা করি।
এই ছবির জন্য আলাদা কোনো প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে?
প্রতিটা ছবির জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়। পরিচালক আমাকে তাঁর যে ভাবনার কথা শুনিয়েছেন, খুব চ্যালেঞ্জিং বিষয় নিয়ে ছবিটি তৈরি হচ্ছে। তাই প্রস্তুতি সেভাবেই নিতে হবে। আমি এসবের কিছুই এখন বলতে চাই না। তবে দেশের দর্শকদের যে ছবিটি ভালো লাগবে, এটা শতভাগ নিশ্চিত। যেভাবে পরিচালক বলেছেন, তাতে নিশ্চিত অন্য রকম কিছু একটা হবে।
কেন?
কাটপিছের সময় আমাদের চলচ্চিত্রে কারা কারা যুক্ত ছিলেন, কারা ভুক্তভোগী—সবই তুলে ধরা হবে এই ছবিতে। এই সিনেমায় আমি নায়িকার চরিত্রে অভিনয় করব। এর বেশি আর কিছু বলতে চাই না। চলচ্চিত্রে একজন নায়িকা কীভাবে কাজ করেন, তাঁর চলার পথের সংগ্রামের গল্প, প্রেম, পারিবারিক গল্প ও আবেগ অনুভূতির কথা থাকবে।
কেন?
ফেসবুকে নাম ও পোস্টার প্রকাশের পর আমাদের এই ভাবনা নিয়ে ছবি বানানোর জন্য কেউ উঠেপড়ে লেগেছে। ছবির নামটা এখানে একটা বড় কারণ।
এমন স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কাজ করতে কেন আগ্রহী হলেন?
বাণিজ্যিক ছবির পাশাপাশি আমি ভিন্নধর্মী গল্পের ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি একজন শিল্পী, নিজেকে এক ধরনের চরিত্রে কেন আটকে রাখব! বৈচিত্র্যময় কাজের সুযোগ যদি সামনে থাকে, তাহলে কেন গতানুগতিক ছবিতে অভিনয় করব? এর আগেও বিষয়ভিত্তিক ছবিতে অভিনয় করেছি। একেকটা ছবির ছিল একেক রকম চ্যালেঞ্জ। ‘মেঘের কোলে রোদ’ ছবিতে একজন এইডস রোগীর চরিত্রে অভিনয় করেছি। যদিও অনেক ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়, তারপরও কাজটা করেছি। ‘গঙ্গাযাত্রা’ ছবিতে আমার চরিত্রে কোনো গ্ল্যামার ছিল না। একজন ডোমের চরিত্রের অভিনয় করেছি। মারপিটের সিনেমা ‘ডাকু রানী’ ও ‘গার্মেন্টস কন্যা’ আলাদা একটা ইমেজ তৈরি করে দিয়েছে আমার। বলতে পারেন, এই ছবিটি আমার অভিনয়জীবন নতুনভাবে চাঙা করবেই।
এই ছবিতে আপনার নায়ক কে?
একজন নয়, এই ছবিতে কয়েকজন নায়ক থাকবে। গল্পের প্রয়োজনে এমনটা ভেবেছেন পরিচালক। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে চূড়ান্ত করেননি।
‘কাঠগড়ায় শরৎচন্দ্র’ ছবির কাজ শেষ হয়েছে?
না, ওই ছবির শুটিং এখনো শেষ হয়নি। নতুন লটের কাজ শুরু হবে কিছুদিনের মধ্যে। এ ছাড়া সাদেক সিদ্দিকীর ‘সাহসী যোদ্ধা’ কাজ বাকি আছে। ‘টান’ এবং ‘যুদ্ধশিশু’ নামে দুটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। এর মধ্যে রিয়াজ ভাইয়ের সঙ্গে একটা বিজ্ঞাপনচিত্রের কাজ করেছি। স্টেজ শো করছি।