শাকিব-অপু নিয়ে যা বললেন বুবলি
চিত্রনায়ক শাকিব খান ও চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসের বিয়ে-সন্তান নিয়ে গতকাল সোমবার বিকেল থেকে নাটকীয় সব ঘটনা সামনে আসছে। দুজনের সম্পর্ক নিয়ে চলা তুমুল আলোচনায় আরেক চিত্রনায়িকা শবনম বুবলির নাম এসেছে। অবশ্য বেশ কিছুদিন ধরেই শাকিব-অপু-বুবলি—এই ত্রিভুজে নানা কথা ঘুরপাক খাচ্ছে। এর মধ্যে মুখ খুললেন বুবলি। আজ মঙ্গলবার সকালে ফেসবুকে এক পোস্টে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। তাঁর ফেসবুক পোস্টের পরিমার্জিত রূপ পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো। এখানে তিনি নিজেই নিজেকে প্রশ্ন করে উত্তর দিয়েছেন। তা হচ্ছে:
ব্যাপারটি ইমোশনাল নাকি প্রফেশনাল?
কোনটা?
হুম্ম্, একটু ভেবে বললে ভালো।
জানি, আপনারা এখন অনেকেই অনেক কিছু ভাবছেন। আমাদের দেশে মাঝে মাঝে কিছু কিছু ইস্যু সবার সামনে এসে দাঁড়ায়, যখন অধিকাংশ (সবাই না) মানুষ হুমড়ি খেয়ে একতরফা জাজমেন্ট করতে শুরু করে। আর এদের মধ্যে যারা একটু ভিন্নভাবে ভাবতে চায়, তাদের যে কত কথা শুনতে হয়, তা না হয় না-ই বললাম। একদম সাম্প্রতিক ইস্যু নিয়ে যদি কথা হয়, তাহলে আমার মন্তব্য না করাটাই শ্রেয়। কারণ, এটি সম্পূর্ণ যার যার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আর আমি স্বভাবতই নিজের মতো থাকতে পছন্দ করি। কিন্তু যখন সেখানে আমার কিছু ইস্যু মানুষ নিয়ে আসে, তখন তো স্বাভাবিকভাবে অনেকেই জানতে চাইছে। অনেক ফোনকল পাচ্ছি; এসব নিয়ে যে আমি কীভাবে দেখছি এসব!
বাই দ্য ওয়ে, আমি প্রথমেই একটা জিনিস জানতে চাই, গতকাল কেন অপু বিশ্বাস এত দিনের আড়াল ভেঙে সরাসরি চ্যানেলে গিয়ে এসব কথা বললেন?
কই, এত দিন তো যাননি, কারও সামনে আসতে চাননি...কেন?
কই, সাংবাদিক ভাইয়েরা তো এত চেষ্টা করেও সামনে আনতে পারলেন না। মুখ খোলাতে পারলেন না। বরং আপনারা নাকি যখন জিজ্ঞেস করেছেন, তখন নাকি নানান কথা বলেছেন। তাঁর ভাষ্যমতে, ২০০৮ সাল থেকে তিনি বিবাহিত। তাহলে এত দিন কেন মর্যাদা চাননি? শাকিব না হয় লুকিয়েছেন, তিনি লুকাননি? কেন, ক্যারিয়ারের জন্য?
একজন ওয়াইফের কাছে ক্যারিয়ার এতই বড়?
ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবা ঠিক আছে। কিন্তু নিজের মর্যাদা আদায়ের আগে কি ক্যারিয়ার?
অপু বিশ্বাস আরও বলেছেন, তাঁর সঙ্গে শাকিবের গত এক বছরের মতো কথা হয় না। এটা কি কোনো সম্পর্কের জন্য স্বাভাবিক? তখনো তো স্বীকৃতি চাইতে সবার সামনে এলেন না। কেন?
তিনি (অপু) আরও বললেন, তাঁর ডেলিভারি হয়েছে গত বছর সেপ্টেম্বরে। তাহলে তখন এলেন না স্বীকৃতির জন্য। কেন?
শাকিব না হয় লুকিয়েছেন, তিনি লুকাননি?
একজন মায়ের কাছে কি সন্তানের থেকে ক্যারিয়ার বড়?
কই, গত পরশুদিন পর্যন্ত তো তিনি বাচ্চাটির স্বীকৃতি চাইলেন না!
এবার আসি কেন এলেন সামনে...
গতকাল যখন একটি পত্রিকায় নিউজ হলো ‘রংবাজ’ ছবি নিয়ে, তখন তাঁর নাকি মাথা খারাপ হয়ে গেল আমার নাম দেখে।
তিনি (অপু) চান না শাকিব-বুবলি একসঙ্গে কাজ করুক। তিনি শাকিবকে লোক মারফতে জানালেন, তাঁকে নিয়ে একটি ছবির নিউজ করাতে, না হয় আমাকে নিয়ে ছবির নিউজ অফ করাতে, নাহলে এটার শেষ দেখে ছাড়বেন তিনি।
আজকে এখানে বুবলি না থেকে অন্য কেউ থাকতে পারত, যার সঙ্গে শাকিবের জুটি গড়ে উঠেছে। অপু বিশ্বাস যেটা আগের অনেক নায়িকার ক্ষেত্রে করতে দেননি, যা শাকিব নিজেই বলেছেন...
কেন, রাজ্জাক স্যার-শাবানা ম্যাডাম, রাজ্জাক স্যার-ববিতা ম্যাডাম, রাজ্জাক স্যার-কবরী ম্যাডাম জুটি ছিলেন না?
রিয়াজ ভাই-শাবনূর আপু, রিয়াজ ভাই-পূর্ণিমা আপু জুটি ছিলেন না?
এমন তো অনেক উদাহরণ আছে। কিন্তু অপু বিশ্বাস তাঁর বাইরে কোনো জুটি প্রতিষ্ঠিত হোক—এমনটি চাননি বলেই কি তাঁর মর্যাদা এত দিন চাইলেন না। আর সন্তানের স্বীকৃতি এত দিন চাইলেন না।
তাহলে কী! তিনি ব্যায়াম করে নাকি ফিট হয়ে এসে আবার শাকিবের সঙ্গে মুভি করতেন। তাহলে তাঁর মর্যাদা আদায়ের কথা নাহয় বাদ দিলাম, তাঁর বাচ্চাটির স্বীকৃতি কোথায় যেত?
এ রকম চাপাই থাকত! আজকে এই মুভি করা নিয়েই তো এত কিছু, তাঁকে নিয়ে মুভি ডিক্লারেশন আসলে কি তিনি বাচ্চার স্বীকৃতি চাইতেন?
লুকিয়ে রাখতেন না?
ধরলাম শাকিব ‘না’ করেছেন বলতে, কিন্তু মা হয়ে তিনি কী করলেন?
এখন মুভি নিয়ে সমস্যা হলো বলে সবার সামনে এসে সব বলছেন?
সেসব জায়গায় বেশ কিছুদিন ধরে বলে আসছেন, তাঁর ছবি করেছি আমি।
তাই আমি হতে পেরেছি।
আরে বাবা, পৃথিবীর অনেক দেশেই তো অনেকের রিপ্লেসমেন্টে অনেকে মুভি করছে। বলিউড সুপারস্টার থেকে শুরু করে ঢালিউড পর্যন্ত। এমনকি অপু বিশ্বাস নিজেও অন্য অনেকের রিপ্লেসমেন্টে মুভি করেছেন।
তাহলে এখানে এসব অযৌক্তিক কথা বলার কী মানে?
একজন মানুষকে তারকা বানায় তার দর্শকেরা, তার ভক্তরা। যার জন্য আমি আমার দর্শক এবং আমার ভক্তদের কাছে কৃতজ্ঞ এত অল্প সময়ে আমাকে এত ভালোবাসা দেওয়ার জন্য। আর আজকে আমি ‘বসগিরি’ দিয়ে এন্ট্রি না করলে ‘প্রিয়া রে’ ছবি দিয়ে আসতাম। কারণ, সব প্রস্তুতি সেভাবেই নেওয়া হয়েছিল। যেটা ওই ছবির পরিচালক, প্রযোজক থেকে শুরু করে অনেকেই জানেন। ‘প্রিয়া রে’ তো অন্য কারও মুভি ছিল না। তখন তিনি কী বলতেন?
যা-ই হোক, যে-কেউ ভিউয়ার হিসেবে যেকোনো মন্তব্য করতে পারেন সহজে। কিন্তু একমাত্র তাঁরাই ভালো বলতে পারেন সবকিছু, যখন যাঁরা যেসব পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যায়। আর আমাকে নিয়ে কেউ যখন সারাক্ষণ কথা বলে, তখন আমার কিছু স্পষ্ট করার অধিকার আছে। আর আমি সেটাই করার চেষ্টা করেছি।
আর হ্যাঁ, সহশিল্পীদের সবার সঙ্গে সবার ভালো বোঝাপড়া থাকে, যেটা আমার সঙ্গে শাকিবের আছে এবং থাকবে।
তাঁকে অনেক শ্রদ্ধা করি, যেটা এক দিনে তৈরি হয় না যে এক দিনে কমে যাবে।
কারণ, শাকিব খান আমাদের গর্ব এবং সব সময়ই থাকবেন।