গণিত ক্যাম্প—শুনলেই কারও মনে হতে পারে দূরে কোথাও তাঁবু খাটিয়ে, গাছপালার ছায়ায় কিছু মানুষ গণিত শেখে। আসলে ব্যাপারটা মোটেই এ রকম না। আমরা বিভিন্ন জেলা থেকে গণিত বিজয়ীরা একসঙ্গে কয়েক দিন থাকি, ঠিক আমাদের মতো কিছু মানুষের সঙ্গে পরিচিত হই, গণিত জগতের বিশালতা আর সৌন্দর্য অনুভব করি।
ক্যাম্পের প্রথম দিন পরিচিতি পর্ব। একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর আমাদের কারও যেন আর মনেই ছিল না, আমরা একেকজন একেক জায়গার মানুষ—কেউ ঢাকার, কেউ রাজশাহীর, কেউ চট্টগ্রামের, কেউ রংপুর, বগুড়া, কুমিল্লা বা অন্য কোনো জেলার! আমাদের সবার মধ্যে মিল হলো আমরা গণিত ভালোবাসি। এই ভালোবাসার সূত্রেই সবার এক হওয়া। তাই সম্পর্কটা সহজ হতে সময় লাগে না।
পরিচয় পর্বের পর শুরু হয়ে গেল ক্লাস। অন্য কোথাও ক্লাসের কথা ভাবলেই সবাই ঘাবড়ে যায়। অথচ গণিত ক্যাম্পে ক্লাসগুলোই ছিল সবচেয়ে প্রাণবন্ত। আন্তর্জাতিক গণিত উৎসবে মেডেলজয়ীরা আমাদের ক্লাস নিয়েছেন, নতুন করে ভালোবাসতে শিখিয়েছেন গণিতকে। সকালে নাশতার পর আমাদের ক্লাস শুরু হতো; মধ্যে কখনো বিরতি, আবার ক্লাস কিংবা কখনো সমস্যা সমাধান পর্বে কলমের মাথা চিবিয়ে খাওয়া—এটাই গণিত ক্যাম্পের পরিচিত দৃশ্য। দীর্ঘক্ষণ ধরে চেষ্টা করার পর একটা গাণিতিক সমস্যা সমাধানের যে কী আনন্দ, সেটা গণিত ক্যাম্পে না এলে বোধ হয় আমাদের অজানাই থেকে যেত। ক্যাম্পের সিনিয়ররা জুনিয়রদের যেকোনো সমস্যায় এগিয়ে আসে। তাই জটিল কোনো গাণিতিক সমস্যা দেখেও ঘাবড়ে যাওয়ার প্রশ্নই আসে না।
গণিত ক্যাম্প বলে এখানে যে শুধু গণিতের চর্চাই হয় তা নয়। এখানে কেউ বাংলা ভাষাবিদ, কেউবা ফিজিকসের গুরু, কেউ দারুণ ছবি আঁকে, কেউ সুডোকু চ্যাম্পিয়ন আবার কেউবা প্রোগ্রামিংয়ের বস! তাই বলে গান কিংবা খেলাধুলা বাদ থাকবে কেন? সবাই মিলে একসঙ্গে গান গাওয়া ক্যাম্পের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সারা দিন ক্লাস শেষে যখন ক্লান্তি এসে ভর করে সবার মনে, তখনই শুরু হয় দারুণ বুদ্ধিদীপ্ত সব খেলা।
ড. মাহবুব মজুমদার স্যার, মুনির হাসান স্যারদের উপদেশ আমাদের সব সময় মনে থাকবে। আর মেন্টরদের প্রতি কৃতজ্ঞতার কথা বলে প্রকাশ করা যাবে না। ক্যাম্পে থাকার একমাত্র সমস্যা হচ্ছে—দ্রুত গড়ে ওঠা এই পরিবারকে ছেড়ে আসার কষ্ট। শেষ দুই দিন পরীক্ষা আর সনদ বিতরণের মধ্য দিয়ে হঠাৎই যেন শেষ হয়ে গেল ১৪টি দিন। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে আর দেখা হবে না প্রিয় বন্ধুদের মুখগুলো, হাঁ করে ক্লাসে কোনো সুন্দর গাণিতিক সমাধানের দিকে তাকিয়ে থাকা হবে না—ভেবেই খারাপ লাগতে শুরু করল। তবু আমরা এক ঝুলি অভিজ্ঞতা, গণিতের কলাকৌশল আর ভালো লাগা নিয়ে বাড়ি ফিরলাম আরও ভালো করার প্রত্যাশায়।
স্মৃতির ‘সার্চ ইঞ্জিনে’ কখনো ‘শ্রেষ্ঠ দিনগুলো’ লিখে সার্চ করলে নিশ্চয়ই এই ১৪টি দিন সবার আগে উঠে আসবে।
সভা, সম্মেলন ও উৎসব
* ১৩ এপ্রিল ঢাকার ইএমকে সেন্টারে বাংলাদেশি ইনোভেটরস টেলস শীর্ষক সেমিনারে ড. সায়েবা আখতারের বক্তব্য প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে আগ্রহী তরুণেরা এই আয়োজনে অংশ নিতে পারবেন। বিস্তারিত: bit.ly/2Fys20w
* ১০ এপ্রিল ঢাকার গুলশানে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) আয়োজনে তরুণদের অর্থনীতি ভাবনা শীর্ষক একটি আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণ ও গবেষকেরা এই আয়োজনে অংশ নিতে পারবেন। বিস্তারিত: bit.ly/2uujXor * ১৯ এপ্রিল ঢাকার নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটিতে বিএসএইচআরএম-এনএসইউ আন্তর্জাতিক মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপকসহ করপোরেট ব্যক্তিত্বরা শিক্ষার্থীদের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ দেবেন। বিস্তারিত: bit.ly/2Owoj7E * ৬ এপ্রিল ঢাকার দ্য অলিভসে ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য একটি মেলার আয়োজন করা হয়েছে। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও বৃত্তির খোঁজ জানা যাবে এই আয়োজন থেকে। বিস্তারিত: bit.ly/2YvvMIF
* ১১ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে তৃতীয় আন্তর্জাতিক মূকাভিনয় উৎসব ২০১৯ অনুষ্ঠিত হবে। শিক্ষার্থীদের মূকাভিনয় সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলতে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। বিস্তারিত: bit.ly/2HVMaMQ * ৬ এপ্রিল ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে উইমেন মার্কেটিয়ার্স ডে নামের একটি সেমিনার আয়োজন করা হয়েছে। ইউআইইউ মার্কেটিং ফোরামের এই আয়োজনে নারী পেশাজীবীরা বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের কাছে নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা জানাবেন। বিস্তারিত: bit.ly/2U2roCh