প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পর্তুগালের ভিসা পায়নি চ্যাম্পিয়ন দল
তথ্যপ্রযুক্তিতে বিশ্বের মর্যাদাপূর্ণ এসিএম-আইসিপিসির প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশে (ঢাকা অঞ্চলে) এ বছর চ্যাম্পিয়ন হয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সাস্ট ডেসিফ্রেডর দলটি। আর রানার্সআপ হয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দল ব্লাডহাউন্ড। ৩১ মার্চ থেকে শুরু হওয়া পর্তুগালের ইউনিভার্সিটি অব পর্তোতে এসিএম-আইসিপিসির ওয়ার্ল্ড ফাইনালে এই দুটি দলের বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার কথা। তবে বুয়েটের রানার্সআপ দলটি সোমবার বিকেলে ভিসা পেলেও চ্যাম্পিয়ন দলটি ভিসা পায়নি। এতে প্রোগ্রামিংয়ের বিশ্ব আসরে দলটির অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
শাবিপ্রবির কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের চ্যাম্পিয়ন দলটির তিন সদস্য হচ্ছেন মওদুদ আহমেদ খান, জুবায়ের আরাফ ও অভিষেক পাল। আর তাঁদের সহকারী কোচ সিএসই সহকারী অধ্যাপক বিশ্বপ্রিয় চক্রবর্তী ও প্রভাষক মেহেদী হাসান নাহিদ। ওই পাঁচজনসহ দলটির ১৩ জন সদস্য প্রোগ্রামিংয়ের বিশ্ব আসরে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণপত্র পান গত ২২ জানুয়ারি। ৩১ মার্চের ওয়ার্ল্ড ফাইনালে অংশ নিতে দলের তিন সদস্য ও দুই সহকারী কোচ পর্তুগালের ভিসার জন্য আবেদন করেন গত ২১ ফেব্রুয়ারি।
পর্তুগালের দূতাবাস বাংলাদেশে না থাকায় ফ্রান্সের দূতাবাসের মাধ্যমে ভিসার আবেদন করতে হয়। ৪ মার্চ ঢাকায় ফ্রান্সের দূতাবাস তাঁদের ভিসা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। ভিসা না দেওয়ার কারণ হিসেবে ওই দূতাবাস লিখেছে, ‘ভিসার মেয়াদ শেষে দলটির সদস্যরা পর্তুগাল ছেড়ে আসবেন বলে মনে হচ্ছে না। ভিসার জন্য দেওয়া কাগজপত্র তাঁদের কাছে নির্ভরযোগ্য মনে হচ্ছে না।’
ভিসার আবেদন বাতিল করে দেওয়ায় দলটির বিশ্ব আসরে যাওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। শাবিপ্রবির সিএসই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক মো. জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘গত সাত বছরে আমরা ছয়বার প্রোগ্রামিংয়ের বিশ্ব আসরে অংশগ্রহণ করেছি। আমাদের কোচ ও শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতা শেষে ফিরে এসেছেন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণপত্রসহ আবেদন করার পরও যে ভাষায় তাঁরা ভিসা বাতিল করেছে, তা অযৌক্তিক ও অপমানজনক।’ তিনি বলেন, ‘উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ স্যার ব্যক্তিগত উদ্যোগে ইউজিসির মাধ্যমে দলটির ভ্রমণ খরচ বাবদ পাঁচ লাখ টাকা সংগ্রহ করে দিয়েছেন। উপাচার্য স্যার সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ করলেও সোমবার পর্যন্ত কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই আমরা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সুদৃষ্টি ও উদ্যোগ কামনা করছি।’
সাস্ট-ডেসিফ্রেডর দলের সদস্য মওদুদ আহমেদ খান ও জুবায়ের আরাফের সঙ্গে সোমবার বিকেলে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তাঁরা প্রথম আলোকে জানান, ৩১ মার্চ থেকে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে হবে। ২৯ মার্চের মধ্যে ভিসা পেলে যাওয়া সম্ভব।
দলটির সহকারী কোচ বিশ্বপ্রিয় চক্রবর্তী ও মেহেদী হাসান নাহিদ বলেন, এখন যে সময় বাকি আছে তাতে সাধারণ প্রক্রিয়ায় ওই প্রতিযোগিতায় আর অংশগ্রহণ করা যাবে না। তাই প্রধানমন্ত্রী কিংবা সরকারের উচ্চ পর্যায়ের জরুরি সহযোগিতা প্রয়োজন।