নাটকের তিতান

মঞ্চের মানুষ তিতান চৌধুরী এখন পুরোদস্তুর ব্যস্ত টেলিভিশন নাটকে
মঞ্চের মানুষ তিতান চৌধুরী এখন পুরোদস্তুর ব্যস্ত টেলিভিশন নাটকে

অভিনয়ের শুরুটা থিয়েটার থেকে। প্রশংসা কুড়ান মাস্টারদা সূর্য সেনের স্ত্রী পুষ্পার চরিত্রে অভিনয় করে। আর মঞ্চের পুষ্পা চরিত্রটিই ঘুরিয়ে দিয়েছে তাঁর শিল্পীজীবনের মোড়। মঞ্চ ছেড়ে পুরোদস্তুর ব্যস্ততা এখন টেলিভিশন নাটকে। তাই বলে মঞ্চকে বিদায়? না, ডাক পেলেই ছুটে আসেন মঞ্চের টানে।
তিনি তিতান চৌধুরী। চট্টগ্রামের মেয়েটি ঢাকায় থিতু হয়েছেন ২০১৩ সাল থেকে। সম্প্রতি চট্টগ্রাম এলে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। আড্ডায় উঠে আসে ‘সংক্ষিপ্ত’ অভিনয়জীবনের আদ্যোপান্ত।
শুরুতেই মঞ্চের শিল্পীর টেলিভিশন পর্দায় আগমনের নেপথ্য কাহিনি। তিতান ফিরে যান বছর চারেক আগে। বললেন, ‘আমি তখন নাট্যধারা থিয়েটারের কর্মী। ২০১২ সালের দিকে সূর্য সেন নাটকে পুষ্পার চরিত্রে অভিনয় করি। এটি চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে মঞ্চস্থ হয়। একদিন নাটক দেখে ফোন করেন নাট্যনির্মাতা কায়সার আহমেদ। প্রস্তাব দেন টেলিভিশন নাটকে অভিনয় করার। ব্যস, আমিও রাজি হয়ে যাই। বাংলাভিশনের প্রচারিত ধারাবাহিক ঘোমটা নাটকে অভিনয় দিয়ে টেলিভিশন পর্দায় যাত্রা।’
গত কোরবানির ঈদে বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেন তিতান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য এনটিভিতে প্রচারিত সাত পর্বের ধারাবাহিক সাবলেট বুকলেট। এতে তাঁর চরিত্রের নাম ছিল নিশি, যিনি প্রতারিত হন ভালোবাসার মানুষের কাছ থেকে। তাঁর বিপরীতে ছিলেন আরফান নিশো। ঈদে এনটিভিতে প্রচারিত আরও একটি নাটক সাইরেন-এ অভিনয় করেন, যেখানে তিনি ছিলেন আসাদুজ্জামান নূর, সুবর্ণা মুস্তাফা, সাদিয়া ইসলাম মৌদের সহশিল্পী। এ ছাড়া এটিএন বাংলায় প্রচারিত ভালোবাসার কিছু রং নাটকে অভিনয় করেন সজল ও নিলয়ের বিপরীতে।
নাটক ছাড়াও চলচ্চিত্রের নায়িকা হিসেবেও নাম লিখিয়েছেন তিতান। অভিনয় করেন একেবারে বাণিজ্যিক ছবি নগর মাস্তান-এ। রাকিবুল ইসলাম পরিচালিত ছবিটিতে তাঁর বিপরীতে ছিলেন জায়েদ খান। এটি মুক্তি পায় ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর। তিতান বলেন, ‘ছবিটি মোটামুটি ব্যবসা সফল হয়েছে। এরপর আরও কয়েকটা প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু আমি সায় দিইনি। তবে ভালো গল্প হলে আবার ভেবে দেখব।’
এবার ঘরের কথায় আসি। পরিবার থেকে সহযোগিতা পান? বললেন, ‘পরিবারের সহযোগিতা আছে বলেই তো এত দূর আসা।’

তিতানের বাবা চিকিৎসক সুমন চৌধুরীর ইচ্ছা ছিল মেয়েকে নিজের পেশায় আনবেন। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই তিতানের ঝোঁক ছিল গান-বাজনায়। চার বছর বয়সে হাতেখড়ি হয় গানের। এরপর শিখেছেন নানা প্রতিষ্ঠানে। কণ্ঠশিল্পী হিসেবেও পরিচিতি পান। এক সময় গান ছেড়ে অভিনয়ে মন দেন। এর মধ্যে বিবিএ শেষ করেছেন চট্টগ্রাম নগরের ইউআইটিএস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

তিতান এখন পুরোটা সময় দিচ্ছেন নাটকে। নিয়মিত অভিনয় করছেন বাংলাভিশন ও এটিএন বাংলার পাঁচটি ধারাবাহিক নাটকে। বাংলাভিশনে চলিতেছে সার্কাস, মেঘের পরে মেঘ জমেছেথ্রি সিস্টার এবং এটিএন বাংলায় নীড় খোঁজে গাঙচিল মন থেকে দূরে নয়

তাহলে নাটক ছাড়া আর কিছু নয়? ‘আপাতত নাটকেই থাকব। আমি থিয়েটারের মানুষ। নাটকের প্রতি টান প্রবল’, বললেন তিতান।