মৃত্যুর পর জানা গেল করোনায় আক্রান্ত, ৩৪২ পরিবার লকডাউন
জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যাওয়া ৬৯ বছর বয়সী বৃদ্ধ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। তাঁর নমুনা পরীক্ষার পর চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেজ (বিআইটিআইডি) গতকাল শনিবার এ কথা জানিয়েছে। এরপর তাঁর এলাকার ৩৪২টি পরিবারকে লকডাউন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে এ খবর জানাজানি হলে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। রাত ১২টার দিকে সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ-আলম, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আবদুল মজিদ ওসমানী ও সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সফিউল কবীর ওই বৃদ্ধের গ্রামের বাড়িতে যান। সবার সঙ্গে কথা বলে লকডাউন ঘোষণা করেন।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য বলেন, ওই ব্যক্তি জ্বর, সর্দি, কাশি ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। গত বুধবার তাঁকে কেরানীহাটের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকায় তাঁকে চট্টগ্রামে নিয়ে যেতে বলেন। স্বজনেরা তাঁকে চট্টগ্রামের জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরের দিন নমুনা সংগ্রহ করার কথা জানান। কিন্তু স্বজনেরা তাঁকে বাড়িতে নিয়ে যান। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে রোগীর অবস্থা খারাপ হলে স্বজনেরা তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পাশাপাশি নমুনা সংগ্রহ করেন। পরের দিন শুক্রবার সকালে তাঁর লাশ গ্রামে নিয়ে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
সাতকানিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আবদুল মজিদ ওসমানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল রাতে তথ্য পাই, মৃত ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। পরে তাঁর বাড়িসহ আশপাশের এলাকা লকডাউন করা হয়েছে। এ ছাড়া কেরানীহাটের যে বেসরকারি ক্লিনিকে তাঁকে নেওয়া হয়েছিল, ওই ক্লিনিকের চিকিৎসক ও অন্যদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে বলা হবে।’
সাতকানিয়ার ইউএনও মোহাম্মদ নূর-এ-আলম প্রথম আলোকে বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চট্টগ্রামে এটিই প্রথম মৃত্যুর ঘটনা। গতকাল রাতে ওই ব্যক্তির এলাকা লকডাউন করে মাইকিং করা হয়েছে। পাশাপাশি সতর্কতার জন্য লাল পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা উপজেলার অন্য এলাকার স্বজন ও পরিচিতদের ৪৫টি বাড়িও লকডাউন করা হয়েছে।