ডেঙ্গুতে আরও চারজনের মৃত্যু

ডেঙ্গু
ডেঙ্গু

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ঢাকায় এক শিশু ও কিশোর, সাভারে এক নারী ও যশোরে এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। এর মধ্যে শিশুটি গতকাল রোববার এবং বাকি তিনজন শনিবার বিকেল থেকে রাতের মধ্যে মারা গেছেন।

এ নিয়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯৪ জনের মৃত্যু খবর জেনেছে প্রথম আলো। সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, পরিবারের সদস্য, বিভিন্ন জেলার সিভিল সার্জন ও সরকারি হিসাব থেকে মৃত্যুর এই সংখ্যা জানা গেছে। সরকারের কাছে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১৮৫টি মৃত্যুর তথ্য রয়েছে। এর মধ্যে ৯৬টি মৃত্যুর তথ্য পর্যালোচনা শেষ করেছে সরকার। পর্যালোচনা করার পর ৫৭ জনের মৃত্যু ডেঙ্গু জ্বরে হয়েছে বলে সরকার নিশ্চিত করেছে।

সরকারের তথ্য আরও বলছে, গতকাল পর্যন্ত সারা দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৭১ হাজার ৯৭। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকায় নতুন করে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা ৪০৫। ঢাকার বাইরে ৪৯৭।

ঢাকার সাভারে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত শনিবার রাতে খাদিজা বেগম (৪২) মারা গেছেন। এই নারী সাভার পৌর এলাকার হাবিবুর রহমানের স্ত্রী।

>ঢাকায় এক শিশু ও কিশোর, ঢাকার বাইরে এক নারী ও বৃদ্ধের মৃত্যু। এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ৭১ হাজার ৯৭ জন।

পরিবার জানায়, কয়েক দিন ধরে খাদিজা জ্বরে ভুগছিলেন। অবস্থার অবনতি হলে গত শনিবার বিকেলে তাঁকে সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগে তাঁকে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী বলেন, হাসপাতালে ভর্তির কয়েক ঘণ্টা পর শনিবার রাত ১১টার দিকে খাদিজা মারা যান।

নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের কিশোর ইমতিয়াজ আহমেদ (১৭) ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত শনিবার বিকেলে মারা গেছে। নরসিংদী কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ইমতিয়াজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল।

ইমতিয়াজের চাচা আলমগীর হোসেন বলেন, পাঁচ দিন ধরে ইমতিয়াজ ডেঙ্গু জ্বরে ভুগছিল। গত শুক্রবার বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়।

এ বিষয়ে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাবিব ইসমাইল ভুইঁয়া জানান, জ্বরে আক্রান্ত হয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছিল ইমতিয়াজ। রক্ত পরীক্ষায় তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়, সেখানেই তার মৃত্যু হয়। ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত যশোরের কেশবপুরের বরণডালি গ্রামের আবদুল কুদ্দুস (৬০) গত শনিবার রাতে মারা গেছেন। ছেলে জুয়েল ইসলাম জানান, গত শুকবার বিকেলে কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় তাঁর বাবাকে। অবস্থার অবনতি হলে ওই দিনই তাঁকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গত শনিবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর বাবার মৃত্যু হয়।

কেশবপুরের উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ বলেন, আবদুল কুদ্দুস ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল। তবে তাঁর অন্যান্য সমস্যাও ছিল।

এদিকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে গতকাল আনফি নামের সাড়ে চার বছরের এক শিশু মারা গেছে। শিশুটির পরিবার মিরপুরে থাকে। শিশুটি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ছিল বলে জানান হাসপাতালের চিকিৎসক কিংকর ঘোষ।