আ.লীগ নেতা ফরহাদ হত্যার আসামি 'এনকাউন্টারে' নিহত
রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সঙ্গে ‘এনকাউন্টারে’ এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৪টার দিকে বাড্ডা এলাকার সাতারপুল নামক স্থানে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দক্ষিণ পাশে প্রজাপতি হাউজিং এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তির নাম রমজান আলী ওরফে রমজান মিয়া (৩৬)।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে রোজার মাসে বাড্ডায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ফরহাদ হোসেন (৫০) নিহত হন। ফরহাদ হোসেন বাড্ডা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ওই হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন রমজান। ফরহাদের সঙ্গে ঘুরতেন রমজান। তাঁর কোনো দলীয় পরিচয় নেই।
বাড্ডা এলাকায় ২০১৫ সালে গামা হত্যা মামলারও (ত্রিপল মার্ডার) প্রধান আসামি ছিলেন রমজান। এ ছাড়া বাড্ডা এলাকায় সব টেম্পোস্ট্যান্ড, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা থেকে চাঁদাবাজি, কাঁচাবাজারের নিয়ন্ত্রণ ও চাঁদা আদায়, ওই এলাকায় বাড়ি তৈরির বিভিন্ন কাজের সময় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজিসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কাজে জড়িত ছিলেন রমজান। আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষ বাড্ডায় গরুর হাটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি।
‘এনকাউন্টারে’ রমজানের নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে ডিবির (উত্তর) উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, ফরহাদ হত্যার আরও দুজন পরিকল্পনাকারী ছিলেন। তাঁরা হলেন তেজগাঁওয়ের এক শীর্ষ সন্ত্রাসী আশিক ও বৃহত্তর গুলশান এলাকার এক শীর্ষ সন্ত্রাসী মেহেদি। তাঁরা তিনজন মিলে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা সাজান। ফরহাদ হত্যার পর রমজান ভারতে পালিয়ে যান। আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষ বাড্ডা এলাকায় যে গরুর হাট বসবে এটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার জন্য গত জুন মাসে তিনি দেশে ফেরেন। গরুর হাটকেন্দ্রিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় ফরহাদের বড় ছেলেসহ আরও কয়েকজনকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তাঁর ফিরে আসার খবর ও তাঁর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের খবর ডিবি পুলিশ পায়। পরে গতকাল রাতে ডিবির একটি দল সাতারপুল এলাকায় যায়। সাতারপুলের বালুর মাঠ এলাকার ফাঁকা জায়গায় গেলে একদল দুর্বৃত্ত ডিবি সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। ডিবিও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে। গোলাগুলি থেমে গেলে আশপাশে বাসাবাড়ির নিরাপত্তারক্ষীদের নিয়ে এলাকা তল্লাশি করে ডিবি। পরে প্রজাপতি হাউজিং এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কাটা জিনসের প্যান্ট ও কালো গেঞ্জি পরা এক লোক পড়ে আছে। তাঁকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে তাঁর পরিচয় জানা যায়।
মশিউর রহমান জানান, ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, একটি গুলি ও কিছু ইয়াবা পাওয়া গেছে। ঘটনার সময় আরও কয়েকজন সন্ত্রাসী ছিল, তবে তারা পালিয়ে গেছে।