>হলফনামা অনুযায়ী, বিএনপির প্রার্থীর কোনো ঋণ নেই। আওয়ামী লীগের প্রার্থী টি জামান নিকেতার সম্পদ কম।
শূন্য হয়ে পড়া বগুড়া-৬ (সদর) আসনের সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের মধ্যে স্বশিক্ষিত প্রার্থীর পাশাপাশি লড়ছেন পিএইচডি ডিগ্রিধারী। সম্পদের দিক থেকে এগিয়ে বিএনপির প্রার্থী। ব্যাংকে তাঁর কোনো ঋণ নেই। ঋণ বেশি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর। নগদ টাকা থাকার দিক দিয়ে এগিয়ে জাপার প্রার্থী।
নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২৪ জুন অনুষ্ঠেয় বগুড়া-৬ আসনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে টি জামান নিকেতা, বিএনপি থেকে গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) সিরাজ, জাতীয় পার্টি থেকে নুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের রফিকুল ইসলাম (হারিকেন), বাংলাদেশের কংগ্রেসের মুনসুর রহমান (ডাব) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মিনহাজ মণ্ডল (আপেল)।
হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে, সাত প্রার্থীর মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতায় এগিয়ে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মুনসুর রহমান। তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের পর চাকরি করছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতায় সবচেয়ে পিছিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মিনহাজ মণ্ডল। তিনি স্বশিক্ষিত বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
বড় তিন দল আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী স্নাতক পাস। তাঁদের তিনজনের পেশা ব্যবসা। বাংলাদেশ মুসলিম লীগের রফিকুল ইসলাম এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ কবির আহম্মেদ এসএসসি পাস।
হলফনামায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা আছে বলে উল্লেখ করেছেন। অপরদিকে বিএনপির প্রার্থী জি এম সিরাজ তাঁর বিরুদ্ধে অতীতে ১১টি মামলা ছিল এবং এগুলো নিষ্পত্তি করার কথা উল্লেখ করেছেন।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী টি জামান নিকেতা ব্যবসা থেকে বছরে ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা আয় দেখিয়েছেন। তাঁর কাছে সাকল্যে ৮০ হাজার টাকা রয়েছে। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তাঁর আসবাব, স্বর্ণালংকার ও ইলেকট্রনিক সামগ্রীর মূল্য দেড় লাখ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে ৬৮ শতক কৃষি, ১৫ শতক অকৃষি, একটি বাড়ি, একটি অ্যাপার্টমেন্ট এবং যৌথ মালিকানায় ১ একর ৩ শতক জমি। স্থাবর-অস্থাবর মিলে ৯১ লাখ ৭০ হাজার টাকার সম্পদের মালিক টি জামান নিকেতা। ব্যাংকঋণ রয়েছে ৯১ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
অপরদিকে বিএনপির প্রার্থী জি এম সিরাজের বার্ষিক আয় ৯৫ লাখ ৯০ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তাঁর হাতে নগদ ৪৪ লাখ ১৯ হাজার টাকা রয়েছে। ব্যাংকে বন্ড, শেয়ার আর সঞ্চয়পত্র মিলে রয়েছে ৬ কোটি ৯১ লাখ ৮৬ হাজার ৬৩০ টাকা। ৪৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকার দুটি ব্যক্তিগত গাড়ি এবং ১ লাখ ৮০ হাজার টাকার আসবাব ও স্বর্ণালংকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে জি এম সিরাজের নিজের নামে ৬ একর কৃষিজমি রয়েছে। এর মূল্য ৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। তাঁর অকৃষিজমির দাম ৮২ লাখ ৩১ হাজার টাকা। তাঁর ৫১ লাখ ৭০ হাজার টাকার একটি বাড়ি এবং ৮২ লাখ ৫০ হাজার টাকার দুটি ফ্ল্যাট এবং ৩৪ লাখ টাকার যৌথ মালিকানার সম্পদ রয়েছে। তাঁর কোনো ব্যাংকঋণ নেই।
জাপার প্রার্থী ও সাবেক সাংসদ নুরুল ইসলাম হলফনামায় কোনো আয় দেখাননি। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে তাঁর কাছে নগদ ৪৮ লাখ ৭২ হাজার ১৬৩ টাকা রয়েছে। এর বাইরে স্বর্ণালংকার ও আসবাব রয়েছে ৮০ হাজার টাকার। স্থাবর সম্পদের মধ্যে তাঁর ৩২ লাখ টাকার ৩৫ শতক কৃষিজমি, ২৩ লাখ টাকার অকৃষিজমি এবং ৯ লাখ টাকার একটি টিনশেড ভবন রয়েছে। ব্যাংকে ঋণ রয়েছে ৬১ লাখ ৩৩ হাজার ৭৯৬ টাকার।
নিজের কোনো আয় নেই বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মিনহাজ মণ্ডল। তাঁর নিজের নামে ৪৫ বিঘা কৃষি ও ২ বিঘা অকৃষিজমি এবং একটি বাড়ি রয়েছে। এসব স্থাবর সম্পদের মূল্য ১৫ লাখ টাকা।
বাংলাদেশ মুসলিম লীগের প্রার্থী রফিকুল ইসলামের নিজের কোনো বাড়ি ও সম্পদ নেই। তাঁর সম্পদ বলতে নগদ ২ লাখ ৪০ হাজার এবং ব্যাংকে ৭০ হাজার টাকা, চার আনা স্বর্ণালংকার এবং ২০ হাজার টাকার আসবাব ও ইলেকট্রনিক সামগ্রী রয়েছে।
বাংলাদেশের কংগ্রেসের প্রার্থী মুনসুর রহমানের চাকরি ও কৃষি খাত থেকে বছরে আয় ৬ লাখ টাকা। ব্যাংক ও নগদে মিলে তাঁর সাড়ে ৫ লাখ টাকা রয়েছে। তাঁর নামে রয়েছে সাড়ে ৪ বিঘা কৃষি ও অকৃষিজমি।