সাহসী স্কুলছাত্রী শিপ্রা
নিজের বিয়ে বন্ধ করে অনন্য সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছে স্কুলছাত্রী শিপ্রা মিস্ত্রি। এবার তাকে নিয়ে অনুষ্ঠান নির্মাণ করছে বাংলাদেশ বেতার। বিশেষ প্রামাণ্য অনুষ্ঠান ‘আলোকবর্তিকা’য় শিপ্রার সাহসিকতার কথা তুলে ধরা হবে।
এ উপলক্ষে গতকাল সকাল ১০টায় বরগুনার আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মাহবুব আলম। বিশেষ অতিথি ছিলেন আমতলীর ইউএনও সরোয়ার হোসেন ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) কমলেশ মজুমদার। উপস্থিত ছিলে শিপ্রা ও তার মা-বাবা এবং সহপাঠীরা।
এই অনুষ্ঠান সম্পর্কে বাংলাদেশ বেতারের উপপরিচালক ও আলোকবর্তিকা অনুষ্ঠানের প্রযোজনা সম্পাদক আল আমিন খান বলেন, ‘শিপ্রা বাল্যবিবাহ বন্ধের জন্য যে সাহসিকতা দেখিয়েছে, সেটা সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। সমাজে যারা ভালো কাজ করে, তাদের স্বীকৃতি দেওয়া ও অন্যরা যাতে এই কাজে অনুপ্রাণিত হয়, সে জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন।’ তিনি জানান, শিগগিরই শিপ্রাকে নিয়ে এই অনুষ্ঠান প্রচারিত হবে।
শিপ্রা গুলিশাখালী ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। সে আমতলীর গুলিশাখালী গ্রামের পুলিন চন্দ্র মিস্ত্রির মেয়ে। সম্প্রতি শিপ্রাকে না জানিয়ে গোপনে তার বিয়ের আয়োজন করেন বাবা পুলিন চন্দ্র। জানতে পেরে শিপ্রা গোপনে মুঠোফোনে ইউএনওকে জানায়। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার তাঁদের বাড়িতে এসে বিয়ের আয়োজন বন্ধ করে দেন। এ বিষয়ে ৭ মে প্রথম আলোয় ‘নিজের বিয়ে বন্ধ করল স্কুলছাত্রী’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়।
অনুষ্ঠানে শিপ্রা বলে, ‘আমি লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হতে চাই।’
গুলিশাখালী ইসহাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাদাত হোসেন বলেন, শিপ্রার সাহসিকতার জন্য এলাকাবাসী গর্বিত। ওর লেখাপড়ার যাবতীয় খরচ বিদ্যালয় বহন করবে। ইউএনও সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘শিপ্রা নিজের বিয়ে বন্ধের জন্য আমার কাছে খবর দেয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পাঠিয়ে বিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। শিপ্রাকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের শুভেচ্ছাদূত করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে।’