পাহাড় কেটে বসতবাড়ি নির্মাণ
শেরপুরের শ্রীবরদীতে গারো পাহাড়ের টিলা কেটে বসতবাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। একটি অসাধু চক্রের সহায়তায় স্থানীয় কিছু লোক উপজেলার সিঙ্গাবরুণা ইউনিয়নের চান্দাপাড়া, বাবেলাকোনা ও হারিয়াকোনা এলাকায় বন বিভাগের জমিতে প্রায় অর্ধশত ঘরবাড়ি তৈরি করে সেখানে বসবাস করছেন। এতে পরিবেশের বিপর্যয়, পাহাড়ধসসহ হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে।
বন বিভাগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শ্রীবরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ে বন বিভাগের বিপুল পরিমাণ জমি রয়েছে। কিন্তু একটি অসাধু চক্র গারো পাহাড়ের চান্দাপাড়া, বাবেলাকোনা ও হারিয়াকোনা এলাকায় পাহাড়ের খাড়া টিলা কেটে অর্থের বিনিময়ে স্থানীয় গরিব লোকজনের কাছে বন বিভাগের জমির দখল বিক্রি করছে। গরিব লোকজন ওই জমিতে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। পাহাড় কাটার ফলে মাটির ভিত নরম হয়ে যাচ্ছে এবং বর্ষা মৌসুমে অতিবৃষ্টিতে পাহাড়ধসসহ পরিবেশের বিপর্যয় ও হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে।
২১ এপ্রিল সরেজমিনে দেখা যায়, গারো পাহাড়ের চান্দাপাড়া, বাবেলাকোনা ও হারিয়াকোনা এলাকায় খাড়া পাহাড়ের টিলা কেটে অর্ধশত ঘরবাড়ি তৈরি করা হয়েছে এবং সেখানে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় লোকজন বসবাস করছেন। সাত-আট বছর ধরে তাঁরা সেখানে বাস করছেন বলে জানিয়েছেন।
চান্দাপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী অভিযোগ করেন, প্রায় ১০ বছর আগে ৮০ হাজার টাকার বিনিময়ে স্থানীয় হারুন মিয়ার কাছ থেকে পাহাড়ের ৩০ শতাংশ জমির দখল কিনে সেখানে ঘর তোলেন তিনি। গরিব মানুষ। জমিজমা নেই। তাই পাহাড় কেটে ঘর নির্মাণ করেছেন।
একই গ্রামের আবদুল জব্বার অভিযোগ করেন, প্রায় দুই বছর আগে পৌনে তিন লাখ টাকা দিয়ে স্থানীয় আসলামের কাছ থেকে ২৫ শতাংশ জমির দখল কিনে তিনি বাড়ি করেছেন। আসলাম গতকাল বাড়িতে না থাকায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে তাঁর স্ত্রী জমির দখল বিক্রির কথা স্বীকার করেছেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, একটি অসাধু চক্র অবৈধভাবে বন বিভাগের জমি দখল করে পাহাড়ের টিলা কেটে বসতবাড়ি নির্মাণের উপযোগী করে তা নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। দিনের পর দিন যেভাবে পাহাড় কাটা হচ্ছে, তাতে পরিবেশের বিপর্যয়সহ বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ধসের আশঙ্কা রয়েছে।
এ ব্যাপারে বন বিভাগ শেরপুরের সহকারী বন সংরক্ষক প্রাণতোষ কুমার রায় প্রথম আলোকে বলেন, পাহাড় কাটা নিষিদ্ধ। পাহাড় কেটে কেউ বসতবাড়ি নির্মাণ করলে তাঁর বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি তিনি অনুসন্ধান করে দেখবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সেঁজুতি ধর বলেন, পাহাড় কেটে বন বিভাগের জমিতে কেউ ঘরবাড়ি নির্মাণ করলে তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।