তিন পুলিশ হত্যা মামলায় আট আসামির যাবজ্জীবন
পাবনার ঢালার চরে পুলিশের তিন সদস্য হত্যা মামলায় আটজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক অনুপ কুমার এ রায় দেন। ২০১০ সালের ২০ জুলাই ওই হত্যাকাণ্ড ঘটে।
আদালতসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এই হত্যা মামলায় মোট ১৬ জন আসামি ছিলেন। এর মধ্যে তিনজনকে আজ আদালত বেকসুর খালাস দেন। বাকি আসামিদের ৫ জন বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত চরমপন্থী সংগঠন পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টির সদস্য।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন পাবনার বেড়া উপজেলার ঢালাচর গ্রামের জহুরুল ইসলাম, রাজধরদিয়া গ্রামের নিজাম ফকির, ধারাই গ্রামের রফিক ওরফে জৈটা রফিক, পশ্চিম কাছাদিয়া গ্রামের আইয়ুব আলী ও শুকুর আলী সরদার, পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের হাশেম ওরফে খোকন ওরফে বাচ্চু, সুজানগরের পুকুড়দিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম ওরফে কানা আলম এবং রাজবাড়ীর মাইছেঘাটার জোসন মোল্লা। এঁদের মধ্যে জহুরুল ও হাশেম পলাতক।
রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এন্তাজুল হক জানান, মামলায় মোট ১৬ জন আসামি ছিলেন। এর মধ্যে আটজনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তিন আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। বাকিরা বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।
এন্তাজুল হক আরও জানান, দণ্ডপ্রাপ্ত ৮ আসামিকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। অনাদায়ে তাঁদের আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১০ সালের ২০ জুলাই রাতে বেড়া উপজেলার ঢালাচর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক কফিল উদ্দিন (৫০), নায়েক ওয়াহেদ আলী (৩৫) ও কনস্টেবল শফিকুল ইসলামকে (৩৫) গুলি করে হত্যা করে চরমপন্থীরা। এ ঘটনায় বেড়া থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। মামলায় ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর পাবনার আদালতে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। মামলাটি পরে দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ২০১৬ সালে রাজশাহী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়। দীর্ঘ ৯ বছর পর সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে এ রায় ঘোষণা করা হলো।
রায় ঘোষণার পর উপস্থিত ছয় আসামিকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। আসামিদের পক্ষে আবু বাকার ও রইসুল ইসলাম মামলাটি পরিচালনা করেন। আইনজীবী আবু বাকার বলেন, তাঁরা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। তবে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী।