লাঙ্গলবন্দে স্নানোৎসবে পুণ্যার্থীদের ঢল
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দে ব্রহ্মপুত্র নদে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের মহাঅষ্টমী পুণ্য স্নানোৎসব শুরু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উৎসবের লগ্ন শুরু হয়। লগ্ন শেষ হবে আজ শনিবার সকাল ৮টা ৫৮ মিনিটে। এদিকে স্নানে এসে গতকাল অসুস্থ হয়ে প্রিয় রানী দাস নামের এক পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়।
স্নানের লগ্ন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গতকাল উৎসবে মেতে ওঠেন পুণ্যার্থীরা। মন্ত্র পাঠ করে ফুল, বেলপাতা, ধান, দূর্বা, হরীতকী, ডাব, আম্রপল্লব নিয়ে পুণ্যার্থীরা স্নানে অংশ নেন। লগ্ন শুরুর পরপরই পুণ্যার্থীর ঢল নামে লাঙ্গলবন্দের তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। পাপমোচনের বাসনায় দেশ-বিদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা পুণ্যার্থীদের পদচারণে মুখরিত হয়ে ওঠে লাঙ্গলবন্দ। এবার ১৬টি ঘাটে পুণ্যার্থীরা স্নান করছেন। স্নানোৎসবকে ঘিরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
গতকাল সকাল থেকে হাজারো পুণ্যার্থী নলিত মোহন সাধু ঘাট, নাসিম ওসমান ঘাট, অন্নপূর্ণা ঘাট, রাজঘাট, মাকরী সাধু ঘাট, গান্ধী (শ্মশান) ঘাট, ভদ্রেশ্বরী কালী ঘাট, জয়কালী মন্দির ঘাট, রক্ষাকালী মন্দির ঘাট, পাষাণ কালী মন্দির ঘাট, প্রেমতলা ঘাট, মণি ঋষিপাড়া ঘাট, ব্রহ্ম মন্দির ঘাট, দক্ষিণেশ্বরী ঘাট, পঞ্চপাণ্ডব ঘাট ও পরেশ মহাত্মা আশ্রম ঘাট দিয়ে পুণ্য স্নান করেন।
পুণ্যার্থী পুষ্পা রানী দাস বলেন, ‘তীর্থের জন্য মহাঅষ্টমী স্নানে অংশ নিতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে এসেছি। স্নান করে পুণ্য অর্জন করায় ভালো লাগছে।’
লাঙ্গলবন্দ স্নানোৎসব উদ্যাপন কমিটির সভাপতি সরোজ সাহা বলেন, ‘স্নানোৎসবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ভুটানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পুণ্যার্থীরা এসেছেন। আমরা আশা করছি, এবার ১০ থেকে ১৫ লাখ পুণ্যার্থী স্নানে অংশ নেবেন। নারীদের কাপড় বদলানোর জায়গা, বিশুদ্ধ খাওয়ার পানিসহ বিভিন্ন ব্যবস্থাও করা হয়েছে।’
গতকাল বিকেলে পরেশ মহাত্মা আশ্রম ঘাটে অসুস্থ হয়ে প্রিয় রানী দাস (৮০) মারা যান। নিহত প্রিয় রানী দাস মুন্সিগঞ্জের বালিগাঁয়ের মৃত নারায়ণগঞ্জ চন্দ্র দাসের স্ত্রী। বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ওই পুণ্যার্থী ট্রলার থেকে ঘাটে নামতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর তাঁর মৃত্যু হয়।
২০১৫ সালের ২৭ মার্চ লাঙ্গলবন্দে স্নানোৎসবে পদদলিত হয়ে ১০ পুণ্যার্থীর প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।