বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকে গলাধাক্কা দেওয়া বাসের সেই সহকারী আটক
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ঘোরি মো. ওয়াসিম আফনানকে বাস থেকে গলাধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া উদার পরিবহনের চালকের সহকারী মাসুক আলীকে (৩৮) আটক করেছে সুনামগঞ্জ পুলিশ।
সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সিংচাপইড় গ্রাম থেকে মাসুক আলীকে গতকাল শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে আটক করা হয়। তাঁর বাড়ি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের তেঘরিয়া এলাকায়।
গতকাল বিকেলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শেরপুর বাসস্টেশনে ভাড়া নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে বাস থেকে আফনানকে গলাধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেন বাসের সহকারী মাসুক আলী। এতে ঘটনাস্থলেই বাসের চাকার নিচে পড়ে মারা যান তিনি। আফনান সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিলেন। তিনি হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার রুদ্র গ্রামের ঘারি মো. আবু জাহেদ মাহবুব ও চিকিৎসক মীনা পারভিন দম্পতির ছেলে।
গতকাল আফনানসহ ১০ শিক্ষার্থী হবিগঞ্জের দেবপাড়ায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে শেরপুর বাসস্টেশন থেকে ওই বাসে করে সিলেট ফিরতে চেয়েছিলেন। বাসে ওঠার পর ভাড়া নিয়ে বিবাদ দেখা দিলে ১০ জন বাস থেকে নেমে যাচ্ছিলেন। এ সময় বাসের চালক জুয়েল আহমদ ও সহকারী মাসুক আলী তাঁদের গালমন্দ করলে আফনান বাসে উঠে গালমন্দের কারণ জানতে চান। তখন চালকের সহকারী মাসুক আলী আফনানকে গলাধাক্কা দিয়ে বাস থেকে ফেলে দেন।
রাতেই বাসের চালক জুয়েল আহমদকে আটক করে পুলিশ। এরপর রাত দুইটার দিকে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে চালকের সহকারী মাসুক মিয়ার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তাঁকে আটক করে সুনামগঞ্জ পুলিশ। মাসুক মিয়া ছাতক উপজেলার সিংচাপইড় গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার বরকতুল্লাহ খান বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে বাসের সহকারী মাসুক আলীকে আটক করা হয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুক আলী ঘটনার জন্য বাসের সুপারভাইজারকে দায়ী করেছেন। তাঁকে মৌলভীবাজার জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে আমাদের সিলেট অফিস জানিয়েছে, সিলেট শহরের চৌহাট্টা মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে মিছিল নিয়ে বের হয়ে নগরের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ শেষে এখানে অবস্থান নেন। তাঁরা নিরাপদ সড়ক এবং চালক ও তাঁর সহকারীকে আটকের দাবি জানাচ্ছেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার আজবাহার আলী শেখ, কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম মিঞাসহ পুলিশ কর্মকর্তারা।