অনিয়ম হলে প্রয়োজনে নির্বাচন বন্ধ
উপজেলা নির্বাচনে কোনো ধরনের অনিয়ম হলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেবে। প্রয়োজনে নির্বাচন বন্ধ করে দেবে। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইসি সচিবালয়ে আজ শনিবার বিকেলে সংবাদ ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেছেন ইসি সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোখলেছুর রহমান।
ইসির অতিরিক্ত সচিব বলেন, নির্বাচনে কোনো ধরনের অনিয়ম হচ্ছে কি না, তা পর্যবেক্ষণের জন্য ইসি সচিবালয়ে একটি মনিটরিং সেল থাকবে। কোনো উপজেলায় কোনো ধরনের অনিয়ম হলে মনিটরিং সেল তাৎক্ষণিক ইসিকে তা জানাবে। ইসি সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। এমনকি দায়িত্বে অবহেলা করলে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোববার থেকে সারা দেশে পঞ্চম উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রথম ধাপে ৭৮টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ করা হবে। ভোট গ্রহণ শুরু হবে সকাল ৮টায়, চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
মোখলেছুর রহমান জানান, প্রথম ধাপে নির্বাচনের জন্য ইসি ৮৭টি উপজেলার তফসিল ঘোষণা করেছিল। পরে আদালতের নির্দেশে তিনটি এবং নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না নিশ্চিত হয়ে ইসি তিনটি উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করেছে। এ ছাড়া তিনটি উপজেলার সব কটি পদে একজন করে প্রার্থী থাকায় সেখানে ভোট গ্রহণের প্রয়োজন হচ্ছে না। এই তিনটি উপজেলা হলো: জামালপুরের মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ এবং নাটোরের সদর উপজেলা। তাই রোববার ৭৮ উপজেলায় ভোট হচ্ছে।
সম্প্রতি বিএনপিবিহীন ঢাকার সিটি নির্বাচনে ভোটারদের আগ্রহ দেখা যায়নি। উপজেলা নির্বাচনেও বিএনপি অংশ নিচ্ছে না। এ অবস্থায় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি যথেষ্ট পরিমাণে থাকবে কি না? জানতে চাইলে মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন হচ্ছে একটি স্থানীয় নির্বাচন। প্রার্থীরা যথেষ্ট তৎপর থাকেন। তাঁরা সেভাবে প্রচার করেছেন। তাই আমরা মনে করি উপজেলা নির্বাচনে উপস্থিতির হার অনেক বেশি হবে।’
অতিরিক্ত সচিব আরও বলেন, ঢাকা সিটির মেয়াদ এক বছর বাকি থাকতে নির্বাচন হয়েছে। দিনটিও ছিল অত্যন্ত বর্ষণমুখর। যে কারণে উপস্থিতি কিছুটা কম ছিল। তবে নতুন যে ওয়ার্ডগুলো ছিল, যেখানে কাউন্সিলরেরা নির্বাচন করেছেন; সেখানে কিন্তু উপস্থিতির সংখ্যা বেশি ছিল।
ইসি বলছে দায়িত্বে অবহেলা করলে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু সম্প্রতি শেষ হওয়া সংসদ ও ঢাকা সিটির নির্বাচনে দায়িত্বে অবহেলার কারণে কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো নজির আছে কি? এ বিষয়ে মোখলেছুর রহমান বলেন, একেবারেই যে হয়নি তা নয়। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ যেখানে পাওয়া গেছে, সেখানেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিন উপজেলার ভোট বন্ধ করার সিদ্ধান্তের বিষয়ে অতিরিক্ত সচিব বলেন, কমিশন মনে করে এ পর্যায়ে তিন উপজেলায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সে জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
মোখলেছুর রহমান জানান, ৭৮ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ১ কোটি ৪২ লাখ ৪৮ হাজার ৮৫০ জন। মোট ভোটকেন্দ্র ৫ হাজার ৮৪৭টি। চেয়ারম্যান পদে ২০৭, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩৮৬ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২৪৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন ২৮ জন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১৫, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন রয়েছেন।