সাংসদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রে অভিযোগ
বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) আসনের আওয়ামী লীগদলীয় সাংসদ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী মনজিল আলী সরকার ছাড়াও সারিয়াকান্দি আওয়ামী লীগের একটি অংশের পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে ২৪ ফেব্রুয়ারি লিখিত অভিযোগ পাঠানো হয়।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, সাংসদ আবদুল মান্নানের স্ত্রী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাদারা মান্নান চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নবঞ্চিত হন। এ কারণে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আবদুস সালামকে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়েছেন। বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার জন্য মাঠপর্যায়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন।
ওই অভিযোগে স্বাক্ষর করেছেন দলীয় প্রার্থী মনজিল আলী সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল খালেক, সহসভাপতি রেজাউল করিম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুর রশিদ ফারাজী এবং সারিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্পাদক ও পৌরসভার মেয়র আলমগীর শাহী সুমন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, সম্প্রতি সাংসদের উপস্থিতিতে সারিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভার আয়োজন করে। সভায় দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে কথা বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাহাদারা মান্নান। সভায় সাংসদ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা মনোনীত প্রার্থী বাদে অন্য দুজনও আওয়ামী লীগের প্রার্থী।’
সাংসদের এ মন্তব্য নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। পরে আরেক দফা বর্ধিত সভার আহ্বান করলেও তাতে নেতা-কর্মীদের আসতে নিষেধ করেন সাংসদ আবদুল মান্নান।
অভিযোগে আরও বলা হয়, সাংসদের স্ত্রী সাহাদারা মান্নানকে দলীয় মনোনয়ন না দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে দলীয় প্রার্থীকে নেতা-কর্মী থেকে বিচ্ছিন্ন রাখতে উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় তালাবদ্ধ রাখা হয়েছে। প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের বাসায় ডেকে ভোটের দিনে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে কাজ করারও নির্দেশ দিয়েছেন।
গতকাল শনিবার জানতে চাইলে সারিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউল করিম বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণা চলছে। অথচ দলীয় কার্যালয়ে তালা। নেতা-কর্মীরা বসতে পারেন না।’
সারিয়াকান্দি পৌরসভার মেয়র আলমগীর শাহী অভিযোগ করেন, ‘আওয়ামী লীগ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রার্থী দিয়েছে। কিন্তু উপজেলার অনেক নেতা বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। এই বিষয়ে কলকাঠি নাড়ছেন সাংসদ ও তাঁর স্ত্রী। ভয়ে অনেকেই মাঠে নামছেন না।’
আওয়ামী লীগের প্রার্থী মনজিল আলী সরকার অভিযোগ করেন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কোরবান আলী, সম্পাদক মফিজুল ইসলাম, সহসভাপতি মমতাজুর রহমান মণ্ডল ছাড়াও সারিয়াকান্দি সদর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকেরা বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।
জানতে চাইলে পৌর আওয়ামী লীগের সম্পাদক মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রার্থী তাঁর নির্বাচন করার জন্য আমাদের ডাকেন না।’
গতকাল বিকেলে যোগাযোগের চেষ্টা করলে সাংসদ আবদুল মান্নান ও তাঁর স্ত্রী সাহাদারা মান্নানের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে এ বিষয়ে তাঁদের বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
সাংসদের ঘনিষ্ঠজন নেতা হিসেবে পরিচিত সারিয়াকান্দি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মতিউর রহমান বলেন, সাংসদ আবদুল মান্নান ও তাঁর স্ত্রী সাহাদারা মান্নান বর্তমানে বিদেশে অবস্থান করছেন।