ফলাফল প্রত্যাখ্যান, পুনর্নির্বাচনের দাবি ঐক্যফ্রন্টের
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এখন পর্যন্ত পাওয়া ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এই ফলাফল বাতিল করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনর্নির্বাচন দাবি করেছে তারা।
আজ রোববার রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেন এ কথা বলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন। আগামীকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান তিনি।
ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘দেশের প্রায় সব আসন থেকে একই রকম ভোট ডাকাতির খবর এসেছে। এ পর্যন্ত বিভিন্ন দলের শতাধিক প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন। এ অবস্থায় আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, অবিলম্বে এ প্রহসনের নির্বাচন বাতিল করা হোক।’ তিনি এ নির্বাচনের ‘কথিত’ ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনর্নির্বাচন দাবি করেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এ নির্বাচন প্রমাণ করে ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ না নেওয়া তাদের জন্য ভুল সিদ্ধান্ত ছিল না।
ঐক্যফ্রন্টের লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, তফসিল ঘোষণার পর থেকে সরকার দলীয়দের হামলায় ১৭ প্রার্থী আহত, প্রায় ১৪ হাজার নেতা-কর্মী ও সমর্থক আহত হন। গতকাল রাতে আওয়ামী লীগ নির্বাচনের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের সহায়তায় নৌকা মার্কায় সিল মেরে বাক্সে ভরে রাখে বলে অভিযোগ ঐক্যফ্রন্টের। এ ছাড়া এজেন্টদের বের করে দেওয়া, বুথ তালা মেরে রাখাসহ মারধরেরও অভিযোগ করা হয়।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের কথার প্রসঙ্গ টেনে বলা হয়, এই কমিশনারও বলেছেন তাঁর একার পক্ষে করার কিছু নেই। ঐক্যফ্রন্ট বলে, ‘অথচ নির্লজ্জের মতো প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সারা দেশে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে।’
বিএনপির নেতৃত্বাধীন এই জোটের দাবি, সারা দেশে নির্বাচনী সহিংসতায় অসংখ্য হতাহতের ঘটনা ঘটেছে এবং এর মধ্যে ২১ জন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি কেন্দ্রে সাংবাদিকদের ওপর হামলা ও তাদের কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়ার সমালোচনাও করা হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান এবং ঢাকা-৩, ৬, ৭, ৮, ৯, ১৩, ১৮ ও ১৯ আসনসহ ঢাকার প্রতিটি আসনেই ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে জানায় জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। ঐক্যফ্রন্ট বলে, দেশের যে ছয়টি আসনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট নেওয়া হয়েছে সেখানকার অনেক কেন্দ্রে ইভিএম মেশিন অকেজো থাকায় ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকে।
ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, কেউ অন্য মার্কায় ভোট দিতে চাইলে তাদের বের করে দেওয়া হয়। এভাবে মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।