>প্রাথমিকভাবে এই দুজনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। পরে জীবা আমিনা খানকে চূড়ান্ত করা হয়েছে।
ঝালকাঠি-২ আসনে জীবা আমিনা খানের হাতেই ধানের শীষ প্রতীক তুলে দিল কেন্দ্রীয় বিএনপি। গত শুক্রবার বিকেলে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে জীবা আমিনা খানের নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঝালকাঠি-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর সঙ্গে প্রথমবারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বিএনপির জীবা আমিনা খান। জীবা বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মহিলা দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি। তাঁর বাবা আখতার উদ্দিন আহম্মেদ পশ্চিম পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।
দলীয় নেতা-কর্মীরা বলেন, প্রথম দফায় বিএনপির পক্ষ থেকে দুজন প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। তাঁরা হলেন সাবেক সাংসদ ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো এবং জীবা আমিনা খান। সংস্কারবাদী হিসেবে চিহ্নিত ইলেন ভুট্টোকে মনোনয়ন দেওয়ায় এলাকায় বিএনপির একাংশে অসন্তোষ ছিল। ইলেন ১০ বছর ধরে মাঠেও ছিলেন না।
২০০১ সালে ইলেন ঝালকাঠি-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আমির হোসেন আমুকে হারিয়ে সাংসদ হন। এরপর ২০০৮ সালেও আবার তাঁকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি। কিন্তু এ নির্বাচনে তিনি আমির হোসেন আমুর কাছে হেরে যান। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর থেকে ইলেন এলাকার নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখেন। এ কারণে বিএনপির তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ। তাঁকে জেলা বিএনপির কোনো পর্যায়ের কমিটিতেও রাখা হয়নি। সম্প্রতি নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে এলে তাঁকে কেন্দ্র দলে টেনে নেয় ও তাঁর মনোনয়ন প্রসঙ্গ চলে আসে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, প্রয়াত স্বামী ও সাবেক সাংসদ জুলফিকার আলী ভুট্টোর জনপ্রিয়তা ও নলছিটির আঞ্চলিক ‘ভোট ব্যাংকের’ কারণে তাঁকে আবার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। ইলেন নলছিটি উপজেলার মোল্লারহাট ইউনিয়নের পুত্রবধূ। তাঁর বাবার বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জে।
অন্যদিকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ও বাছাইয়ের সময় স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জীবা আমিনা খানের সঙ্গে ছিলেন। বিএনপির নেতা-কর্মীরা একাধিকবার জীবাকে দলীয় প্রার্থী করার আহ্বান জানান। তাঁর মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নেতা-কর্মীরা জীবাকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
জীবা আমিনা খান বলেন, নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নিয়ে তিনি দ্রুত ঝালকাঠি আসছেন। সুষ্ঠু ভোট হলে বিজয় নিশ্চিত।
ইলেন ভুট্টো বলেন, ‘আমি এ আসনে একজন জনপ্রিয় প্রার্থী ছিলাম। দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েও শেষ পর্যন্ত বিকল্প প্রার্থীকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দিল। দল আমার সঙ্গে বেইমানি করলেও আমি আজীবন বিএনপিতে থাকব।’
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আরিফুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন বলেন, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তকে তাঁরা স্বাগত জানান।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম বলেন, জীবা আমিনা খান মনোনয়ন পাওয়ায় তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা খুশি। বিজয় এখন সময়ের ব্যাপার।