অনশন ভাঙল ভিকারুননিসার ছাত্রীরা
অরিত্রী অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষক হাসনা হেনার মুক্তির দাবিতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রীদের একটি অংশ অনশন ভেঙেছে। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের অনুরোধে আজ রোববার বেলা একটার দিকে অনশন ভাঙে তারা। শিক্ষক হাসনা হেনার মুক্তির দাবিতে তিন দিন ধরে কর্মসূচি পালন করছিল ওই ছাত্রীরা।
সকাল থেকে বেইলি রোডে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির মূল ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকের সামনে ছাত্রীদের একটি অংশ এই অনশন শুরু করে।
৩ ডিসেম্বর রাজধানীর শান্তিনগরের বাসা থেকে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রী অধিকারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের অভিযোগ, পরীক্ষার সময় মোবাইল ফোন সঙ্গে থাকায় নকলের অভিযোগ এনে তাঁর সামনে বাবা-মাকে অপমান করা ও টিসি দেওয়ার কথা শুনে সে আত্মহত্যা করেছে।
আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনাকে গ্রেপ্তার করা হয় গত বুধবার রাতে। এই মামলায় অপর দুই আসামি হলেন, কলেজের বরখাস্ত হওয়া ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ও বরখাস্ত হওয়া শাখাপ্রধান জিনাত আখতার।
এর আগে অরিত্রীর বাবা দিলীপ কুমার অধিকারী আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ জানিয়ে ওই তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। অরিত্রীর আত্মহত্যার প্রতিবাদে ভিকারুননিসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা ওই ঘটনার বিচারসহ ছয় দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে।
তবে ওই শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ ও দাবি পূরণের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করলেও অপর একটি অংশ হাসনা হেনার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। গত দুদিনের মতো আজ সকালে তারা প্রথমে ফটকের সামনে এসে অবস্থান নেয় এবং স্লোগান দিতে থাকে। সকাল নয়টার দিকে তারা অনশন কর্মসূচি শুরু করে। কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বেশির ভাগই কলেজ শাখার ছাত্রী। পাশাপাশি প্রাক্তন কয়েকজন ছাত্রীও এ আন্দোলনে অংশ নেন।
আনিকা ইশরাফ নামের একজন ছাত্রী প্রথম আলোকে বলে, সকাল আটটার দিকে তারা প্রতিষ্ঠানের ফটকে অবস্থান নেয়। হাসনা হেনার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে।
বেলা একটার দিকে কয়েকজন শিক্ষক এসে ছাত্রীদের অনশন ভঙ্গ করার অনুরোধ জানান। শিক্ষকদের একজন জান্নাতুল ফেরদৌস শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ছাত্রীদের অভুক্ত রেখে তাঁরা খেতে পারেন না। অনশন তখনই হবে, যখন অন্য কোনো রাস্তা থাকবে না। তিনি আশা প্রকাশ করেন, গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষক হাসনা হেনা যেকোনো মুহূর্তে, যেকোনো সময় মুক্তি পাবেন। এভাবে কিছুক্ষণ বোঝানোর পর ছাত্রীরা অনশন ভাঙতে রাজি হয়। পরে তাদের পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান শিক্ষকেরা।
আরও পড়ুন
বলো, অরিত্রীর কী ‘অপরাধ’ ছিল?