ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, বাংলাদেশ দল মাঠে গেল বিকল্প সড়কে
চট্টগ্রাম নগরের ওমরগণি এমইএস কলেজে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে আজ রোববার সংঘর্ষ হয়েছে। এ কারণে ২৫ মিনিট দেরিতে বিকল্প সড়ক হয়ে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে অনুশীলন করতে যেতে হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) কুসুম দেওয়ান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বেলা ১টার দিকে হোটেল রেডিসন ব্লু চিটাগাং বে ভিউ থেকে ক্রিকেটারদের বাস ছাড়ার কথা ছিল। কিন্তু ওই সময়েই এমইএস কলেজের সামনে ঝামেলা শুরু হয়। তাই ঝুঁকি এড়াতে ১টা ২৫ মিনিটে ক্রিকেটারদের বিকল্প সড়ক দিয়ে মাঠে নেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, সাধারণত হোটেল থেকে জাকির হোসেন সড়ক হয়ে মাঠে যায় ক্রিকেটারদের বহনকারী বাস। আজ এই সড়কের বদলে আমবাগান হয়ে মাঠে যান ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে অংশ নিতে চট্টগ্রামে অবস্থান করা ক্রিকেটাররা।
পুলিশ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিনিয়রের সামনে জুনিয়র কর্মীর সিগারেট খাওয়া নিয়ে ওমরগণি এমইএস কলেজে গতকাল শনিবার দুপুরে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এ ঘটনার জের ধরে আজও দুই পক্ষ মারামারিতে জড়ায়। পরে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দিলে এক পক্ষ জিইসি মোড় এলাকায় দুটি দোকানে ভাঙচুর চালায়। এ সময় কয়েকটি ককটেলও ফাটায় তারা।
আজ বেলা দেড়টার দিকে জিইসি মোড় এলাকার সাদিয়াচ কিচেন নামের একটি খাবারের দোকান এবং হোসাইন লাইটিং নামের একটি ঝাড়বাতি বিক্রির দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়। ভাঙচুরের পরপরই দোকান বন্ধ করে দেন দোকানের কর্মচারীরা। বিকেল চারটার দিকেও তাঁদের আতঙ্কিত দেখা গেছে। দুটি দোকানের সামনেই পুলিশ অবস্থান করছিল। সাদিয়াচ কিচেনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কেউ নাম প্রকাশ করে কথা বলতে রাজি হননি। এক কর্মচারী প্রথম আলোকে বলেন, হঠাৎ করে ইট ও পাথর মারতে থাকেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সঙ্গে ককটেলও ফাটানো হচ্ছিল। এ সময় তাঁদের এবং দোকানে আসা ক্রেতাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। তাঁরা দোকানের পেছনের দিকে আশ্রয় নেন। শুধু এবার নয়, এর আগেও চার-পাঁচবার ভাঙচুর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হোসাইন লাইটিংয়ের ব্যবস্থাপক সাইদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে কিছু হলেই আমাদের দোকান ভাঙচুরের চেষ্টা চালানো হয়। প্রথমদিকে ছোট পাথর ও ইটের টুকরা দোকানের দিকে ছুড়ে মারা হয়। কিন্তু তাতে কাচ না ভাঙলে তাঁরা বড় বড় ইটের টুকরা ছুড়ে মারেন। এতে সামনের কাচসহ দোকানের মালামাল ভেঙে গেছে।’ এ ঘটনায় মামলা করবে কি না, এমন প্রশ্ন করা হলে সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘মামলা করলে এ জায়গায় থাকতে পারব?’
সিগারেট খাওয়া নিয়ে কলেজের ছাত্রলীগের সিনিয়র ও জুনিয়র নেতা-কর্মীদের মধ্যে মারামারির বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঘটনাস্থলে থাকা খুলশী থানার উপপরিদর্শক নুর উদ্দিন। খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ নাসির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দিলে তারা দুটি দোকান ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওমরগণি এমইএস কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াছ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল। আমরা দুই পক্ষের সঙ্গে বসে সমাধানের চেষ্টা করছি।’