আশার মুকুল ঝরতে দেখছেন রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গতকাল জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সরকারি জোটের সংলাপে সরকারের একগুঁয়েমি মনোভাব গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বড় ধরনের অশনিসংকেত। সংলাপে মানুষের মনে যে আশাবাদ জেগে উঠেছিল, সংলাপ শেষে সেই আশার মুকুল ঝরে যেতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, সংলাপে ৭ দফায় আওয়ামী লীগ সাড়া না দেওয়ায় এবং দলটির অনড় অবস্থানের কারণে সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে অগ্রগতি তিমিরাচ্ছন্ন হলো।
আজ শুক্রবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, সংলাপের জিকির তুলে একদিকে জনগণকে দেখাচ্ছে তারা কত আন্তরিক, অন্যদিকে সমানতালে নিষ্ঠুরতা ও পাশবিকতা অব্যাহত রেখেছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, সংলাপ শেষে ৭ দফা দাবির প্রতি সাড়া না দেওয়ায় আওয়ামী অনড় অবস্থানে সুষ্ঠু নির্বাচনের অগ্রগতি তিমিরাচ্ছন্ন হলো। আওয়ামী লীগ সহিষ্ণুতার শিক্ষা কখনোই গ্রহণ করেনি। ক্ষমতা, স্বার্থের লীলাধিপত্য বজায় রাখতে তারা জনগণকেই ভয় পাচ্ছে। জনগণের মুন্ডুপাতই হচ্ছে তাদের গ্রহণযোগ্য নীতি।
দলের নেতা-কর্মী গ্রেপ্তারের বিষয়ে রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংলাপের ভাষণে রাজনৈতিক মামলায় কারা গ্রেপ্তার আছেন, তাদের নামের তালিকা চেয়েছেন। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন। তাঁর দশ বছরের শাসনামলে বিরোধী দলের কাদের নামে মামলা দিয়ে বারবার কারাগারে ঢোকানো হচ্ছে, সেটা কী প্রধানমন্ত্রীর অজানা? তিনি বলেন, গতকাল সংলাপ শেষ হওয়ার পরই দেখা গেল টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালেহ মোহাম্মদ ইথেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসলে পুলিশি শক্তির ব্যবহার ছাড়া আওয়ামী জোট সরকারের আর কোনো ভিত্তি নেই।
রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে রাজনীতি থেকে মাইনাস করা যাবে না। তিনি বলেন, দেশের মানুষ প্রশ্ন করে ১/১১-এর সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলাগুলো গায়েব হলো কী করে? ওয়েস্টমন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম ফারুকের করা চাঁদাবাজির মামলাসহ ১৫টি মামলা উধাও হলো কী করে? দেশব্যাপী সাড়ে সাত হাজার আওয়ামী নেতা-কর্মীর নামে খুনের মামলাসহ অন্যান্য মামলা ভোজবাজির মতো হাওয়ায় মিলিয়ে গেল কী করে? রাষ্ট্রক্ষমতার জোরে।
সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিষয়ে রিজভী বলেন, অন্যায় অবিচারে বন্দী খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা হবে আত্মঘাতী। দেশকে গণতন্ত্রমুখী করতে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। আর নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচন করা হবে মৃত্যুকূপে ঝাঁপ দেওয়া। যে সরকার জনমতকে পাত্তা দেয় না, সেই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রত্যাশা করা বোকার স্বর্গে বাস করা। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন করা মানে তাঁর ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার নীতি বাস্তবায়ন করা। সরকার অনমনীয় মনোভাব দেখাতে থাকলে মাথা উঁচু করে সাত দফা দাবি রাজপথেই আদায় করতে হবে। দুর্জয় সাহস নিয়ে মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামবে।