নেতায়-নেতায় যে ঐক্য, সে ঐক্যে জনতার কী?
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জনগণের মধ্যে কোনো সাড়া জাগাতে পারেনি। সিলেটে ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেখানে এত বড় বড় নেতারা গেলেন, জনগণ কোনো সাড়া দেয়নি। নেতায়-নেতায় যে ঐক্য, সে ঐক্যে জনতার কী?
ওবায়দুল কাদের আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ীতে মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে এ কথা বলেন।
গাজীপুরের টঙ্গী ও ঢাকার সাভারে আওয়ামী লীগের গণসংযোগ কর্মসূচিতে পথসভার কথা উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, টঙ্গী ও সাভারের সমাবেশে লক্ষাধিক লোকের সমাবেশ হয়েছে। সিলেটে তাদের সমাবেশে তো এত লোক দেখলাম না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলনে যারা বিজয়ী হতে পারে না, নির্বাচনেও তারা জয়ী হতে পারে না। এটাই দেশের গণতন্ত্রের ইতিহাস। নেতায়-নেতায় ঐক্য হলে জনগণের মধ্যে তা কখনো সাড়া ফেলে না। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সাত দফার এক দফাও মানা হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের সাত দফার এক দফাও মানব না। কারণ তাদের দাবি অযৌক্তিক।
‘সরকারের মাথা খারাপ হয়েছে’ বলে ড. কামাল হোসেনের মন্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেন, ‘ওনার মাথা ঠিক আছে? তা জানতে চাই।’
সংস্কারপন্থী নেতাদের বিএনপিতে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে জানতে চাইলে সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, বিএনপি যে রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে সংস্কারপন্থীদের দলে ফিরিয়ে আনার মধ্য দিয়েই বোঝা যায়। কারণ এত দিন বিএনপি তাদের কোণঠাসা করে রেখেছিল। তারা আন্দোলনের শক্তি জোগাবে, এটা হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই নয়।
কাদের বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নিজেই সংস্কারপন্থী ছিলেন। আর তিনি সংস্কারপন্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকবেন সেটাই স্বাভাবিক।
‘নির্বাচনের আগে সরকারের পদত্যাগের জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দাবির’ জবাবে সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, নিরপেক্ষ সংসদ নির্বাচনের জন্য দরকার নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন। কারণ নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করে। নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য সংসদীয় গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনের সময় সরকার যেভাবে দায়িত্ব পালন করে, আমাদের দেশেও সেভাবেই দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর সরকার কোনো মেজর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে না, শুধু রুটিন কাজ পরিচালনা করবে।
কাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। কোনো নির্বাচন কমিশনার কোনো সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতেই পারেন। রাষ্ট্রপতি সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনে বিএনপির পছন্দেরও একজন কমিশনার রয়েছেন। তিনি নিজের মতামত তুলে ধরতেই পারেন। আর এটাই গণতন্ত্রের অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য।
মেট্রোরেল প্রকল্প নিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, তরুণ প্রজন্মের স্বপ্নের প্রকল্প ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেগা প্রকল্প মেট্রোরেল প্রকল্প এখন দৃশ্যমান বাস্তবতা। এ প্রকল্পের কাজ দুটি ধাপে শেষ হবে। তিনি বলেন, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত প্রথম ধাপের কাজ ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে এবং দ্বিতীয় ধাপে আগারগাঁও থেকে মতিঝিলের বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ২০২০ সালের ডিসেম্বরে শেষ হবে। তিনি বলেন, মেট্রোরেলে প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার এবং দিনে ৫ লাখ লোক যাতায়াত করবে। এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে রাজধানীর যানজট বহুলাংশে কমে যাবে। রাজধানীকে একটি আধুনিক ও স্মার্ট মহানগর হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতমণ্ডলীর সদস্য সাহারা খাতুনসহ স্থানীয় দলীয় নেতা-কর্মী ও মেট্রোরেল প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।