মেয়রের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে পুরস্কার পেল শিক্ষার্থীরা
বঙ্গবন্ধু কর্নারের উদ্বোধন। আয়োজন করেছে রাজশাহী জেলা প্রশাসন। ভেন্যু রাজশাহী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। প্রধান অতিথি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। বক্তব্য দিতে উঠেই তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বললেন, বঙ্গবন্ধু কোন দিন, কোথায় দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। সঠিক উত্তর দিতে পারলে পুরস্কার আছে। দৌড়ে মঞ্চে উঠে এল বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী। প্রথমজনই সঠিক উত্তর দিল। মেয়র খুশি হয়ে তিনজনকেই পুরস্কার দিলেন। এভাবে তিনি আরও দুটি প্রশ্ন করলেন। উত্তর দিয়ে মোট সাতজন শিক্ষার্থী তাঁর কাছ থেকে পুরস্কার নিল।
আজ শনিবার বঙ্গবন্ধু কর্নারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এভাবেই একটি জ্ঞানজিজ্ঞাসার অনুষ্ঠানে পরিণত হয়।
মেয়রের অপর দুটি প্রশ্নের একটি ছিল শুদ্ধ করে জাতীয় চার নেতার নাম বলতে হবে। শেষ প্রশ্ন ছিল, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ যাঁরা শাহাদতবরণ করেন, তাঁদের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর স্ত্রীসহ চারজনের নাম বলতে হবে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শৈশব, কৈশোর, রাজনৈতিক তথা সমগ্র জীবন সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মকে ধারণা দিতে একটি জ্ঞানভিত্তিক প্রয়াস হচ্ছে বঙ্গবন্ধু কর্নার। রাজশাহী জেলা ও মহানগরের ১ হাজার ৯৮০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে একযোগে শনিবার ‘বঙ্গবন্ধু কর্নার’ উদ্বোধন করা হয়। সেখানে বঙ্গবন্ধুর ওপর বিভিন্ন বইয়ের গ্যালারি, বঙ্গবন্ধুর জীবনী, ৭ মার্চের ভাষণ ও বঙ্গবন্ধুর জীবনের ফটোগ্যালারি রয়েছে। রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার নূর-উর রহমানের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে এর পরিকল্পনা করেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক।
রাজশাহী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক এস এম আবদুল কাদের। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আমিনুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাকিম, আবদুস সামাদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) নজরুল ইসলাম, রাজশাহী মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক তৌহিদ আরা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইকবাল হাসান প্রমুখ। এর আগে ফিতা কেটে বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন করেন মেয়র খায়রুজ্জামান।
মেয়রের প্রশ্নের সঠিক উত্তরদাতা সাত শিক্ষার্থী হচ্ছে বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী এম জেড মম, সাদিয়া হক, আতিয়া সুলতানা, সিরাজুম মুনিরা; সপ্তম শ্রেণির নূরে আফসানা, আনিকা মুস্তারিন ও ষষ্ঠ শ্রেণির ঈশিতা চৌধুরী। পুরস্কার হিসেবে তাৎক্ষণিকভাবে তাদের নগদ অর্থ দেওয়া হয়।
বঙ্গবন্ধু কর্নার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মেয়র খায়রুজ্জামান বলেন, ‘১৯৭৪ সালে ঈদের ছুটিতে আমরা দুই ভাই কলকাতা থেকে ঢাকায় এসেছিলাম। তখন আমার বাবা মন্ত্রী। ঈদের নামাজ পড়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করতে বঙ্গবন্ধু নিজেই আমাদের সরকারি বাসভবনে এলেন। আমরা দুই ভাই বাড়ির সামনে বাইসাইকেল চালাচ্ছিলাম। বঙ্গবন্ধুকে দেখে আমরা দাঁড়িয়ে যাই। বাবা বাসা থেকে বের হয়ে আসেন। এ সময় বঙ্গবন্ধু আমাদের দুই ভাইকে তাঁর বিশাল বুকে জড়িয়ে ধরেন।’ তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে জানতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই কর্নার কাজে আসবে।
বাংলাদেশে প্রথম জেলা হিসেবে এমন উদ্যোগ নিতে পেরে জেলা প্রশাসন আনন্দ প্রকাশ করেছে। তাদের আশা বাংলাদেশে প্রতিটি জেলায় এটি বাস্তবায়িত হবে।